মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট: ৩ (আলবার্তো রদ্রিগুয়েজ ২, জেমি ম্যাকলারেন)
পঞ্জাব এফসি: ১ (রিকি শাবং)
নয়াদিল্লি: প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে তিন গোল দিল। ততক্ষণে অবশ্য দশ জনে হয়ে গিয়েছে পঞ্জাব। যা-ই হোক, আগের ম্যাচে এফসি গোয়ার কাছে হারের পর আবার জয়ের রাস্তায় ফিরল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। কিছুটা হলেও চিন্তা কিছুটা দূর হল সবুজ-মেরুন সমর্থকদের।
এ দিনের জয়ের পরে ১৩ ম্যাচ থেকে ২৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মোহনবাগান থাকল আইএসএল পয়েন্টস টেবিলের শীর্ষে। আর ১২ ম্যাচ থেকে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে পঞ্জাব চলে গেল সপ্তম স্থানে।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে দুই অর্ধে মোহনবাগানের খেলায় আকাশ-পাতাল তফাত চোখে পড়ে। প্রথমার্ধে যেখানে তারা মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল, সেখানে দ্বিতীয়ার্ধে তাদের আটটি শট পঞ্জাবের গোলে ছিল। প্রথমার্ধে একেবারেই ছন্দে ছিল না খোসে মোলিনার দল। ফলে ম্যাচের ১২ মিনিটে গোল খেয়ে যাওয়ার পর সবুজ-মেরুন বাহিনী সেই গোল প্রথমার্ধে শোধ করতে পারেনি।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে অন্য মূর্তি বাগানের। এই অর্ধের খেলা শুরু হতে না হতেই ম্যাচে সমতা ফেরানো। তার পর ৬৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল। এবং শেষ পর্যন্ত পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার গোল। ততক্ষণে পঞ্জাবের আর্জেন্তাইন মিডফিল্ডার পুলগা ভিদাল লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে। তাই তুলনায় দুর্বল প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে আরও সুবিধা হল বাগানের।
প্রথমার্ধে পঞ্জাব এগিয়ে ১-০ গোলে
প্রথমার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ শানায় পঞ্জাব। ৩ মিনিটের মাথায় নিখিল প্রভুর শট মোহনবাগানের বারে লেগে ফিরে আসে। এবং ৯ মিনিট পরেই গোল পেয়ে যায় তারা। বাঁ দিক থেকে মোহনবাগানের বক্সে ঢুকে সোজা গোলে শট নেন রিকি শাবং। আশিস রাই, টম অলড্রেড ও আলবার্তো রদ্রিগুয়েজ, তিন ডিফেন্ডারের কেউই রিকিকে আটকাতে পারেননি। মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কায়েথেরও কিছুই করার ছিল না। পঞ্জাব এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর পঞ্জাবের রক্ষণ খুবই সতর্ক ছিল। তারা মোহনবাগানের দুই বিদেশি স্ট্রাইকার জেসন কামিংস এবং জেমি ম্যাকলারেনকে কড়া পাহারায় রেখে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের ৩ গোল
দ্বিতীয়ার্ধে অন্য রূপে ধরা দেয় মোহনবাগান। তারা মনোনিবেশ করে সেটপিস থেকে গোল করার ওপরে। তার ফলও পায় তারা। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে জেসন কামিংসের কর্নারে অনেকটা লাফিয়ে নিখুঁত হেড ফ্লিকে জালে বল জড়িয়ে দেন আলবার্তো রদ্রিগুয়েজ। ম্যাচে সমতা ফেরে। তিন মিনিট পরেই পঞ্জাবের মিডফিল্ডার পুলগা ভিদাল দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ফলে সমস্যায় পড়ে তারা। তারই সুযোগে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে বাগান।
বাগানের দ্বিতীয় গোল আসে ৬৪ মিনিটের মাথায়। গোলমুখী অনিরুদ্ধ থাপাকে নিজেদের বক্সের মধ্যে অবৈধ ভাবে বাধা দেন পঞ্জাবের দুই ডিফেন্ডার সুরেশ মিতেই ও আসিসি মেলরয়। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে কোনো দ্বিধা করেননি। এই পেনাল্টি থেকেই গোল করে দলকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন ম্যাকলারেন।
মোহনবাগানের তৃতীয় তথা চূড়ান্ত গোলটি আসে পাঁচ মিনিট পরেই। আবার গোল আসে রদ্রিগুয়েজের মাথা থেকে। অনিরুদ্ধর ক্রস পঞ্জাবের বক্সে থাকা রদ্রিগুয়েজের কাছে চলে যায়। সেই ক্রসে নিখুঁত মাপা জোরালো হেডে গোল করেন তিনি। এর পর পঞ্জাব পাল্টা আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেনি।