মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট: ২ (মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো) নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি: ০
গুয়াহাটি: এ বারের আইএসএল-এ ক্রমশই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। এগিয়ে চলেছে তাদের বিজয়রথ। কিছুতেই তাদের থামানো যাচ্ছে না। নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে তাদের ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়ে এ বারের লিগের সাত নম্বর জয়টি তুলে নিল সবুজ-মেরুন বাহিনী। একই সঙ্গে জয়ের হ্যাটট্রিক করল তারা।
রবিবার গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে নর্থইস্টকে হারিয়ে আবার লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠে এল মোহনবাগান। আবার তারা টপকে গেল বেঙ্গালুরু এফসি-কে।
মোহনবাগানের দুই নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার আলবার্তো রড্রিগুয়েজ এবং শুভাশিস বোস কার্ড সমস্যার জন্য এ দিন খেলতে পারেননি। রড্রিগুয়েজের জায়গায় আশিস রাই ও শুভাশিসের বদলে আশিক কুরুনিয়ানকে খেলান কোচ খোসে মোলিনা। আশিস রাই তাঁর কাজ দারুণ ভাবে করেন। নর্থইস্ট ও লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা আলাদিন আজারেইকে এ দিন বেশ ক্ষুধার্ত মনে হচ্ছিল। বাঁ দিক দিয়ে বার বার ঢুকছিলেন প্রতিপক্ষের গোল এলাকায়। কিন্তু সমানে তাঁকে আটকে রাখেন আশিস।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য
ম্যাচের গোড়া থেকেই দুই দল আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণ চালিয়ে যায়। তারই মধ্যে মোহনবাগান তুলনামূলক ভাবে বেশি আক্রমণাত্মক ছিল। ম্যাচের ১০ মিনিটে নর্থইস্টের বক্সের মাথা থেকে লিস্টন কোলাসো দুর্দান্ত শট নেন কিন্তু তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফের ২০ মিনিটের মাথায় দিমিত্রিয়স পেত্রাতোসের ভাসানো বলে ফ্লিক করেন কোলাসো। কিন্তু তা সোজা নর্থইস্টের গোলকিপার গুরমিত সিংয়ের হাতে চলে যায়।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে বক্সের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা পেত্রাতোস কোলাসোর বাড়ানো বল থেকে প্রতিপক্ষের গোলে শট নেন। কিন্তু গুরমিত অসাধারণ দক্ষতায় বারের ওপর দিয়ে তা বের করে দেন। মোহনবাগান কর্নার পায়। সেই কর্নার থেকে হেড করে গোল করার চেষ্টা করেন টম অলড্রেড। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
জয়ের দুই নায়ক লিস্টন কোলাসো এবং মনবীর সিং। ছবি Indian Super League ‘X’ থেকে নেওয়া।
দুটি গোল এল দ্বিতীয়ার্ধে
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে নর্থইস্ট। ৪৭ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ম্যাকার্টন নিক্সনের শট আটকে দেন মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কায়েথ। ৫৪ মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ পায় নর্থইস্ট। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে কোণাকুনি গোলে শট নেন আলবিয়াখ। কিন্তু বিশালের গায়ে লেগে তা ছিটকে আসে আলাদিনের পায়ে। কিন্তু তাঁর শট বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।
নর্থইস্টের আক্রমণের ফাঁকেই প্রতি-আক্রমণে উঠে আসে মোহনবাগানও। সেই সূত্রেই ৬৫ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। ডান দিকের উইংয়ে থাকা মনবীরকে পাস বাড়ান আপুইয়া। বল নিয়ে কাট-ইন করে মনবীর চলে আসেন নর্থইস্টের পেনাল্টি বক্সের সামনে। সেখান থেকেই বাঁ পায়ে সোজা গোলে শট নেন তিনি। সেই শট গুরমিতকে পরাস্ত করে গোলে ঢুকে যায়। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
উজ্জীবিত সবুজ-মেরুন বাহিনী ছ’মিনিট পরেই ফের গোল পেয়ে যায়। এ বার গোলদাতা লিস্টন কোলাসো। আশিস রাইয়ের পাস থেকে বল পেয়ে বাঁ দিক থেকে ডান দিকে কাট-ইন করে বক্সে ঢুকে পড়েন কোলাসো এবং বক্সের মাথা থেকে ডান পায়ে নর্থইস্টের গোল লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন। এ বারও বলের নাগাল পাননি গুরমিত। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। এর পর গোল শোধের আপ্রাণ চেষ্টা করে নর্থইস্ট। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।
লিগ টেবিলে কে কোথায়
রবিবারের জয়ের পরে ১০টা ম্যাচ থেকে ২৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মোহনবাগান চলে গেল শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গালুরু এফসি-রও পয়েন্ট ২৩। তবে তারা মোহনবাগানের চেয়ে ১টা ম্যাচ বেশি খেলেছে। এবং গোলপার্থক্যের বিচারেও বেঙ্গালুরুর (৮) চেয়ে মোহনবাগান (১১) এগিয়ে। আর চতুর্থ হারের পর নর্থইস্ট ইউনাইটেড থেকে গেল ষষ্ঠ স্থানে। ১১ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট।