সৌরভ গাঙ্গুলি আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। নিঃসন্দেহে ভারতের সেরা দুই অধিনায়ক। ধোনির নেতৃত্বে ২০১১ বিশ্বকাপ, ২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপ-সহ একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন। অন্যদিকে যে দল নিয়ে বিশ্বজয়ী হয়েছেন ধোনি সে দল যে আদতে সৌরভের তৈরি করে দেওয়া সেটা এক বাক্যে মানেন অনেকেই। বিদেশে টেস্ট জয়ের রেকর্ডে এখনও সৌরভের ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনি বাকিরা।
ভারতের সেরা অধিনায়ক কে, এই ব্যাপারে ধোনি আর সৌরভভক্তদের মধ্যে বিতর্ক অনেক দিনের। সেই বিতর্কে এবার ঘি ঢাললেন যুবরাজ সিংহ। তাঁর দেখা সেরা অধিনায়ক কে, এই প্রশ্নের উত্তরে কোনও রাখঢাক না করেই পরিষ্কার করে নিজের মত প্রকাশ করলেন তিনি।
যুবরাজের কেরিয়ারে সৌরভের অবদান অনেক। ২০০০ সালে কেনিয়ায় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফির দলে যুবরাজকে ঢোকানো নিয়ে নির্বাচকদের সাথে এক প্রস্থ ঝামেলা লেগে গিয়েছিল তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভের। নির্বাচকদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুধুমাত্র সৌরভের জেদে কেনিয়া যান যুবরাজ এবং প্রথম সুযোগেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ৮৪ করেন তিনি। এরপর তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সৌরভের নেতৃত্বে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন জুবি, তেমনই ধোনির নেতৃত্বেও অসাধারণ সব ইনিংস দেশকে উপহার দিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১১ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের সেরা হওয়া আর ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছয় বলে ছটা ছয়। আবার এই ধোনির নেতৃত্বেই দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছে যুবরাজকে। অন্যদিকে সৌরভের নেতৃত্বে চুটিয়ে খেলে গিয়েছেন তিনি।
বছর দশ-এগারো আগে একটি সাক্ষাৎকারে সৌরভ সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল যুবরাজ মন্তব্য করেছিলেন, “এমন অধিনায়কের জন্য আমি আমার জীবন দিতেও তৈরি।” সেই যুবরাজ আবার বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর প্রিয় দাদির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এখনও এতটুকু কমেনি। তাঁর সেরা অধিনায়ক যে সৌরভই তা বুঝিয়ে একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সৌরভের নেতৃত্বেই আমি আমার কেরিয়ার শুরু করি। সৌরভই গোটা দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাকে, সহবাগ, নেহরা, জাহির আর হরভজনকে সব সময় সমর্থন করে গেছে”।
এর আগেও সহবাগ, জাহির, হরভজনরা প্রকাশ্যেই সৌরভের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। যুবরাজের এই মন্তব্য আবার প্রমাণ করল দুর্দান্ত রেকর্ড থাকলেই সেরা অধিনায়ক হওয়া যায় না। সেরা অধিনায়ক তিনিই যিনি তাঁর সতীর্থদের সম্মান কুড়িয়ে নেন।