ক্রিকেট
শেষ ভালো! ম্যাক্সওয়েল ঝড় সামলে স্বস্তির জয় ভারতের

ভারত: ৩০২-৫ (হার্দিক ৯২ অপরাজিত, জাদেজা ৬৬ অপরাজিত, আগার ২-৪৪)
অস্ট্রেলিয়া: ২৮৯ (ফিঞ্চ ৭৫, ম্যাক্সওয়েল ৫৯, শার্দূল ৩-৫১)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: কথায় বলে যার শেষ ভালো তার সব ভালো। ভারতের সব ভালো হল কি না, টেস্ট সিরিজের ফলেই জানা যাবে। কিন্তু বুধবারের ম্যাচটা জিতে টানা পরাজয়ের একটা শৃঙ্খল যে তারা ভাঙতে পারল, সেটা বেশ স্বস্তিদায়ক।
একটা দল সিরিজ আগেভাগেই হেরে গেলে অবশিষ্ট ম্যাচে তাদের মনোবল ঠিকঠাক রাখা খুব সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়। তৃতীয় একদিনের ম্যাচের শুরুর কয়েক ঘণ্টায় ভারতকেও দেখে মনে হচ্ছিল যে একদিনের সিরিজ হেরে গিয়ে মনোবল এক্কেবারে তলানিতে ঠেকে গিয়েছে।
কিন্তু ইনিংসের শেষ কুড়ি ওভারে হার্দিক পাণ্ড্য এবং রবীন্দ্র জাদেজা মিলে যে খেলাটা খেলে গেলেন তাতেই চাঙ্গা হয়ে গেল ভারতীয় শিবির। হার্দিক-জাদেজার ব্যাটিং তাণ্ডবের জেরেই শেষ ম্যাচটি জিতল বিরাটবাহিনী। সেই সঙ্গে টানা পাঁচটা একদিনের ম্যাচ এবং সাতটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ হারার শৃঙ্খলটাও ভাঙতে পারল তারা।
বুধবার টস ভাগ্য প্রসন্ন ছিল বিরাটের। সে কারণে শুরুতেই বাড়তি একটা সুবিধা পেয়ে যান তিনি। টস জিতে ব্যাটিং নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি তিনি।
তবে দলকে জয়ের সরণিতে ফিরিয়ে আনার জন্য বুধবার চারটে পরিবর্তন করে ভারত। কিন্তু সব থেকে বড়ো চমক ছিলেন টি নটরাজন। নবদীপ সাইনির বদলে দলে আনা হয় নটরাজনকে। এ ছাড়া মহম্মদ শামির পরিবর্তে দলে আসেন শার্দূল ঠাকুর। যজুবেন্দ্র চাহলকে বসিয়ে কুলদীপ যাদবকে নিয়ে আসেন কোহলি। এ ছাড়া ওপেনিংয়ের জায়গাতেও বদল করা হয়। ময়াঙ্ক অগ্রবালকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় শুভমন গিলকে।
আগের দু’টি ম্যাচেই ফর্মের ঝলক দেখানো শিখর ধাওয়ান এ দিন ষষ্ঠ ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এর পর বিরাট ও শুভমন ভারতীয় ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। শুভমান কিন্তু ভালোই খেলছিলেন। কিছু কিছু শট দেখে বার বার মনে হচ্ছিল তিনি কিন্তু ভারতীয় দলে লম্বা রেসের ঘোড়া হতে পারেন।
একটা অর্ধশতরান কিন্তু গিলের পাক্কা ছিল। সেটা কার্যত মাঠে ফেলে আসেন তিনি। ৩৩ রানে আউট হয়ে গেলেও অর্ধশতরান করতে কোনো ভুল করেননি বিরাট। তিনি বড়ো রানের মুখ দেখলেও চার নম্বরে নামা শ্রেয়স আইয়ার কিন্তু এ দিনও ব্যর্থ। আর অন্য দিকে পাঁচ নম্বরে নামা কেএল রাহুলও ৫-এর বেশি নিজের স্কোরকে নিয়ে যেতে পারেননি।
তবে ব্যক্তিগত ২৩ রানে পৌঁছোতেই ওয়ান ডে ক্রিকেটে ১২ হাজার রানের মাইলস্টোনে পৌঁছে যান বিরাট৷ সেই সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের দ্রুততম ১২ হাজার রানের মাইলস্টোনের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন কোহলি৷ সচিনের থেকে ৫৮টি ইনিংস কম খেলে এই মাইলস্টোন টপকে যান বিরাট৷
বিরাটের শতরানে যেন গ্রহণ লেগে গিয়েছে। ২০১৯-এর ১৪ আগস্টের পর থেকে তাঁর একদিনের ক্রিকেটে কোনো শতরান নেই। এ দিনও হল না। এমনকি বিরাট ফিরে যেতে প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। স্কোরবোর্ডে তখন সবে দেড়শো উঠেছে।
বিরাট প্যাভিলিয়নে ফেরার পর ভারতীয় ইনিংসের হাল ধরেন হার্দিক পাণ্ড্য এবং রবীন্দ্র জাদেজা৷ প্রথমে একটু দেখে নিয়ে অজি বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেন দুই ভারতীয় অল-রাউন্ডার৷ ব্যাটে ঝড় তুলে দু’জনেই হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন৷
হার্দিক ও জাদেজার দুরন্ত ব্যাটিং তিনশো রানের গণ্ডি টপকে যায় ভারত৷ ইনিংসের শেষ দিকে অজি বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন এই দুই ভারতীয় অল-রাউন্ডার৷ শেষ ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৬ রান যোগ করে ভারত।
কিন্তু কে জানত, এত রান তুলেও ম্যাচে প্রায় হারার সম্মুখীন হয়ে যাবে ভারত। আর এমন একজনের কাছে এই দশা হবে যিনি যে গত দু’ মাস ধরে চলা আইপিএলে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছেন।
সিরিজের প্রথম দু’টি ম্যাচে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ফারাক গড়ে দেওয়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এ দিন কিন্তু ম্যাক্সওয়েল ‘অন্যতম’ নন, তিনি ‘প্রধান’ কারিগর। কারণ, ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট না চললে অস্ট্রেলিয়া কোনো ভাবেই ম্যাচ যেতে না এ দিন।
আসলে, এ দিন ভারত বোলিং আক্রমণ বেশ সুন্দর শুরু করেছিল। চমকটা কিন্তু নটরাজনই দিয়েছিলেন। ষষ্ঠ ওভারেই ওপেনার মার্নাস লাবুশানেকে ফিরিয়ে দেন তিনি। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের তৃতীয় ওভারেই যে উইকেট-মেডেন করেন তিনি।
এর সাত ওভারের মধ্যে যখন মাত্র ৭ রানে স্টিভ স্মিথ ফিরে যান, তখন ভারত কার্যত টগবগ করে ফুটতে শুরু করে। তখন শার্দূল ঠাকুরও দুর্দান্ত বল করতে শুরু করে দিয়েছেন। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত জয়ের দিকে ভারত এগোচ্ছে, এমনই মনে করা হচ্ছিল।
৭৫ রানের সুন্দর একটা ইনিংস খেলেন অ্যারন ফিঞ্চ। কিন্তু জিততে গেলে যে আগ্রাসী হওয়া উচিত ছিল, সে রকম আগ্রাসী হতে পারেননি ফিঞ্চ। তাই তাঁর ইনিংস খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এ দিকে মোসেস এনরিকেস, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারিরাও মোটামুটি রান করে গিয়েছেন। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল ক্রিজে আসতেই পুরো ঘুরে গেল ম্যাচের ভাগ্য।
উইকেটকিপার ক্যারি আউট হওয়ার সময়ে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১২ ওভারে ৯২। এখান থেকেই শুরু হল ম্যাক্সওয়েলের তাণ্ডব। ‘ম্যাক্সি’-এর সামনে পড়ে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গেল ভারতীয় বোলিং। নটরাজন, শার্দূল, কুলদীপরা ফের রান গলাতে শুরু করলেন। দুরন্ত একটি অর্ধশতরান পেরিয়ে গেলেন ম্যাক্সওয়েল।
কিন্তু নাটক তখনও শেষ হয়নি। ৪৫তম ওভারে ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে মোক্ষম একটা ঝটকা দেন জসপ্রীত বুমরাহ। কিন্তু ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়ার ইকুয়েশন খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। শেষ পাঁচ ওভারে দরকার মাত্র ৩৩।
না, নাটক তখন সত্যিই বাকি ছিল। অস্ট্রেলিয়ার লোয়ার অর্ডারের ওপরে চাপ বাড়াতে শুরু করেন ভারতীয় বোলাররা। আসরে নামেন শার্দূল ঠাকুর। ম্যাচে ভালোই বল করেছিলেন শার্দূল। তাঁর বলেই ৪৭ ওভারের শেষ বলে ফিরে যান শন অ্যাবট।
৪৮তম ওভারের প্রথম বলে নটরাজন অ্যাশটন আগারকে ফেরাতেই ম্যাচের ভাগ্য প্রায় নির্ধারিতই হয় যায়। বাকিটা ছিল শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার।
একদিনের সিরিজ তো অস্ট্রেলিয়া জিতে গেল। কিন্তু শেষ ম্যাচের এই জয়ে ভারতের যে মনোবল ভালো হল, সেটা আসন্ন টি২০ সিরিজে কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলে কি না, সেটাই দেখার।
ক্রিকেট
বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম হিসাবে ৪০০ উইকেট দখলের কৃতিত্ব রবিচন্দ্রন অশ্বিনের
শেষ পর্যন্ত জ্যাক লিচকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে ৭৭টা টেস্ট থেকে অশ্বিনের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪০১টি উইকেট।

খবর অনলাইন ডেস্ক: জোফরা আর্চার এলবিডব্লু বোল্ড অশ্বিন ০।
স্কোরবোর্ডে এই তথ্য আসতেই একটা দুর্লভ মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্ট কেরিয়ারে ৪০০ উইকেট দখল করার কৃতিত্ব। এবং দ্রুততম ভারতীয় হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন অশ্বিন। নিজের ৭৭তম টেস্টে এই কৃতিত্বের অধিকারী হলেন তিনি।
শুধু তা-ই নয়, এই কৃতিত্ব অর্জন করার ক্ষেত্রে নিজের নাম লিখে রাখলেন বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসাবে। তাঁর আগে রয়েছেন মুথাইয়া মুরলিধরন। তিনি ৭২টা টেস্টে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।
ভারতীয় হিসাবে অশ্বিন হলেন চতুর্থ বোলার যিনি টেস্ট ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট দখল করলেন। এই কৃতিত্ব আর যাঁদের রয়েছে, তাঁরা হলেন অনিল কুম্বলে (৬১৯), কপিল দেব (৪৩৪) এবং হরভজন সিং (৪১৭)।
বৃহস্পতিবার অমদাবাদ টেস্টে ইংল্যান্ড যখন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তখন অশ্বিনের সংগ্রহে ছিল ৩৯৭ উইকেট। ৪০০ পূরণ করার জন্য আরও ৩ উইকেটের দরকার ছিল। প্রশ্ন ছিল, এই টেস্টেই কি ৪০০-এর ঘর ছুঁতে পারবেন অশ্বিন?
বেন স্টোক্সকে এলবিডব্লু করে খাতা খোলেন অশ্বিন। তার পর ওলি পোপকে বোল্ড করেন তিনি। জোফরা আর্চারকে তুলে নিয়ে অশ্বিন পৌঁছে যান ৪০০-য়।
শেষ পর্যন্ত জ্যাক লিচকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে ৭৭টা টেস্ট থেকে অশ্বিনের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪০১টি উইকেট। এ ছাড়াও অশ্বিনের দখলে রয়েছে একদিনের ক্রিকেটে ১৫০টি উইকেট এবং টি২০ ক্রিকেটে ৫২টি উইকেট।
৩৪ বছর বয়সি অশ্বিন উইকেট সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবেন তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: দু’দিনে টেস্ট শেষ করে মহাবিতর্ক তৈরি করে দিল অমদাবাদের খোঁয়াড় পিচ

ইংল্যান্ড: ১১২ এবং ৮১ (স্টোক্স ২৫, রুট ১৯, অক্ষর ৫-৩২)
ভারত: ১৪৫ (রোহিত ৬৬, রুট ৫-৮) এবং ৪৯-০ (রোহিত ২৫ অপরাজিত, শুভমন ১৫ অপরাজিত)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: অনেকেই বলতে শুরু করবেন বিদেশে যদি সবুজ পিচ তৈরি করে ভারতকে বিপদে ফেলা হয়, তা হলে ঘরের মাঠে ভারত কেন নিজেদের পছন্দের পিচ তৈরি করবে না!
তা এই বিতর্কটা এখানেই শেষ করা ভালো। অমদাবাদে যে পিচ তৈরি করা হয়েছে, মানে যা আদতে তৈরি করাই হয়নি, সেটা ভারতেরও পছন্দের পিচ নয়। ভারতের পছন্দের পিচ হলে এখানে বিরাটবাহিনীর অসহায় আত্মসমর্পণ ঘটত না। জো রুটের সাদা মাটা স্পিন সামলাতে ভারত যে ভাবে হিমশিম খেল, তাতে কখনোই অমদাবাদের পিচকে ভারতের আদর্শ পিচ বলা যায় না।
দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ইংল্যান্ড কোনো রকমে আরও ৭০-৮০টা রান বেশি করতে পারত, তা হলে ভারত যে এই পিচেই বিপাকে পড়ত না কে বলতে পারে! সুতরাং অমদাবাদের খোঁয়াড় পিচকে কখনোই ভারতের আদর্শ পিচ বলা যায় না। যে ভাবে দু’ দিনেই টেস্ট শেষ হয়ে গেল, তাতে অমদাবাদের পিচ বিতর্ক এখন চলবে কিছু দিন। উপভোগ্য ক্রিকেটের জন্য পিচের মান বদলের যে সময় এসেছে তা এক কথায় বলে দেওয়া যায়।
তবুও অক্ষর পটেল এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের কৃতিত্ব কোনো ভাবেই ছোটো করা হচ্ছে না। প্রথম জন নিজের ঘরের মাঠেই ১১টা উইকেট নিয়ে নিলেন, তা-ও আবার নিজের দ্বিতীয় টেস্টে। রবীন্দ্র জাদেজা সুস্থ হয়ে গেলেও অক্ষরকে ভারতীয় দলের বাইরে রাখা এখন মুশকিল হবে। আর দ্বিতীয় জন বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে চারশো উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।
দিন শুরুর প্রথম দেড় ঘণ্টায় ভারতীয় ব্যাটিং যে ভাবে জো রুটের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, তা অতীতে খুব একটা দেখা যায় না। মাত্র ৪৬ রানের মধ্যে পড়ল সাতটা উইকেট। এই সাতটার মধ্যে পাঁচটা উইকেটই নিয়ে নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক রুট।
বৃহস্পতিবার ভারত নিজের স্কোর কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটা দেখার ছিল। রোহিত শর্মা এবং অজিঙ্ক রাহানের ওপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছিল। কিন্তু ভারতীয় স্পিনারদের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের স্পিনাররাও যে গোলাপি বলকে মারাত্মক ভাবে ঘোরাবেন সেটা কার্যত আন্দাজই করা যায়নি।
এ দিন খেলা শুরু হওয়ার প্রথম কয়েকটি ওভারের পর ভারতীয় শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন জ্যাক লিচ, অজিঙ্ক রাহানেকে তুলে নিয়ে। এর পর রোহিত শর্মাও লিচের ঘূর্ণির ফাঁদে পড়ে যান। এর পর শুধুই রুটের কেরামতি।
ভারতীয় পিচে দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলেছেন রুট। চেন্নাইয়ের প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে একার হাতেই ভারতকে হারিয়েছেন তিনি। টুকটাক বলও করতে পারেন। কিন্তু তা বলে সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি পাঁচ উইকেট নিতে পারেন, সেটা ভাবাই যায়নি। তাঁর ঘূর্ণির শিকার হলেন পন্থ, ওয়াশিংটন, অশ্বিন, অক্ষর এবং বুমরাহ।
মাত্র ৩৩ রানের লিড নিয়ে শেষ হয়ে যায় ভারত। তখনও আন্দাজ করা যায়নি যে ভারত যত দ্রুত অল আউট হয়েছে, ইংল্যান্ড তার থেকেও কম সময়ে অল আউট হয়ে যাবে।
প্রথম ইনিংসের মতো এ দিনও অশ্বিনের আগেই ভারতের হয়ে উইকেট পেতে শুরু করেন অক্ষর। প্রথম ওভারেই জ্যাক ক্রলি এবং জনি বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে দেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে প্যাভিলিয়নগামী হন ডম সিবলি।
চতুর্থ উইকেটে ইংল্যান্ডের ইনিংসকে কিছুটা স্থিতিশীল করার চেষ্টা করেন রুট এবং বেন স্টোক্স। স্টোক্স আগ্রাসী খেলার চেষ্টা করছিলেন। স্টেপ আউট করে মারার চেষ্টা করছিলেন, তাতে স্পিনারদের ছন্দ ভেঙে দেওয়া যায়। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্টোক্স আউট হতেই ইংল্যান্ডের একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে।
ফের পাঁচ উইকেট নিয়ে নেন অক্ষর পটেল। অন্য দিকে বিরাট কোহলি অন্য একজনের প্রতি দয়া না দেখালে অশ্বিনের পাঁচ উইকেটও হয়ে যেত এ দিন। তিনি হচ্ছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। প্রথম ইনিংসে বল করার সুযোগই পাননি ওয়াশিংটন। তাই কিছুটা মায়াদয়া থেকেই একটি ওভার তাঁকে বল করতে দেন বিরাট। আর সেই ওভারেই কেল্লাফতে। জেমস অ্যান্ডারসনের উইকেট তুলে নেন তিনি।
তা ভারতীয় দল যা করতে পেরেছিল, সেটার পুনরাবৃত্তির আশায় ইংল্যান্ডও দুই স্পিনার দিয়ে বোলিং শুরু করে। লিচের সঙ্গে নতুন বল হাতে তুলে নেন রুট। কিন্তু কাজের কাজ হওয়া তো দূর, রীতিমতো আগ্রাসী ঢঙেই ব্যাট করতে শুরু করেন রোহিত শর্মা এবং শুভমন গিল। কোনো উইকেট না হরিয়ে বোলারদের রীতিমতো শাসন করে ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
দু’ দিনে টেস্ট জিতে ইংল্যান্ডের বিশ্ব টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের আশা শেষ করে দিল ভারত। এখন লড়াইটা রইল ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে। পরের টেস্টটা ড্র করতে পারলেই ভারত ফাইনালে চলে যাবে। কিন্তু সব কিছুর মধ্যেও পিচ বিতর্ক যে থামবে না তা বলাই বাহুল্য।
ক্রিকেট
জো রুটের পাঁচ উইকেট, ভয়াবহ ব্যাটিং ভরাডুবি ভারতের
মাত্র ৩৩ রানে এগিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করল ভারত।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: মাত্র ৪৬ রানের মধ্যে পড়ল সাতটা উইকেট। অমদাবাদ টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় এ ভাবেই ভয়াবহ ব্যাটিং ভরাডুবির কবলে পড়ল ভারত। আর এই সাতটার মধ্যে পাঁচটা উইকেটই নিয়ে নিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট।
বৃহস্পতিবার ভারত নিজের স্কোর কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটা দেখার ছিল। রোহিত শর্মা এবং অজিঙ্ক রাহানের ওপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছিল। কিন্তু ভারতীয় স্পিনারদের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের স্পিনাররাও যে গোলাপি বলকে মারাত্মক ভাবে ঘোরাবেন সেটা কার্যত আন্দাজই করা যায়নি।
এ দিন খেলা শুরু হওয়ার প্রথম কয়েকটি ওভারের পর ভারতীয় শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন জ্যাক লিচ, অজিঙ্ক রাহানেকে তুলে নিয়ে। এর পর রোহিত শর্মাও লিচের ঘূর্ণির ফাঁদে পড়ে যান। এর পর শুধুই রুটের কেরামতি।
ভারতীয় পিচে দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলেছেন রুট। চেন্নাইয়ের প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে একার হাতেই ভারতকে হারিয়েছেন তিনি। টুকটাক বলও করতে পারেন। কিন্তু তা বলে সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি পাঁচ উইকেট নিতে পারেন, সেটা ভাবাই যায়নি। তাঁর ঘূর্ণির শিকার হলেন পন্থ, ওয়াশিংটন, অশ্বিন, অক্ষর এবং বুমরাহ।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩৩ রানে এগিয়ে থেকে অল আউট হয়ে গেল ভারত। তাদের ওপরেও এখন যথেষ্ট চাপ রয়েছে। ইংল্যান্ড ব্যাটিংকে কোনো ভাবেই বেশ দূর এগোতে দেওয়া যাবে না। চতুর্থ ইনিংসের লক্ষ্যমাত্রা ১০০ ছাড়িয়ে গেলেও কিন্তু ভারত বিপদে পড়তে পারে।
-
প্রযুক্তি3 days ago
রান্নার গ্যাসের ভরতুকির টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে কি না, কী ভাবে দেখবেন
-
দেশ17 hours ago
পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় ভোট, কলকাতায় ভোট ২৬ ও ২৯ এপ্রিল
-
কলকাতা2 days ago
শুধু দড়ি বেঁধে ম্যানহোলের কাজ করতে নেমে কুঁদঘাটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মৃত ৪ শ্রমিক
-
প্রযুক্তি2 days ago
সোশ্যাল, ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ কেন্দ্রের