কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর): ১৬৯ (বেঙ্কটেশ আইয়ার ৭০, মনীশ পাণ্ডে ৪২, জসপ্রীত বুমরাহ ৩-১৮, নুয়ান তুষার ৩-৪২)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (এমআই): ১৪৫ (১৮.৫ ওভার) (সূর্যকুমার যাদব ৫৬, মিশেল স্টার্ক ৪-৩৩, সুনীল নারিন ২-২২, বরুণ চক্রবর্তী ২-২২ )
মুম্বই: মিশেল স্টার্ক তাঁর দাম বোঝালেন। ২৫ কোটি টাকা দিয়ে কেনা এই তারকা ক্রিকেটার ঠিক যেন তাঁর প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারছিলেন না। শুক্রবার তাঁর মনের বেদনা ঘুচল। ব্যাটিংয়ে তেমন সাফল্য না পেলেও কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) তাঁরই বোলিংয়ের সুবাদে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে জয় পেল। স্টার্ক এ দিন ৩৩ রান দিয়ে ৪টি উইকেট দখল করেন।
শুক্রবার মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর নির্ধারিত ২০ ওভারে করে ১৬৯ রান। জয়ের জন্য ১৭০ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তারা করে ১৪৫ রান। ফলে কেকেআর জেতে ২৪ রানে। কেকেআর-এর বেঙ্কটেশ আইয়ার ৫২ বলে ৭০ রান করে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন।
এ দিন নিজেদের ঘরের ম্যাচে টসে জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠায় মুম্বই। এবারের আইপিএল-এ একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বহু ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে রান ২০০-এর বেশি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শুক্রবারের ম্যাচে কিন্তু তার অন্যথা হল। যে উদ্দেশে টসে জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠাল মুম্বই, তা সফল হল।
কলকাতা আটকে গেল ১৬৯-এ
শুরুতেই ঘন ঘন উইকেট পড়ে যায় কলকাতার। ৫৭ রানের মধ্যে তারা হারায় ৫টি উইকেট। এর জন্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে শ্রীলঙ্কার বোলার নুয়ান তুষার। দলের দুই বিধ্বংসী ওপেনার ফিল সল্ট এবং সুনীল নারিন এ দিন কোনো কেরামতি দেখাতে পারেননি। সল্ট আউট হন ব্যক্তিগত ৫ রানে এবং নারিন ৮ রানে। দলের ৭ রানে আউট হন সল্ট এবং ২২ রানে আউট হন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। তাঁর সংগ্রহ ৬ বলে ১৩ রান। দলের স্কোরের সঙ্গে মাত্র ৬ রান যোগ হতে তৃতীয় উইকেট পড়ে যায়। ৪ বলে ৬ রান করে ফিরে যান অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার।
সুনীল নারিন আউট হন দলের ৪৩ রানে। কেকেআর-এর প্রথম ৪টি উইকেটের মধ্যে নুয়ান তুষার তুলে নেন ৩টি উইকেট। দলের ৫৭ রানে রিঙ্কু সিং আউট হওয়ার পর পতন কিছুটা রোধ করেন বেঙ্কটেশ আইয়ার এবং মনীশ পাণ্ডে। ষষ্ঠ উইকেটে যোগ হয় ৮৩ রান। দলের ১৪০ রানে হার্দিক পাণ্ড্যর বলে মনীশ পাণ্ডে (৩১ বলে ৪২ রান) আউট হওয়ার পর কেকেআর-এর বাকি ৪ উইকেট পড়ে যায় ২৯ রানের মধ্যে। শেষের দিকে কেকেআর-এর ইনিংসে ধস নামান জসপ্রীত বুমরাহ। তিনি ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। শেষ ব্যাটার আউট হন বেঙ্কটেশ আইয়ার। তাঁর ৭০ রানে ছিল ৩টে ছয় আর ৬টা চার।
হিমশিম খেয়ে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
জয়ের জন্য ১৭০ রান তুলতে গিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কার্যত ভিরমি খেয়ে যায়। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। কেকেআর-এর বোলারদের বিরুদ্ধে কেউই তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি, একমাত্র সূর্যকুমার যাদব এবং কিছুটা টিম ডেভিড ছাড়া। ৭১ রানের মধ্যে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ৬টি উইকেট পড়ে যায়। এর পর সপ্তম উইকেটের জুটিতে ৪৯ রান যোগ হয়। তখন সূর্যকুমার যাদব এবং টিম ডেভিড যেভাবে খেলছিলেন তাতে মুম্বইয়ের সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছিল।
কিন্তু দলের ১২০ রানের মাথায় সূর্যকুমার যাদব প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতেই আবার উইকেট পতন শুরু হয়ে যায়। ৩৫ বলে ৫৬ রান করে আন্দ্রে রাসেলের বলে সল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান যাদব। যাদবের ৫৬ রানে ছিল ২টি ছয় ও ৬টি চার। এর পর মুম্বইয়ের ইনিংসে আর মাত্র ২৫ রান যোগ হতেই বাকি ৩টি উইকেট পড়ে যায়। কেকেআর ম্যাচ জিতে যায় ২৪ রানে।
আরও পড়ুন
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও ঝুলন গোস্বামীর উপস্থিতিতে বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি উন্মোচন