কার্তিক ত্যাগীর অনবদ্য শেষ ওভার, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পঞ্জাবকে হারিয়ে দিল রাজস্থান

0

রাজস্থান ১৮৫ (যশস্বী ৪৯, লোমরোর ৪৩, অর্শদীপ ৫-৩২)

পঞ্জাব ১৮৩-৪ (ময়াঙ্ক ৬৭, রাহুল ৪৯, ত্যাগী ২-২৯)

দুবাই: শেষ ওভারে দরকার বাঁচাতে হত মাত্র ৩ রান। এই পরিস্থিতিতে রাজস্থানের নায়ক হয়ে দেখা দিলেন অনামি কার্তিক ত্যাগী। গোটা ওভারে মাত্র ১ রান খরচা করলেন তিনি। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে কার্যত হারা ম্যাচ একদম শেষ মুহূর্তে জিতে গেল রাজস্থান।

অভিষেক ম্যাচে শুরুটা ভালো করতে পারেননি বাংলার ঈশান পোড়েল। নিজের প্রথম ওভারেই আট রান খরচ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে নতুন বলে জুটি তৈরি হয় বাংলারই মহম্মদ শামির। তবে শামি, পোড়েল মিলে রাজস্থানের ওপেনারদের বিরুদ্ধে কোনো সাফল্য পাননি।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দ্বিতীয়বার বল করতে এলে পোড়েলের ওভারে ১৭ রান তোলে রাজস্থান। ৪টি চার মাকেন এভান লুইস। ৪ ওভার শেষে রাজস্থান কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪০ রান তুলে ফেলে। তবে ব্যাট হাতে ঝড় লুইসকে ফেরত পাঠান অর্শদীপ সিং। ষষ্ঠ ওভারে অর্শদীপের তৃতীয় বলে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের হাতে ধরা পড়েন লুইস।

প্রথম পাওয়ারপ্লের শেষে ৬ ওভারে ৫৭ রান তুলে ফেলে রাজস্থান। এর পরেই আইপিএলে প্রথম উইকেট পান পোড়েল। ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে সঞ্জু স্যামসনের উইকেট তুলে নেন বাংলার পেসার। সঞ্জু ৫ বলে ৪ রান করে লোকেশ রাহুলের দস্তানায় ধরা পড়েন। রা

১০ ওভার শেষে রাজস্থান রয়্যালস ২ উইকেট হারিয়ে ৯৪ রান তোলে। যশস্বী জসওয়াল ২৬ বলে ৪০ রানে পৌঁছে যান। লিয়াম লিভিংস্টোন ছিলেন যশস্বীর সঙ্গে। ইনিংসের ১১তম ওভারে দলগত ১০০ রানের গণ্ডি টপকে যায় রাজস্থান রয়্যালস।

অর্শদীপের দ্বিতীয় শিকার হন লিভিংস্টোন। দ্বাদশ ওভারের পঞ্চম বলে ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের হাতে ধরা পড়েন লিয়াম। সাহায্যে ১৭ বলে ২৫ রান করে ক্রিজ ছাড়েন ব্রিটিশ তারকা। রাজস্থান দলগত ১১৬ রানে ৩ উইকেট হারায়।

ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মহিপাল লোমরোর। এসেই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন লোমরোর। অন্যদিকে, নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে আসেন যশস্বী জসওয়াল। ব্যক্তিগত ৪৯ রানের মাথায় হরপ্রীত ব্রারের বলে আউট হলেন রাজস্থান ওপেনার। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মায়াঙ্কের হাতে ধরা পড়েন জসওয়াল।

ইনিংসে ১৬তম ওভারে দীপক হুডার বলে ২৪ রান তুললেন মহিপাল লোমরোর। ওভারে দুটি ছক্কা এবং দুটি চার মারেন রাজস্থানের এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। এক আগে আদিল রশিদকে পরপর ২টি ছক্কা হাঁকান লোমরোর।

১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রিয়ান পরাগের উইকেট তুলে নিলেন মহম্মদ শামি। ৫ বলে ৪ রান করে মার্করামের হাতে ধরহা পড়েন রিয়ান। শেষ দিকেও অবশ্য দাপট জারি ছিল রাজস্থানের ব্যাটসম্যানদের। সেই দাপটকে সঙ্গে নিয়েই ১৮৫ রানে পৌঁছে যায় তারা।

পঞ্জাবের জবাব

পঞ্জাবের হয়ে ওপেন করতে নেমে দুরন্ত শুরু করেন অধিনায়ক কেএল রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়াল। মুস্তাফিজুর রহমনকে একটু বুঝেশুনে খেললেও অন্য বোলাদের বিরুদ্ধে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েন ময়াঙ্ক, রাহুল।

যদিও এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার জীবনও পেয়ে যান রাহুল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাকারিয়ার চতুর্থ বলে পয়েন্টে রাহুলের ক্যাচ ছেড়েছিলেন লুইস। ফের একবার পঞ্চম ওভারে মরিসের শেষ বলে রাহুলের ক্যাচ মিস করেন রিয়ান পরাগ। ৫ ওভার শেষে পঞ্জাব কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪১ রান তোলে।

এ দিকে, ক্রমে এগিয়ে যেতে থাকে রাহুল, ময়াঙ্কের ওপেনিং জুটি। দু’জনের ব্যাটিংয়ের সামনে রাজস্থানের পাহাড়প্রমাণ রানও খুবই কম লাগছিল।

দশম ওভারের মরিসের তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ময়াঙ্ক আগরওয়াল। এই ওভারের প্রথম বলেও ছয় মারেন মায়াঙ্ক। সব মিলিয়ে ৬টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৪ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন ময়াঙ্ক।

যদিও এর পর নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে এলেন লোকেশ রাহুল। ব্যক্তিগত ৪৯ রানে আউট হয়ে যান পঞ্জাব অধিনায়ক।

১৩তম ওভারে তেওয়াটিয়ার শেষ বলে লিভিংস্টোনের হাতে ধরা পড়েন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। ৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ বলে ৬৭ রান করে ক্রিজ ছাড়েন মায়াঙ্ক। পঞ্জাব দলগত ১২৬ রানে ২ উইকেট হারায়। যদিও এই উইকেট পরেও পঞ্জাবকে কোনো রকম চাপে পড়তেই হয়নি। কারণ ক্রিজে হাজির হন নিকোলাস পুরান। এইডেন মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্জাবকে জয়ের দিকে নিয়ে যান মারমুখী মেজাজের পুরান।

ম্যাচ ঘুরে যায় শেষ ওভারে। কার্তিক ত্যাগীর ওই ওভারে দরকার হত ৪ রান। শেষ ৪ বলে যখন পঞ্জাবকে জয়ের জন্য তিন রান করতে হবে, তখনই আউট হয়ে যান পুরান। ঠিক এই মুহূর্ত থেকে ম্যাচের মোড় পুরোপুরি ঘুরে যায়। দুটো বল নষ্ট করে ড্রেসিং রুমের পথ দেখেন দীপক হুডা।

জিততে গেলে শেষ বলে তিন রান দরকার হত পঞ্জাবের। শেষ বলটাও সামলাতে ব্যর্থ হন ফেবিয়ান অ্যালেন। দু’রানে ম্যাচ পকেটে পুরে ফেলে রাজস্থান।

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.