খবর অনলাইন ডেস্ক: এ বারের আইএসএল-এ খুব করুণ অবস্থা ইস্টবেঙ্গলের। এখনও পর্যন্ত ৬টা ম্যাচ খেলেছে তারা। সব ম্যাচেই হেরেছে। ফলে ১৩ দলের লিগ টেবিলে লাল-হলুদ বাহিনী রয়েছে একেবারে নীচে। এ হেন ইস্টবেঙ্গল দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে চলে গিয়েছে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে। লিগের গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে তারা এই অসাধ্য সাধন করেছে।
ওদিকে ইস্টবেঙ্গলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান এখনও পর্যন্ত এ বারের আইএসএল-এ বেশ ভালো জায়গায় রয়েছে। ৬টা ম্যাচের মধ্যে ৪টে ম্যাচ জিতে তারা রয়েছে লিগ টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে। কিন্তু এই মোহনবাগান এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কী করছে? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে সমর্থকদের মধ্যে।
আসলে ফুটবলারদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে শাস্তি ভোগ করছে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস। তাদের প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল করে দিয়েছে এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (এএফসি)। তবে কোনো আর্থিক জরিমানা হয়নি মোহনবাগানের। এএফসি কর্তৃপক্ষ রবিবার এ কথা জানিয়ে দিয়েছে মোহনবাগানকে।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে অক্টোবরের শুরুতে ইরানের তাবরিজে ট্রাক্টর এফসির বিরুদ্ধে খেলা পড়েছিল মোহনবাগানের। ইজরায়েলের সঙ্গে বিরোধকে কেন্দ্র করে সেই সময়ে ইরানের পরিস্থিতি ছিল খুবই উত্তপ্ত। মোহনবাগানের ম্যাচের আগের দিনই ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল। এই পরিস্থিতিতে ইরানে ম্যাচ খেলার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল মোহনবাগান। নিরপেক্ষ দেশে ম্যাচ আয়োজনের সম্ভাবনাও প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বেঁকে বসে ট্রাক্টর এফসি। তারা ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত ইরানের ক্লাবটিকে ৩ পয়েন্ট দেওয়া হয় এবং তাদের পক্ষে ৩টি গোলও দেওয়া হয়।
এএফসি মোহনবাগানকে জানিয়ে দেয়, প্রতিযোগিতার নিয়মাবলি অনুসারে ধরে নেওয়া হয়েছে, মোহনবাগান প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। গ্রুপ স্টেজের প্রথম ম্যাচে মোহনবাগান যে ১ পয়েন্ট পেয়েছিল তা-ও কেটে নেওয়া হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনে মোহনবাগান জানায়, সে সময় ইরানে পরিস্থিতি যা ছিল, তাতে সেখানে যাওয়া যায় না। পরবর্তী ঘটনাবলিতে প্রমাণও হয়েছে, মোহনবাগানের যুক্তিতে কোনো ভুল ছিল না। তা ছাড়া দলের খেলোয়াড়রা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা ইরানে খেলতে যেতে রাজি নন।
নিয়ম অনুযায়ী, মোহনবাগানকে আর্থিক জরিমানা করতে পারত এএফসি। কিন্তু ইরানের পরিস্থিতি বিবেচনা করে জরিমানা মকুব করার আবেদন জানায় মোহনবাগান। সবুজ-মেরুনের সেই আর্জি মঞ্জুর করে এএফসি, তবে জানিয়ে দেয় প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচগুলি আর খেলতে পারবে না মোহনবাগান। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার খেসারত দিচ্ছে মোহনবাগান।
সবুজ-মেরুন সমর্থকদের প্রশ্ন, খেলোয়াড়দের প্রাণের চেয়ে কি সংগঠনের নিয়মাবলির গুরুত্ব বেশি? পশ্চিম এশিয়ায় মারাত্মক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বুঝে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত না?