পঞ্জাব কিংস: (২৪৩-৫) (শ্রেয়স আয়ার ৯৭ নট আউট, প্রিয়াংশ আর্য ৪৭, শশাঙ্ক সিংহ ৪৪ নট আউট, সাই কিশোর ৩-৩০)
গুজরাত টাইটান্স: ২৩২-৫ (সাই সুদর্শন ৭৪, জোস বাটলার ৫৪, শারফেন রাদারফোর্ড ৪৬, অর্শদীপ সিংহ ২-৩৬)
অহমদাবাদ: প্রথমে ব্যাট করে কত রান করলে পরে জয় সম্পর্কে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকা যায়, এ বারের আইপিএল-এ তা আর বলা যাচ্ছে না। সে দিন যেমন লখনউ সুপার জায়ান্টসকে অবিশ্বাস্য ভাবে হারিয়ে দিল দিল্লি ক্যাপিটলস। মঙ্গলবারও প্রায় সে রকম হতে যাচ্ছিল। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না গুজরাত টাইটান্স-এর। শেষ ওভারে অর্শদীপ সিংহের বল সামলাতে পারল না তারা। সমানে সমানে পাল্লা দিয়েও শেষ পর্যন্ত ১১ রানে হার স্বীকার করতে হল তাদের।
পঞ্জাবের আড়াইশোর কাছাকাছি রান তোলার কারিগর ছিলেন শ্রেয়স আয়ার, প্রিয়াংশ আর্য এবং শশাঙ্ক সিংহ। আর সেই রানের কাছাকাছি গুজরাতের রান নিয়ে যাওয়ার মূলে ছিলেন সাই সুদর্শন, জোস বাটলার এবং শারফেন রাদারফোর্ড। মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে দূরে থাকলেন শ্রেয়স। তিনিই পেলেন ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’-এর সম্মান।
ঝড় তুললেন শ্রেয়স, প্রিয়াংশ আর শশাঙ্ক
মঙ্গলবার অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে পঞ্জাব কিংসকে ব্যাট করতে পাঠায় গুজরাত টাইটান্স। দলের ২৮ রানের মাথায় প্রভসিমরান সিংহ কাগিসো রাবাদার বলে আর্শাদ খানকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর প্রিয়াংশ আর্যের সঙ্গী হন দলের অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার। কেকেআর-এর গত বারের অধিনায়ক শ্রেয়স কিন্তু প্রমাণ করলেন, টি২০ টিমে তিনি অপরিহার্য। কোনো দল তাঁকে ছেড়ে দিলে সেই দলেরই ক্ষতি। আগাগোড়া নট আউট থাকলেন শ্রেয়স। ৯টা ছয় আর ৫টা চারের সাহায্যে ৪২ বলে করলেন ৯৭ রান। মাত্র ৩ রানের জন্য শতরান মিস করলেন।

জয়ের পরে পঞ্জাব। ছবি Punjab Kings ‘X’ থেকে নেওয়া।
মূলত প্রিয়াংশ আর্য (২৩ বলে ৪৭ রান) আর শশাঙ্ক সিংহকে নিয়ে শ্রেয়স দলের রান পৌঁছে দিলেন ২৪৩-এ। নিজের ঝুলি শূন্য রেখে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যখন ফিরে যান দলের রান তখন ১০.৪ ওভারে ১০৫। শ্রেয়সের সঙ্গী হন মার্কাস স্টয়নিস। দু’জনে দলের রান নিয়ে যান ১৬২-তে। ১৫ বলে ২০ রান করে স্টয়নিস যখন ফিরে যান তখন পঞ্জাবের হাতে ৪.৪ ওভার। এই ৪.৪ ওভারে শশাঙ্ক সিংহকে সঙ্গে নিয়ে ঝড় তুললেন শ্রেয়স। দু’জনে যোগ করেন ৮১ রান, গড়ে ওভারপ্রতি ১৮ রানের বেশি। মাত্র ১৫ বলে শশাঙ্ক করেন ৪৪ রান।
চেষ্টা করলেন সুদর্শন, বাটলার আর রাদারফোর্ড
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ভালোই শুরু করেন সাই সুদর্শন এবং দলের অধিনায়ক শুভমন গিল। ৫.৫ ওভারে ৬১ রান তোলেন তাঁরা। ১৪ বলে ৩৩ রান করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে প্রিয়াংশ আর্যকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শুভমন। সুদর্শনের সঙ্গী হন জোস বাটলার। বাটলার গোড়ায় একটু গুটিয়ে থাকলেও ঝড় তোলেন সুদর্শন। এই জুটি ১২.৩ ওভারে গুজরাতের রান নিয়ে যান ১৪৫-এ। ৪১ বলে ৭৪ রান করে অর্শদীপ সিংহের বলে শশাঙ্ককে ক্যাচ দিয়ে সুদর্শন প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে বাটলারের সঙ্গী হন শারফেন রাদারফোর্ড।
তৃতীয় উইকেটের জুটিতে বাটলার ও রাদারফোর্ড যোগ করেন ৫৪ রান, ৫.৩ ওভারে। রান ওঠার গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে যায়। ৩৩ বলে ৫৪ রান করে ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হন বাটলার। তখনও জয় ৪৫ রান দূরে, হাতে মাত্র ২ ওভার। রাদারফোর্ডের সঙ্গী হন রাহুল তেওয়াটিয়া। ১৯তম ওভারে তাঁরা যোগ করেন ১৮ রান। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৭ রান। অর্শদীপের প্রথম বলেই রান আউট হয়ে যান তেওয়াটিয়া। চতুর্থ বলে অর্শদীপ রাদারফোর্ডকে বোল্ড করে গুজরাতের জয়ের আশা ছিনিয়ে নেন। শেষ পর্যন্ত গুজরাত ইনিংস শেষ করে ২৩২ রানে। পঞ্জাবের কাছে হার স্বীকার করে ১১ রানে।