সঞ্জয় হাজরা
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ১৩৪তম ইন্ডিয়ান অয়েল ডুরান্ড কাপের সূচনা হল। এশিয়ার প্রাচীনতম ও ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই ফুটবল প্রতিযোগিতার ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। গৌরবময় ঐতিহ্য ও জাতীয় গর্বে ভরপুর এক মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি ভবন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আরবিসিসি, RBCC) থেকে পতাকা নাড়িয়ে ডুরান্ড কাপের তিনটি ঐতিহাসিক ট্রফির শুভ সূচনা করেন। প্রতিযোগতা শুরু হবে ২৩ জুলাই থেকে, ফাইনাল ২৩ আগস্ট।
এই নিয়ে পরপর দ্বিতীয় বছর রাষ্ট্রপতি এই প্রতীকী কর্মসূচি সম্পাদন করলেন। এই কর্মসূচি ক্রীড়া, সেনা ও জাতীয়তাবাদের অনন্য মেলবন্ধন হিসেবে ডুরান্ড কাপের চিরন্তন গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করে। স্বাধীনোত্তর যুগে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক প্রধানের সঙ্গে ডুরান্ড কাপের সরাসরি সম্পর্কের ঐতিহ্যও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বজায় রইল।

ভাষণ দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
রাষ্ট্রপতি ভবন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল অমরপ্রীত সিং এবং পূর্ব কমান্ডের জিওসি-ইন-সি ও ডুরান্ড কাপ আয়োজক কমিটির পৃষ্ঠপোষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বিশিষ্ট ভারতীয় ফুটবলার সন্দেশ ঝিঙ্গান।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর ভাষণে ডুরান্ড কাপকে ভারতের ফুটবল ঐতিহ্য এবং সশস্ত্রবাহিনীর ক্রীড়া প্রতিশ্রুতির জীবন্ত প্রতীক বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “ফুটবল কেবল একটি খেলা নয়, এটি এক আবেগ। এই খেলাটি কৌশল, সহনশীলতা এবং দলগত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। ডুরান্ড কাপের মতো প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র খেলাধুলার চেতনা বিকাশ করে না, বরং নতুন প্রতিভাদের জন্য একটি মঞ্চও তৈরি করে।” ডুরান্ড কাপকে বাঁচিয়ে রাখার এবং উৎসাহিত করার কাজে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি।
ডুরান্ড কাপ, রাষ্ট্রপতি কাপ এবং শিমলা ট্রফি, এই তিনটি ট্রফি এবার যাত্রা শুরু করবে পাঁচটি আয়োজক রাজ্য জুড়ে – পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, অসম, মেঘালয় ও মণিপুর। এই ট্রফি ট্যুরের পর ২৩ জুলাই ২০২৫ থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ২৩ আগস্ট, ২০২৫।

বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি।
ডুরান্ড কাপ সম্পর্কিত তথ্য
ডুরান্ড কাপ হল ভারতের ফুটবল ঐতিহ্যের এক গর্বিত প্রতীক, এশিয়ার প্রাচীনতম ও বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীনতম ফুটবল টুর্নামেন্ট। এটি ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়। প্রথমবার এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ১৮৮৮ সালে শিমলায়। পরে এটি ১৯৪০ সালে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয় এবং সাত দশকেরও বেশি সময় সেখানেই থেকে যায়।
২০১৯ সালে এটি সেনাবাহিনীর পূর্ব কমান্ডের অধীনে কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়, যাকে ভারতের ফুটবলের ‘মক্কা বলা হয়। এর পর থেকে প্রতিযোগিতাটি একক শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে বহু রাজ্যব্যাপী ক্রীড়া উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল পায় তিনটি ট্রফি: ডুরান্ড কাপ, শিমলা ট্রফি এবং রাষ্ট্রপতি কাপ। প্রতি বছর এই ট্রফিগুলি তৈরি করা হয় এবং স্থায়ী ভাবে বিজয়ী দলকে প্রদান করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং ছবি ডুরান্ড কমিটির সৌজন্যে