ক্রিকেট
ভারতকে জেতাল ধোনি-কেদারের ঠান্ডা মাথা
অস্ট্রেলিয়া: ২৩৬-৭ (খোয়াজা ৫০, ম্যাক্সওয়েল ৪০, শামি ২-৪৪) ভারত: ২৪০-৪ (কেদার ৮১ অপরাজিত ধোনি ৫৯ অপরাজিত, কাউল্টার নাইল ২-৪৬) Loading videos… হায়দরাবাদ: কঠিন পিচে মাথা ঠান্ডা রেখে দুর্দান্ত দু’টি ইনিংসের মধ্য দিয়ে ভারতকে জয়ে পৌঁছে দিলেন কেদার যাদব এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু করল ভারত। একদিনের ক্রিকেট সত্যি […]

অস্ট্রেলিয়া: ২৩৬-৭ (খোয়াজা ৫০, ম্যাক্সওয়েল ৪০, শামি ২-৪৪)
ভারত: ২৪০-৪ (কেদার ৮১ অপরাজিত ধোনি ৫৯ অপরাজিত, কাউল্টার নাইল ২-৪৬)
হায়দরাবাদ: কঠিন পিচে মাথা ঠান্ডা রেখে দুর্দান্ত দু’টি ইনিংসের মধ্য দিয়ে ভারতকে জয়ে পৌঁছে দিলেন কেদার যাদব এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু করল ভারত।
একদিনের ক্রিকেট সত্যি আজব একটা ব্যাপার। মাত্র দু’দিন আগে ইংল্যান্ডের খাড়া করা ৪১৮ রান প্রায় তাড়া করেই ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আবার শনিবার দেখা গেল মাত্র ২৩৬ তুলতেই কালঘাম ছুটে গেল। আসলে সব কেরামতিই থাকে পিচের। হায়দরাবাদের পিচ যে ব্যাটিং-এর পক্ষে যথেষ্ট শক্ত ছিল তা বোঝাই যাই।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-এর জুলাইয়ে ইংল্যান্ড সফরে কামব্যাকের পর মহম্মদ শামির বোলিং আরও তীক্ষ্ণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডে তার পারফরম্যান্সই সেই প্রমাণ করে। এ দিন সেই শামিই শুরু করলেন। টসে জিতে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অজিরা। শামির বলে শুরুতেই ধোনিকে খোঁচা দিয়ে দেন ফিঞ্চ।
অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া মহলে উসমন খোয়াজাকে খুব উচ্চ দরের ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখা হয়। মাস দুয়েক ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর চলাকালীন, অনেক বিশেষজ্ঞই বলেছিলেন, টেস্ট সিরিজের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট নন, খোয়াজা হবেন। তা সেই শিরোপা যে পুজারার ওপরে গেল সেটা অবশ্য পরের ব্যাপার। যা-ই হোক, সেই টেস্ট সিরিজে খোয়াজা জ্বলে উঠতে পারেননি বটে, কিন্তু তিনি যে কতটা প্রতিভাবান, এই সিরিজের শুরুতেই প্রমাণ দিয়ে দিলেন।
আরও পড়ুন আই লিগ জয়ের লড়াইয়ে ইস্টবেঙ্গলের সামনে বাধা দু’টি
শরীরে উপমহাদেশীয় রক্ত আছে বলে কি না জানা নেই, পাক্কা উপমহাদেশীয় ব্যাটসম্যানদের মতো খেলে গেলেন খোয়াজা। প্রয়োজনে কুলদীপকে স্টেপ আউট করে গ্যালারিতে পাঠাতেও পিছপা হলেন না তিনি। আবার এই কুলদীপকেই ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে নিজের ক্যাচটা দিয়ে এলেন খোয়াজা। ততক্ষণে অবশ্য তাঁর নামের পাশে ৫০ সংখ্যাটি বসে গিয়েছে।
আরও একজন হলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দ্বিতীয় টি২০-তে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন কী রকম ফর্মে রয়েছেন তিনি। এ দিনও সে রকমই কিছু আশা নিয়ে শুরু করেছিলেন। এগিয়েও যাচ্ছিলেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। কিন্তু অর্ধশতর দশ রান আগে তাঁকে থামিয়ে দিলেন শামি। এ ভাবেই আরও বেশ কয়েক জন অজি ব্যাটসম্যান ভালো শুরু করেও বড়ো রান করতে ব্যর্থ। সব মিলিয়ে অজিদের ইনিংস যখন শেষ হল, তখন স্কোরবোর্ডে তাঁদের রান যথেষ্ট কমই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু কে জানত, এই রান তুলতেও কালঘাম ছুটে যাবে ভারতের। সাধারণত দেশের মাঠে একদিনের ম্যাচে রান তাড়া করতে নামলে ধাওয়ান, রোহিত এবং বিরাট মিলেই কাজের কাজটা করে দেন। কিন্তু এ দিন সেটা হল না। ধাওয়ান তো ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরলেন। কিন্তু রোহিত এবং বিরাটদেরও ভালো শুরু করেও বড়ো রানের আগে থেমে যেতে বিশেষ দেখা যায় না।
বিরাট আর রোহিতের সে অর্থে ব্যর্থতাই বুঝিয়ে দিল পিচ বেশ সুবিধার নয়। একশোর আগেই চার উইকেট হারিয়ে ভারত কার্যত ধুঁকছে। তখনই হাল ধরলেন কেদার যাদব এবং ধোনি। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও নিজের সহজাত ইনিংস খেলা যাওয়ার অসামান্য ক্ষমতা রাখেন কেদার। এ দিনও তার অন্যথা হল না।
ধোনি ছিলেন অ্যাংকর। এটা দিক ধরে রেখে কেদারকে অন্য দিকে মারকাটারি ইনিংস খেলার সাহস জুগিয়ে যাচ্ছিলেন। ধোনির পর নেমেও কেদারকে তাঁর থেকে এগিয়ে যেতে দেখতেও ধোনির কোনো সমস্যাই ছিল না। ধোনি-কেদারের জুটির সামনেই এক সময়ে জয়ের স্বাদ দেখা অস্ট্রেলিয়া ক্রমশ ম্যাচ থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে।
শেষে ১০ বল বাকি থাকতেই ভারতকে জয়ে পৌঁছে দেন এই দু’জন।
গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্তও ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রথম তিন জন ব্যাটসম্যানের ওপরে যেন তারা অনেক বেশি নির্ভরশীল। সেই মিথটা ক্রমশ ভাঙতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে, যখন রানে ফেরেন ধোনি। এ দিনের ম্যাচ আবার বুঝিয়ে দিল, প্রথম তিন-চারজন ব্যাটসম্যান বড়ো রান না পেলেও জয়ের মুখ দেখতে পারে ভারত।
ক্রিকেট
IPL 2021: কাজে এল না সঞ্জু স্যামসনের মহাকাব্যিক শতরান, পঞ্জাবের কাছে হারল রাজস্থান
টানটান রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ

পঞ্জাব: ২২১-৬ (রাহুল ৯১, হুডা ৬৪, সাকারিয়া ৩-৩১)
রাজস্থান: ২১৭-৭ (সঞ্জু ১১৯, পরাগ ২৫, অর্শদীপ ৩-৩৫)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: দুই উইকেটকিপার-অধিনায়কের লড়াই ছিল। দু’জনেই দুরন্ত ব্যাট করলেন। একজন শতরানের কাছাকাছি গিয়ে আউট হয়ে গেলেন তো অন্য জন শতরান করেই ফেললেন। শেষে কেএল রাহুলের পঞ্জাব কিংসের কাছে হেরে গেল সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান রয়্যালস।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে কী তথৈবচ ফর্মে ছিলেন কেএল রাহুল। তাই পঞ্জাব কিংস তাদের অধিনায়কের ফর্ম নিয়ে কিছুটা চাপে তো ছিলই। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে আইপিএলের শুরুতে যে ভাবে দুরন্ত ফর্মে রাহুল শুরু করেন, সেটাই এ দিন মুম্বইয়ে করে দেখালেন। কোথায় তাঁর অফ-ফর্ম! প্রথম কয়েকটি ওভার দেখে খেলে ফেলার পরেই তাঁর ব্যাট থেকে রানের ফুলঝুরি।
রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এ দিন অভিষেক করলেন দুই বোলার, সৌরাষ্ট্রের চেতন সাকারিয়া এবং বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমন। দুই বাঁ হাতি বোলারই প্রথম দিকে কিছুটা চাপে রেখেছিলেন রাহুল এবং পঞ্জাবের অপর ওপেনার ময়াঙ্ক অগ্রবালকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে অফফর্মের কবলে ময়াঙ্ক পড়েছিলেন, এ দিনও সেখান থেকে বেরোতে পারেননি। তাই তৃতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান তিনি।
পঞ্জাবে এসে নতুন জীবন পেয়েছেন ক্রিস গেল। ওপেনারের বদলে তিনি এখন তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। এ দিনও সেটাই হল। আর শুরু থেকেই বেশ আগ্রাসী ছিলেন তিনি। ৪০ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলে ড্রেসিং রুমে যখন গেল ফিরে যান ততক্ষণে তাঁর স্ট্রাইক রেট পৌঁছে গিয়েছে ১৪২-এ। তাঁর এই সংক্ষিপ্ত ইনিংসটি চারটে চার এবং দু’টি ছয়ে সাজানো ছিল।
তবে এ দিন সব নজর কেড়ে নিয়েছেন দীপক হুডা। হরিয়ানার এই মারকুটে ব্যাটসম্যান আইপিএলের ময়দানে মাঝেমধ্যেই জ্বলে ওঠেন। তবে এ দিন তিনি যা খেললেন, সেই রকম খেলতে আগে খুব একটা দেখা যায়নি। শুরু থেকেই রাজস্থানের বোলারদের মাথায় চেপে বসেছিলেন তিনি। একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়ে বিপক্ষের ছন্দটাই নষ্ট করে দেন তিনি। কার্যত কোনো সময় না নিয়েই অর্ধশতরান পূর্ণ করে ফেলেন তিনি।
তাঁর ৬৪ রানের ইনিংসটি এসেছে মাত্র ২৮ বলে। স্ট্রাইক রেট ছিল ২২৮। চলতি আইপিএলের দ্রুততম পঞ্চাশ রানের মালিকও হয়ে গেলেন হুডা। তাঁর আউট হয়ে যাওয়ার পর নজর ছিল রাহুলের ওপরে, আরও একটা শতরান তিনি করতে পারেন কি না, সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু অল্পের জন্য তা হয়নি। শতরান থেকে নয় রান দূরে থেকেই শেষ ওভারে আউট হয়ে যান রাহুল।
একেই পাহাড়প্রমাণ রান, তার পর বিপক্ষের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ, রাজস্থানের পক্ষে রানটা তারা করা খুবই চাপের ছিল। সবার নজর ছিল মহম্মদ শামির ওপরে। সুস্থ হয়ে ফিরে সেই শামিই কিন্তু রাজস্থানকে প্রথম ধাক্কাটা দেন। প্রথম ওভারেই ওপেনার বেন স্টোক্সকে ফিরিয়ে দেন তিনি।
রাজস্থান কিন্তু রান তাড়া করার চেষ্টা করেই যাচ্ছিল। শুরু থেকেই দলের রানের গতি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মনন ভোহরা। অন্যদিকে, অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনও ধীরে ধীরে নিজের ছন্দে আসছিলেন। তিনি তারা উইকেটও হারিয়ে ফেলছিল বার বার।
অষ্টম ওভারের মধ্যে তিনটে উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। যদিও তখনও রানরেট ছিল দশে। এখান থেকে ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টা করতে শুরু করে রাজস্থান। স্যামসন তো ছিলনই, সেই সঙ্গে রানের গতি বাড়াতে শুরু করেন শিবম দুবেই। দুবে এবং স্যামসনের মধ্যে দুরন্ত একটি জুটি শেষ হয় ১৩তম ওভারে। ততক্ষণে অর্ধশতরান পেরিয়ে গিয়েছেন স্যামসন।
১৪ ওভারের পর থেকে ম্যাচের রাশ পুরোপুরি নিজেদের দিকে নিয়ে চলে আসেন রাজস্থান। ক্রিজে ততক্ষণে জমে গিয়েছেন স্যামসন। কিন্তু ছয় নম্বর নামা অসমের রিয়ান পরাগ পর পর ছক্কা মেরে ম্যাচের পরিস্থিতি রাজস্থানের জন্য অনেকটাই শহর করে দেন। ১৭তম ওভার যখন শুরু হচ্ছে তখন রাজস্থানের দরকার ৪৮, আহামরি কিন্তু বেশি নয়। তবে ওই ওভারের দ্বিতীয় বলেই পরাগকে ফিরিয়ে দিয়ে পঞ্জাবকে ফের ম্যাচে নিয়ে আসেন শামি।
যদিও স্যামসনের দাপটের কাছে পঞ্জাবের বোলাররা ম্লান হয়ে যাচ্ছিলেন। ১৮তম ওভারে স্যামসন যখন শতরান করেন, রাজস্থানের তখন দরকার ১৫ বলে ২৬। পরিস্থিতি অনেকটাই সহজ হয়ে এসেছে তাদের জন্য। কিন্তু এখানে কিছুটা চাপা বোলিং করে পঞ্জাব। এর ফলে শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজনীয়তা এসে দাঁড়ায় ১৩ রানে।
অর্শদীপ সিংহ বল করতে আসেন প্রথম তিনটে বলে মাত্র ২ রান দিলেও চতুর্থ বলেই তাঁকে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন স্যামসন। কিন্তু দলকে বৈতরণী পার করিয়ে দিতে পারেননি তিনি। লক্ষ্যামাত্রার থেকে চার রান দূরেই থেমেই গেল রাজস্থান।
ক্রিকেট
IPL 2021: সাড়ে ৭টায় খেলা শুরু হওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তুষ্ট মহেন্দ্র সিংহ ধোনি
চেন্নাই সুপারকিংস অধিনায়কের মতে এই সময়ের পরিবর্তনই ম্যাচের নির্ধারক হয়ে উঠছে।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: গত বছর থেকে আইপিএলে খেলা শুরুর সময়টা কিছুটা পালটে গিয়েছে। রাত ৮টার বদলে শুরু হচ্ছে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। রাত ৮টায় শুরু হলে অধিকাংশ ম্যাচই মাঝরাত পর্যন্ত গড়িয়ে যাওয়াযর কারণে এই অদলবদল করা হয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। চেন্নাই সুপারকিংস অধিনায়কের মতে এই সময়ের পরিবর্তনই ম্যাচের নির্ধারক হয়ে উঠছে।
দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ৭ উইকেটে হারের পরেই ধোনি যুক্তি দিয়ে জানালেন, “৮টায় খেলা শুরু হলে শিশির ততক্ষণে মাঠে পড়ে যেত। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা দল কোনো বাড়তি সুবিধা পেত না। তবে ৭.৩০ টায় শুরু হওয়ায় যে কোনো এক দল ৩০-৪০ মিনিট একদম শুকনো পরিবেশে ব্যাট করার সুবিধা পায়। এটা তফাত গড়ে দিতে পারে।”
ধোনির কথায়, “এমনিতে শিশিরের কারণে প্রথমে ব্যাট করা দল সব সময় ১৫-২০ রান অতিরিক্ত তুলে রাখতে চায়। তবে এটা ৮টার সময় ম্যাচ শুরু করার সময়। ৭.৩০ ম্যাচ শুরু হলে প্রতিপক্ষ সব সময় আধঘন্টার সুবিধা পেয়ে যাবেই। দ্বিতীয় ইনিংসে বল যে ভাবে সুন্দরভাবে ব্যাটে আসবে, প্ৰথমে ব্যাটিংয়ে সেটা মোটেও হবে না। তাই অতিরিক্ত ১৫-২০ রান করার সঙ্গেই বল হাতে শুরুতেই কয়েকটা উইকেট তুলে নিতে হবে প্রতিপক্ষের। তাহলেই ব্যাপারটা সমান-সমান হবে।” এমনই বলেন ধোনি।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
IPL 2021: নীতীশ-রাহুলের ব্যাটে ভর করে হায়দরাবাদকে হারাল কেকেআর
ক্রিকেট
IPL 2021: নীতীশ-রাহুলের ব্যাটে ভর করে হায়দরাবাদকে হারাল কেকেআর
হায়দরাবাদের ওপরে দাপট বজায় রাখল কেকেআর

কেকেআর: ১৮৭-৬ (নীতীশ ৮০, রাহুল ৫৩, রশিদ ২-২৪)
হায়দরাবাদ: ১৭৭-৫ (মনীশ ৬১ অপরাজিত, বেয়ারস্টো ৫৫, প্রসীদ ২-৩৫)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: ফের একবার কলকাতা নাইটরাইডার্সের কাছে হেরে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ওইন মর্গ্যানের দলের এই জয়ের পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখে গেলেন দুই ব্যাটসম্যান নীতীশ রানা এবং রাহুল ত্রিপাঠি।
গত মরশুমের আইপিএলে মাত্র এক বার ওপেনিং জুটি পঞ্চাশ পেরিয়েছিল। তবে সে বার ওপেনিং নিয়ে নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিল কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট। শুধুমাত্র শুভমন গিলের জায়গাই পাকা ছিল। তাঁর বিপরীতের ব্যাটসম্যানদের মাঝেমধ্যেই বদলে ফেলা হত। তবে এই মরশুমের প্রথম ম্যাচেই মনে হল পরিকল্পনা একদম ঠিকঠাক ভাবেই নিয়েছে কেকেআর। তাই গিলের সঙ্গী করা করা হল নীতীশ রানাকে। আর সেই সিদ্ধান্ত শুরুতেই লেগে গেল।
অস্ট্রেলিয়া সফরের সুবাদে টি নটরাজন এখন ঘরে ঘরে পরিচিত নাম। সেই নটরাজন এবং ভুবনেশ্বর কুমার-সন্দীপ শর্মা সম্বিলিত পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে কেকেআরের হয়ে দুরন্ত শুরু করেন শুভমন এবং নীতীশ। অস্ট্রেলিয়ায় দুরন্ত পারফর্ম করলেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ফর্ম খুইয়েছিলেন শুভমন। এই ম্যাচের মধ্যে দিয়ে তিনি ফর্মে ফেরার চেষ্টা করলেন। অন্য দিকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন নীতীশ।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ষষ্ঠ ওভারেই পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় কেকেআর। তবে এর ঠিক পরেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন শুভমন। যদিও এতে বিচলিত হননি নীতীশ। বরং তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোরকে আরও এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। হায়দরাবাদের প্রধান তুরুপের তাস রশিদ খানকেও দুর্দান্ত ভাবে সামলে দেন রাহুল-নীতীশ। একটা সময় মনে হচ্ছিল অবলীলায় দু’শো পেরিয়ে যাবে কেকেআর। শতরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন নীতীশ।
ঝোড়ো ইনিংসের মধ্যে দিয়ে পঞ্চাশ পেরিয়ে যান রাহুল। কিন্তু এর পরেই তিনি আউট হয়ে যান। ১৬তম ওভারে নটরাজনের বলে রাহুল ফিরতেই ভেঙে পড়ে কেকেআরের ইনিংস। পরের ওভারেই রশিদের বলে শিকার হন আন্দ্রে রাসে। ১৮তম ওভারে পর পর দু’বলে নীতীশ এবং অধিনায়ক ওইন মর্গ্যানকে ফিরিয়ে কেকেআরকে মোক্ষম ধাক্কা দেন আফগানিস্তানের মহম্মদ নবী।
শেষের কয়েকটি ওভারে হায়দরাবাদের চাপা বোলিংয়ের জেরে কেকেআরের ইনিংসে অনেকটাই ধাক্কা খেয়ে যায়। তবে শেষ ওভারে প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের সংক্ষিপ্ত ঝোড়ো ইনিংসের জেরে ১৯০-এর কাছাকাছি পৌঁছে যায় কেকেআর।
ভারতীয় দলে জায়গা খোয়ানোর পর ঋদ্ধিমান সাহা কেমন খেলেন, সেই দিকে নজর ছিল সবার। গত আইপিএলে একদম শেষ মুহূর্তে মাত্র চারটে ম্যাচ খেললেও দুরন্ত খেলেছিলেন ঋদ্ধি। সে কারণে এ বার প্রথম ম্যাচ থেকেই দলে রয়েছেন তিনি। প্রথম ওভারের হরভজন সিংহের বলকে তুলে গ্যালারিতেও ফেলে দেন ঋদ্ধি। কিন্তু তার পরেই ব্রেক লেগে যায় তাঁর ইনিংসে। শাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ততক্ষণে ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারও।
এগারো রানের মাথায় দু’টো উইকেট খুইয়ে আচমকা বিপদে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। সেই বিপদ থেকে দলকে রক্ষা করার দায়িত্ব এসে পড়ে মনীশ পাণ্ডে এবং জনি বেয়ারস্টোর ওপরে। ভারতের বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের দু’টি সিরিজে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন বেয়ারস্টো। সেই ফর্ম এই ম্যাচেও নিয়ে আসেন তিনি। ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়তে শুরু করে।
সিভি বরুণকে খেলানোর জন্য এ দিন সুনীল নারিনকে নামায়নি কেকেআর। সম্ভবত সেই কারণে বাড়তি একটা সুবিধা পেয়ে গিয়েছিলেন বেয়ারস্টো এবং মনীশ পাণ্ডে। কেকেআর বোলারদের বিরুদ্ধে দাপট বাড়াতে থাকেন দু’জন। বরুণের বিরুদ্ধেও দুরন্ত গতিতে রান করতে শুরু করেন। ক্রমশ নিজেদের নাগালের মধ্যে আস্কিং রেটকে নিয়ে আসেন দু’জন। দুরন্ত একটি অর্ধশতরান পেরিয়ে যান বেয়ারস্টো।
তবে খুব বাজে সময়ে আউট হয়ে যান বেয়ারস্টো, ১৩তম ওভারের শেষ বলে। তাঁর উইকেট তোলেন প্যাট কামিন্স। ততক্ষণে সবে ১০০ পেরিয়েছে হায়দরাবাদ।
বেয়ারস্টো আউট হয়ে যাওয়ার পর লড়াইয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়তে থাকে হায়দরাবাদ। আস্কিং রেটি ক্রমশ চড়তে থাকে। বরুণ, হরভজন, প্রসীদ কৃষ্ণ, কামিন্সদের চাপা বোলিংয়ের জেরে প্রবল চাপে পড়তে শুরু করে দক্ষিণের এই দলটা। কিন্তু যতক্ষণ মনীশ ছিলেন, ততক্ষণ ভরসা ছিল হায়দরাবাদের।
কিন্তু মনীশ সঙ্গী পাননি। মহম্মদ নবী বোলিংয়ে বেশি দক্ষ হলেও ব্যাটিংয়ে এখনও উল্লেখযোগ্য কোনো ইনিংসে হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে পারেননি। এ দিনও ব্যর্থ হলেন তিনি। নবীর পর বিজয় শঙ্কর নামেন। মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ নামডাক রয়েছে তাঁর। তিনিও ব্যর্থ হন। শেষ দুই ওভারে হায়দরাবাদের আস্কিং রেট উঠে যায় ১৯-এ। ম্যাচের ফলাফল কার্যত নিশ্চিতই ছিল।
তবে শেষ মুহূর্তে কাশ্মীরের তরুণ ক্রিকেটার আব্দুল সামাদ কিছুটা চেষ্টা করছিলেন জয়ের কাছাকাছি দলকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাঁর সংক্ষিপ্ত মারকাটারি ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল নবীরও আগে তাঁকে নামালে অন্য রকম ফলাফল হয়ে পারত হায়দরাবাদের জন্য।
যাই হোক, আইপিএলে এমনিতেই হায়দরাবাদের ওপরে বরাবরই দাপট থাকে কেকেআরের। সেটা এই ম্যাচেও বজায় থাকল।
আরও পড়ুন: IPL 2021: পৃথ্বী-ধাওয়ানের দাপটে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল চেন্নাই
-
ক্রিকেট24 hours ago
IPL 2021: কাজে এল না সঞ্জু স্যামসনের মহাকাব্যিক শতরান, পঞ্জাবের কাছে হারল রাজস্থান
-
প্রবন্ধ1 day ago
First Man In Space: ইউরি গাগারিনের মহাকাশ বিজয়ের ৬০ বছর আজ, জেনে নিন কিছু আকর্ষণীয় তথ্য
-
দেশ2 days ago
Kumbh Mela 2021: করোনাবিধিকে শিকেয় তুলে এক লক্ষ মানুষের সমাগম, আজ কুম্ভের প্রথম শাহি স্নান হরিদ্বারে
-
ক্রিকেট2 days ago
IPL 2021: সাড়ে ৭টায় খেলা শুরু হওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তুষ্ট মহেন্দ্র সিংহ ধোনি