ভারত: ৫৮৭ ও ৪২৭-৬ (ডিক্লেয়ার্ড) (শুভমন গিল ১৬১, রবীন্দ্র জাদেজা ৬৯ নট আউট, ঋষভ পন্থ ৬৫, কে এল রাহুল ৫৫, জোশ টাং ২-৯৩, শোয়েব বশির ২-১১৯)
ইংল্যান্ড: ৪০৭ ও ৭২-৩ (বেন ডাকেট ২৫, ওলি পোপ ২৪ নট আউট, আকাশ দীপ ২-৩৬, মহম্মদ সিরাজ ১-২৯)
এজবাস্টন (বার্মিংহাম): বিশ্বরেকর্ড করলেন ভারতের অধিনায়ক শুভমন গিল। এক টেস্টের দুই ইনিংসে দ্বিশতরান এবং দেড়শো রানের বেশি করলেন। শুভমনই বিশ্বের একমাত্র ব্যাটার, যাঁর এই কীর্তি রইল। এর আগে অ্যাল্যান বর্ডার এক টেস্টের প্রতিটি ইনিংসে দেড়শোর বেশি রান করেছিলেন।
সেই শুভমনের বিশ্বরেকর্ড এবং বাংলার বোলার আকাশ দীপের প্রাথমিক ধাক্কায় জয়ের স্বপ্ন দেখছে ভারত। ইংল্যান্ডকে জয়ের জন্য ৬০৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে ভারত। ইংল্যান্ড আপাতত ৩ উইকেটে ৭২ নিয়ে ব্যাট করছে। আকাশ দীপ ৩৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। অন্যটি নিয়েছেন যথারীতি মহম্মদ সিরাজ।
দুরন্ত রান ভারতের
আগের দিনের ১ উইকেটে ৬৪ রান হাতে নিয়ে শনিবার এজবাস্টনে খেলতে নামে ভারত। দলের স্কোর দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ভারতীয় ব্যাটাররা। তারই মধ্যে উইকেটও পড়তে থাকে। দলের ৯৬ রানে করুণ নায়ার (২৬ রান) ব্রাইডন কার্সের বলে উইকেটকিপার জেমি স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। লোকেশ রাহুল নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৫৫ রানের মাথায় জোশ টাঙের বলে বোল্ড হন। দলের রান তখন ১২৬। অন্য প্রান্তে ধীর, স্থিতধী হয়ে ব্যাট করতে থাকেন গিল। তাঁর সঙ্গী হন ঋষভ পন্থ।

তখন দু’জনেই পেরিয়েছেন ৫০। ঋষভ পন্থ ও শুভমন গিল। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
ঋষভ শুভমনের সঙ্গী হতেই আরও আগ্রাসী হয়ে যায় ভারতের ব্যাটিং। জোশ টাঙের তৃতীয় বলেই চার মারেন ঋষভ। তার পরের বলটাই বাউন্ডারির উপর দিয়ে পাঠিয়ে ছয় করেন তিনি। শুভমনও তাঁর খেলার গতি বাড়ান। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ উইকেটের পার্টনারশিপে তাঁরা তোলেন ১১০ রান। এর মধ্যে ঋষভের অবদান ৫৮ বলে ৬৫। তিনি যখন শোয়েব বশিরের বলে বেন ডাকেটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান দলের রান তখন ২৩৬।
টি২০-এর শুভমন, ১৬২ বলে ১৬১ রান
এর পর শুভমনের সঙ্গী হন রবীন্দ্র জাদেজা। শুভমন তাঁর স্বাভাবিক স্টাইলের বাইরে গিয়ে রান তোলার গতি বাড়িয়ে দেন। পাশে রবীন্দ্র তাঁর উইকেট আগলে খেলে যেতে থাকেন। চা-বিরতির পরেও শুভমন আর রবীন্দ্র যখন ব্যাট করছিলেন, তখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল – কখন ডিক্লেয়ার করবে ভারত? ইংল্যান্ডকে কত রানের লক্ষ্যমাত্রা দেবে ভারত? ইংল্যান্ডের ১০ উইকেট তোলার জন্য বোলারদের তো যথেষ্ট ওভার সুযোগ দিতে হবে।
পঞ্চম উইকেটে জাদেজার সঙ্গে ১৭৫ রান যোগ করার পর প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অধিনায়ক গিল ১৬২ বলে ১৬১ রান করে। শোয়েব বশিরের বলে তাঁকেই ক্যাচ দেন গিল। কোনো ভালো বলে উইকেট খোয়াননি তিনি। নিতান্তই দ্রুত রান তুলতে গিয়ে আউট হন। এর পর এই টেস্টে ভারতের নতুন খেলোয়াড় নীতীশ রেড্ডি মাত্র ১ রান করে ফিরে যেতেই ভারত ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে। তখন দলের রান ৬ উইকেটে ৪২৭। জাদেজা ব্যাট করছিলেন ৬৯ রানে।

জো রুটের উইকেট নেওয়ার পরে আকাশকে আদর সতীর্থদের। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
ভারত কি ইংল্যান্ডের ৭ উইকেট ফেলতে পারবে?
ভারত ইংল্যান্ডকে জয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা দেয় ৬০৮ রান। জলপানের বিরতি পর খেলতে নেমে দ্রুত ৩টি উইকেট খোয়ায় ইংল্যান্ড। তাদের ইনিংসে জোরদার আঘাত হানেন মহম্মদ সিরাজ এবং বাংলার আকাশ দীপ। প্রথমে সিরাজ ফেরান জাক ক্রলিকে। দলের রান তখন ১১। পরিবর্ত খেলোয়াড়কে ক্যাচ দিয়ে নিজের রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান ক্রলি। এর পরেই বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন আকাশ। দলের রান তখন ৩০, ডাকেট ২৫। আর মাত্র ২০ রান যোগ হতেই আকাশ ফিরিয়ে দেন জো রুটকে। তাঁকেও বোল্ড করেন তিনি।
হার বাঁচাতে ইংল্যান্ড এখন লড়ছে। তাদের ঝুলিতে আপাতত ৭২ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। জয়ের জন্য এখনও করতে হবে ৫৩৬ রান। জয় প্রায় অসম্ভব তাদের। কিন্তু ভারত কি ইংল্যান্ডের ৭ উইকেট ফেলতে পারবে? ‘বাজবল’ (ইংল্যান্ডের টেস্টে দ্রুত খেলার ধরনকে তাদের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের নামে নামকরণ করা হয়েছে) জমানায় ইংল্যান্ডের মাঠগুলোয় বোলারদের জন্য বিশেষ কিছু থাকে না। একেবারে পাটা উইকেট। সেই উইকেটে কি সফল হবে ভারত? এটাই এখন বড়ো প্রশ্ন।
আরও পড়ুন
ভারত-ইংল্যান্ড ২য় টেস্ট: শুভমনের আবার সেঞ্চুরি, ১৩ রানে বঞ্চিত যশস্বী, দলে তিন পরিবর্তন