কাতার: এ ভাবেও প্রতিবাদ জানানো যায়। এ ভাবেও সমর্থন জানানো যায়। সোমবার কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলে সেটাই দেখাল ইরানের জাতীয় ফুটবল দল।
ইংল্যান্ড বনাম ইরানের ম্যাচের আগে দু’ দলের জাতীয় সংগীত গাওয়ার কথা। কিন্তু ইরানের খেলোয়াড়রা জাতীয় সংগীত গাইলেন না। মেয়েদের হিজাব না-পরার সমর্থনে তাঁদের দেশে যে আন্দোলন চলছে, তারই সমর্থনে তাঁদের এই সিদ্ধান্ত।
কাতারে ম্যাচের আগে ইরান জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আলিরেজ জাহাঁবখশ বলেছিলেন, ইরানের শাসকদের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে তার প্রতি সহমর্মিতা জানানোর জন্য জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে কি হবে না তা তাঁর দল সমবেত ভাবে ঠিক করবে। শেষ পর্যন্ত তারা গাইল না।
দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দু’ দলের ম্যাচের আগে যখন ইরানের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, তখন দেখা যায় দলের খেলোয়াড়রা কোনো রকম আগ্রহ না দেখিয়ে অবজ্ঞা প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ মুখের নানা রকম ভঙ্গি করছিলেন।
সারা দেশ জুড়ে গত দু’ মাস ধরে ব্যাপক আন্দোলন চলছে ইরানে। ইসলামিক রিপাবলিকে মেয়েদের পোশাকবিধি, বিশেষ করে মাথায় হিজাব পরার সরকারি ফতোয়া নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলনে শামিল হয়ে গ্রেফতার হন ২২ বছরের কুরদিশ মেয়ে আমিনি। গ্রেফতারের তিন দিন পরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই গোটা দেশে কার্যত আগুন জ্বলছে।
আমিনির মৃত্যুর পরে আন্দোলন বন্ধ করার জন্য ইরান সরকার যে দমনপীড়ন চালাচ্ছে তাতে ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই তথ্য দিয়েছে ওসলোর ইরান হিউম্যান রাইটস্ গ্রুপ।
কিছু দিন আগে কয়েক জন ইরানি অ্যাথলিট জাতীয় সংগীত না গাওয়ার অথবা জিতলে কোনো রকম আনন্দ না করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই ব্যাপারে গত সপ্তাহে এক ব্রিটিশ সাংবাদিকের প্রশ্নে বিরক্ত হয়েছিলেন ইরানের অধিনায়ক তথা ইংল্যান্ডের ক্লাব ব্রাইটনের খেলোয়াড় আলিরেজ জাহাঁবখশ। তিনি বলেন, “প্রত্যেক খেলোয়াড়ের আনন্দ করার নিজস্ব ধারা আছে। আপনি জাতীয় সংগীত গাওয়া নিয়ে জানতে চাইছেন। এই বিষয়টা টিমেই ঠিক করা হবে। এ নিয়ে আমরা কথাও বলেছি।”
আরও পড়ুন
বিস্ফোরক মন্তব্যে জোর বিতর্ক, এরই মধ্যে আরেক কীর্তি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর