শ্রয়ণ সেন
শেষ বার ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারত টেস্ট সিরিজ জিতেছে ২০০৭ সালে। এর পরের আঠারো বছরে ব্রিটিশভূম থেকে টেস্ট সিরিজের ট্রফি নিয়ে ফেরা হয়নি ভারতের। সুযোগ রয়েছে এবার, এই ২০২৫-এ। সেই সুযোগকে আরও মজবুত করতে হলে এজবাস্টন টেস্টে ভারতকে জিততে হবে।
যদিও টেস্ট ম্যাচ শুরুর আধ ঘণ্টা আগে ভারতের একটা ছোট্ট পদক্ষেপে যদি চোখ বোলানো যায় সন্দেহ জাগবে — ভারত আদৌ এই টেস্ট জিততে চায় তো? ব্যাটসম্যান কমিয়ে বোলার বাড়িয়ে একটা রক্ষণাত্মক দল নামিয়ে কি জেতা সম্ভব?
১৮ বছর আগে ভারত ইংল্যান্ডের মাটিতে শেষ বার টেস্ট সিরিজ জিতেছিল। তারও পাঁচ বছর আগের সিরিজটা জিততে না পারলেও ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলে সিরিজ ড্র করেছিল সৌরভের ভারত। তৎকালীন সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে ভারতকে কেউ বিশেষ পাত্তা দিত না।
দুটো সিরিজেই কিন্তু দল নির্বাচন একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলত। একাদশে থাকতেন ছ’জন ব্যাটার, এক জন উইকেট কিপার এবং চার জন বোলার।
১৮ বছর পরে যে দল নামছে, সেটা কী রকম হয়েছে? চার জন ব্যাটার, এক জন উইকেটকিপার, তিন জন অলরাউন্ডার এবং তিন জন প্রকৃত বোলার।
যে তিন জন অলরাউন্ডার খেলছেন তাঁদের প্রধান শক্তি কিন্তু বোলিংই, ব্যাটিং নয়। অর্থাৎ জাক কালিস, ইমরান খান, কপিল দেব বা ইয়ান বোথামের মতো এমন কেউ এঁরা নন যে ক্রিজে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাট করে যেতে পারবেন।
নির্দিষ্ট করে ভাগ করলে দেখা যাবে ভারত এমন দল নামিয়েছে যেখানে চার জন ব্যাটার, এক জন উইকেটকিপার এবং ছয় জন বোলার। জসপ্রীত বুমরাহ খেলছেন না।
এখানেই প্রশ্ন থেকে যায়। তা হলে কি বুমরাহ না খেলায় ভারতীয় বোলিং এতটাই দুর্বল হয়ে গেল যে তাকে ঢাকার জন্য বোলার আরও ঠুসে দেওয়া হল দলে? এককালে বিদেশের মাটিতে যে ভারতের মাত্র চার জন বোলারই প্রতিপক্ষের কুড়িটা উইকেট তুলে নিত, সেই দলের বোলিং এখন এতটাই দুর্বল যে কুড়ি উইকেট তোলার জন্য ছ’জন বোলার খেলাতে হচ্ছে?
বলতে দ্বিধা নেই যে ভারত এখন কোচসর্বস্ব দল। শুভমন গিল দলের অধিনায়ক হলেও দল বাছাই নিয়ে যাবতীয় কলকাঠি কোচ গৌতম গম্ভীরই নাড়াচ্ছেন। ভগৎ সিংহকে আদর্শ মনে করা সেই গম্ভীর হঠাৎ নিজের আগ্রাসী ভূমিকা ছেড়ে রক্ষণাত্মক হয়ে উঠলেন কেন? বাড়তি বোলার খেলাতে গিয়ে ব্যাটার কমিয়ে ব্যাটিংকেই দুর্বল করে দেওয়া হল না তো?
ভারত যদি কোনো ভাবে এজবাস্টন টেস্ট জিতে যায়, তা হলে এই সব প্রশ্নে ইতি পড়ে যাবে। কিন্তু যদি না যেতে তা হলে কিন্তু প্রশ্ন আরও বেশি করে উঠবে। অস্ট্রেলিয়ায় ভরাডুবির পর বলির পাঁঠা করা হয়েছিল রোহিত শর্মাকে। এবার সে রকম কোনো বলির পাঁঠা কোচ গম্ভীর খুঁজে পাবেন তো?