কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০৬-৪ (আন্দ্রে রাসেল ৫৭ নট আউট, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী ৪৪, রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৩৫, রিয়ান পরাগ ১-২১)
রাজস্থান রয়্যালস: ২০৫-৮ (রিয়ান পরাগ ৪৫, যশস্বী জয়সওয়াল ৩৪, বরুণ চক্রবর্তী ২-৩২, হর্ষিত রানা ২-৪১)
কলকাতা: এ বারের আইপিএল-এ তাদের খেলার ধারা অক্ষুণ্ণ রেখে আবার তীরে এসে তরী ডোবাল রাজস্থান রয়্যালস। এই নিয়ে বার বার কয়েক বার। জয়ের জন্য শেষ বলে দরকার ছিল ৩ রান। তার আগের বলেই ৬ মেরে দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন শুভম দুবে। তাই রাজস্থানের সমর্থকরা আশায় আশায় ছিলেন। শেষ বলে অন্তত একটা চার মেরে জয় আনবেন শুভম। কিন্তু পারলেন না। এল ১ রান। কলকাতা নাইট রাইডার্স কোনোরকমে ১ রানে জিতে প্লে অফে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখল। ১১ ম্যাচ থেকে ১১ পয়েন্ট সংগ্রহ করল কেকেআর। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন আন্দ্রে রাসেল।
টসে জিতে ব্যাট নিল কেকেআর
টি২০ ম্যাচে টসে জয়ী দল সাধারণত প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠায়। কিন্তু কেকেআর তা করল না। টসে জিতে তারা নিজেরাই ব্যাট নিল এবং তার সুফলও পেল। ছ’ জন ব্যাটারই দু’ অঙ্কের রানে পৌঁছোলেন। ব্যক্তিগত ১১ রানের মাথায় সুনীল নারাইন যুধবীর সিংহের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। দলের রান তখন ১৩। কেকেআর-এর সমর্থকরা একটু হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আজও কি তা হলে ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হবে? কিন্তু পরের ব্যাটাররা শেষ পর্যন্ত দলের রান পৌঁছে দিলেন ২০৬-এ।

জয়ের আনন্দ কেকেআর-এর। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
সুনীল বিদায় নিতে হাল ধরলেন আর-এক ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ (২৫ বলে ৩৫ রান) এবং অধিনায়ক রাহানে। ওঁরা দুজনে রান পৌঁছে দিলেন ৬৯-এ। মহেশ ঠিকসানা ফেরালেন গুরবাজকে। অজিঙ্কর সঙ্গী হলেন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। দুজনের ব্যাটে দলের রান পৌঁছে গেল ১২.৪ ওভারে ১১১-য়। ২৪ বলে ৩০ করে অজিঙ্ক রিয়ান পরাগের বলে ধ্রুব জুরেলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন।
রঘুবংশীর জুটি হলেন আন্দ্রে রাসেল। অনেক দিন পর সেই পুরনো রাসেলকে পাওয়া গেল। ব্যাটে ঝড় তুললেন রাসেল। রাসেল, রঘুবংশী (৩১ বলে ৪৪ রান) এবং কিছুটা রিঙ্কু সিংহের ব্যাটের সুবাদে কলকাতার রান পৌঁছে গেল ২০৬-এ। ২৫ বলে ৫৭ করে নট আউট থাকলেন রাসেল। তাঁর রানে ছিল ৬টা ছয় আর ৪টে চার। একসময় ছয় মারার হ্যাটট্রিক করলেন রাসেল। রিঙ্কুও ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন। মাত্র ৬ বলে ১৯ রান করে নট আউট থাকলেন। কলকাতার ৪টি উইকেট ভাগ করে নিলেন রাজস্থানের চার বোলার।

বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশীজ ক্যাচ ধরলেন কেকেআর-এর অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
২ বলে ৪ রান করে বিদায় বিস্ময়বালকের
জয়ের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে শুরুটা একদমই ভালো হল না রাজস্থানের। এ দিন ১৪ বছরের বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশী আবার ব্যর্থ হলেন। আগের ম্যাচের মতোই মাত্র দুটো বল খেললেন বৈভব। বৈভব সূর্যবংশী আউট হলেন বৈভব অরোরার বলে। অরোরার চতুর্থ বল সীমানার বাইরে পাঠিয়ে পঞ্চম বলে অজিঙ্ক রাহানেকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন সূর্যবংশী।
দলের ৫ রানে সূর্যবংশী আউট হতেই আরও ৩ রান যোগ হতে ফিরে গেলেন কুনাল সিংহ রাঠৌর। এবার অন্যতম ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালের (২১ বলে ৩৪ রান) সঙ্গী হলেন অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। অন্য প্রান্তে যখন একে একে উইকেট পড়েছে, যশস্বী-ধ্রুব-ওয়ানিন্দু ফিরে গিয়েছেন প্যাভিলিয়নে, এঁদের মধ্যে ধ্রুব জুরেল ও ওয়ানিন্দু হসরঙ্গা শূন্য হাতে, তখনই দুরন্ত খেললেন রিয়ান, শিমরন হেটমেয়ারকে (২৩ বলে ২৯ রান) সঙ্গী করে। ৪৫ বলে ৯৫ রান করে রাজস্থানকে প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলেন রিয়ান। মাত্র ৫ রানের জন্য শতরান থেকে বঞ্চিত হলেন রিয়ান।

শিমরন হেটমেয়ারকে সঙ্গী করে শেষ চেষ্টা করলেন রিয়ান পরাগ। কিন্তু পারলেন না। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
হর্ষিত রানার বলে বৈভব অরোরাকে ক্যাচ দিয়ে রিয়ান যখন ফিরে গেলেন তখন দলের স্কোর ৭ উইকেটে ১৭৩ রান। জয় তখনও ৩৩ রান দূরে, হাতে ১৪ বল। শেষ চেষ্টা করলেন শুভম দুবে (১৪ বলে ২৫ রান)। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মাত্র ১ রানে কেকেআর-এর কাছে হেরে গেল রাজস্থান।