ভারত: ২০২-৮ (সঞ্জু স্যামসন ১০৭, তিলক বর্মা ৩৩, গেরাল্ড কোয়েৎসে ৩-৩৭)
সাউথ আফ্রিকা: ১৪১ (১৭.৫ ওভারে) (হাইনরিখ ক্লাসেন ২৫, গেরাল্ড কোয়েৎসে ২৩, বরুণ চক্রবর্তী ৩-২৫, রবি বিশনয় ৩-২৮)
ডারবান: মূলত সঞ্জু স্যামসনের সেঞ্চুরিতে ভর করে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি২০ ম্যাচে ৬১ রানে জয় পেল ভারত। তবে ভারতের এই জয়ের আরও দুই কারিগর বরুণ চক্রবর্তী ও রবি বিশনয়। দুজনেই ৩টি করে উইকেট দখল করেন।
শুক্রবার ডারবানের কিংসমিডে আয়োজিত প্রথম টি২০ ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় সাউথ আফ্রিকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত করে ৮ উইকেটে ২০২ রান। জয়ের জন্য রান তাড়া করতে গিয়ে ২.১ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় সাউথ আফ্রিকা। ১৭.৫ ওভারে তারা তোলে ১৪১ রান।
সঞ্জুর একাধিক রেকর্ড
এ দিনের শতরানের মাধ্যমে বেশ কিছু রেকর্ড করলেন সঞ্জু স্যামসন। তিনিই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার যিনি পর পর ২টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন। একই সঙ্গে টি২০ ফরম্যাটে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় হিসাবে সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরি। সঞ্জুর ১০৭ ভারত বনাম সাউথ আফ্রিকা টি২০ ম্যাচে ব্যাক্তিগত ভাবে সর্বোচ্চ রান। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ডেভিড মিলারের। ২০২২-এ গুয়াহাটিতে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ১০৬ রান করেছিলেন। ১০টা ছয় মেরে টি২০ ফরম্যাটে ভারতীয় হিসাবে রোহিত শর্মার সর্বাধিক ছয় মারার রেকর্ডটি ছুঁয়ে ফেললেন সঞ্জু। ২০১৭-য় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইন্দৌর ম্যাচে রোহিত ১০টা ছয় মেরেছিলেন।
শুরু থেকেই মারমুখী সঞ্জু
শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন ভারতের অন্যতম ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। ৮ বলে ৭ রান করে দলের ২৪ রানের মাথায় গেরাল্ড কোয়েৎসের বলে আইডেন মার্করামকে ক্যাচ দিয়ে অভিষেক শর্মা প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে দলের হাল ধরেন সঞ্জু এবং অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা যোগ করেন ৫.৫ ওভারে ৬৬ রান। দুজনে দলের রান পৌঁছে দেন ৯০-এ। ১৭ বলে ২১ রান করে প্যাট্রিক ক্রুগারের শিকার হন সূর্যকুমার। অ্যান্ডিল সাইমলেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সূর্যকুমার।
এর পর সঞ্জুর সঙ্গী হন তিলক বর্মা। ঝড়ের গতিতে রান উঠতে থাকে। ইতিমধ্যে নিজের শতরান পূর্ণ করেন সঞ্জু। মাত্র ৪৭ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। পর পর দুটি টি২০ ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন সঞ্জু। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে সঞ্জু ও তিলক যোগ করেন ৭৭ রান, মাত্র ৫.৪ ওভারে। ১৮ বলে ৩৩ রান করে কেশব মহারাজের বলে মার্কো ইয়ানসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিলক। তিলকের ৩৩ রানে ছিল ২টি ছয় ও ৩টি চার।
প্রথম টি২০ ম্যাচে জিতল ভারত। ছবি ‘এক্স’ থেকে নেওয়া।
এর পর ভারতের উইকেট দ্রুত পড়তে থাকে। বাদবাকি ৫.২ ওভারে যোগ হয় ৩৫ রান। পড়ে ৫টি উইকেট। তিলক ফিরে যেতেই রান ওঠার গতি কিছুটা কমে যায়। ষোড়শ ওভারের চতুর্থ বলে এন পিটারের বলে ট্রিস্টান স্টাবস্কে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সঞ্জু। সঞ্জু ১০৭ রান করেন ৫০ বলেন, স্ট্রাইক রেট ২১৪.০০। তাঁর ১০৭ রানে ছিল ১০টা ছয় ও ৭টা চার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত করে ৮ উইকেটে ২০২ রান।
১৩ বল বাকি থাকতেই ইনিংস শেষ
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২০৩ রান তাড়া করতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে সাউথ আফ্রিকা। ৪৪ রানের মধ্যে ৩টি উইকেট পড়ে যায়। ৩টি উইকেট তুলে নেন বরুণ চক্রবর্তী, অর্শদীপ সিং এবং অবেশ খান। এর পর পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন হাইনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। কিন্তু রান ওঠার গতি কমে যায়। চতুর্থ উইকেটে ক্লাসেন ও মিলার যোগ করেন ৪২ রান।
দলের ৮৬ রানে বরুণের বলে অক্ষর পটেলকে ক্যাচ দিয়ে ক্লাসেন (২২ বলে ২৫ রান) ফিরে যেতেই আবার দ্রুত উইকেট পড়তে থাকে। ৮৬ থেকে ৯৩ রানের মধ্যে ৪টি উইকেট পড়ে যায়। ভারতের বিধ্বংসী বোলারদের মোকাবিলা করতে হিমশিম খেয়ে যান সাউথ আফ্রিকার ব্যাটাররা। আউট হন ডেভিড মিলার (২২ বলে ১৮ রান), প্যাট্রিক ক্রুগার (২ বলে ১ রান) এবং অ্যান্ডিল সাইমলেন (৪ বলে ৬ রান)।
আবার উইকেট পড়া কিছুটা আটকানোর চেষ্টা করেন মার্কো ইয়ানসেন এবং গেরাল্ড কোয়েৎসে। রবি বিশনয়ের বলে হার্দিক পাণ্ড্যকে ক্যাচ দলের ১১৪ রানে ফিরে যান ইয়ানসেন। এর পর হঠাৎই মারমুখী হয়ে ওঠেন কোয়েৎসে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁর। ১১ বলে ২৩ রান করে তিনি রান আউট হয়ে যান। দলের রান তখন ১৩৫। তাঁর ২৩ রানে ছিল ৩টে ছয়। এর পর আর মাত্র ৬ রান যোগ করে অল আউট হয়ে যায় সাউথ আফ্রিকা। তখনও ইনিংসের ১৩ বল বাকি।