ব্রাজিল গেলেও আর্জেন্তিনা আছে। বিশ্বকাপের ফাইনালে লাতিন আমেরিকার কোনো দেশের জয় দেখতে আশায় বুক বাঁধছেন ব্রাজিলের একাংশের ফুটবল অনুরাগীরাও!
কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে ব্রাজিল। তার পরই গভীর হতাশা। সেই পরিস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে উত্তরণের পর একটা অংশের ব্রাজিল সমর্থক এখন লিওনেল মেসির আর্জেন্তিনাকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। আগামী রবিবার ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হচ্ছেন মেসিরা।
আর্জেন্তিনাই যোগ্য!
এনডিটিভি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া এক ব্রাজিল সমর্থকের মন্তব্য, “একজন ফুটবল অনুরাগী হিসাবে আমি মনে করি আর্জেন্তিনা এই খেতাব (চ্যাম্পিয়ন) পাওয়ার যোগ্য”।
মঙ্গলবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলে জয়ের সময়েও কোনো কোনো ব্রাজিল সমর্থককে উল্লাস করতে দেখা যায়। শুধু কি তাই, অতীত ভুলে কেউ কেউ ব্রাজিলের নীল-সাদা জার্সিও গায়ে চড়াচ্ছেন। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় শহরের রাস্তায় নীল-সাদা জার্সি পরিহিত আরেক ব্রাজিল সমর্থকের মন্তব্য, “যে কোনো ফুটবলপ্রেমী এমন একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে সমর্থন করেন।”
অন্য দিকে, বিশ্বকাপের আগে আর্জেন্তিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছিলেন, তাঁর দল যদি টুর্নামেন্ট জিততে না পারে, তা হলে তিনি চাইবেন, লাতিন আমেরিকার কোনো দল চ্যাম্পিয়নের শিরোপা অর্জন করবে। সেটা ব্রাজিলও হতে পারে।
এর নেপথ্যে কাজ করছে আরেকটা অঙ্ক। এ বার লিওনেল মেসি নিজের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। এতে ভেঙে যেতে পারে শেষ কয়েকটি বিশ্বকাপে ইউরোপের আধিপত্য। শেষ চারটি বিশ্বকাপ জিতেছিল ইউরোপের চার দেশ, যথাক্রমে ইতালি (২০০৬), স্পেন (২০১০), জার্মানি (২০১৪) এবং ফ্রান্স (২০১৮)।
থাকছে রেষারেষিও
৩৩ শতাংশ ব্রাজিলিয়ান আর্জেন্তিনাকে নিজেদের “দ্বিতীয়” দল হিসেবে চিহ্নিত করলেও, ৬০ শতাংশেরও বেশি চান মেসিরা যেন বিশ্বকাপ জিততে না পারেন। ব্রাজিলিয়ান ডেটা অ্যানালিসিস ইনস্টিটিউটের একটি সমীক্ষায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফুটবলের ক্ষেত্রে আর্জেন্তিনীয় এবং ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে সম্পর্ক জটিল। সৌদি আরবের বিপক্ষে আর্জেন্তিনা নিজের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর, ব্রাজিলিয়ান সোশ্যাল মিডিয়া জোকস এবং মেমে ভরে গিয়েছিল। কেউ কেউ ব্রিটিশ জুটি অ্যান্ড্রু লয়েড ওয়েবার এবং টিম রাইসের রচিত বিখ্যাত “ডোন্ট ক্রাই ফর মি আর্জেন্তিনা” গানটিও বাজিয়েছিলেন।
তবে, নকআউটে পৌঁছে আর্জেন্তিনা নয়, ছিটকে যাওয়ার পর প্রথমেই কাঁদতে হয়েছে ব্রাজিলকে। তবে ফাইনালে যে-ই জিতুক, হাসবে সেই ফুটবল!
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ২০২২: ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি আর্জেন্তিনা, যে সব রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে দু’দেশ