ওয়েব ডেস্ক: শুক্রবার এক মহাকাব্যিক লড়াইয়ের শেষে উইম্বলডন সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার কেভিন অ্যান্ডারসনের কাছে হেরে গিয়েছেন মার্কিন জন ইসনার। ৬ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট ধরে চলা ম্যাচটি উইম্বলডনের ইতিহাসের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ম্যাচ হিসেবে রেকর্ড বইতে ঠাঁই পেল। পাশাপাশি এটি টেনিসের ইতিহাসে তৃতীয় দীর্ঘতম ম্যাচের তকমাও অর্জন করল(৬ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ম্যাচটি হয়েছিল ডেভিস কাপে)। অ্যান্ডারসন বনাম ইসনারের শেষ সেটটাই চলে ২ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। শেষ সেটটি ইসনার হারেন ২৬-২৪ পয়েন্টে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন দুনিয়ার প্রাচীনতম টেনিস টুর্নামেন্ট উইম্বলডন সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
চলারই কথা। কারণ ১৯৭৩ সালে টেনিসে টাইব্রেক আসে। তারপর থেকে উইম্বলডনে সিঙ্গলসে প্রথম চারটি (মেয়েদের ক্ষেত্রে ২টি) সেটে প্রয়োজনে টাইব্রেক হলেও শেষ সেটে তা হওয়ার নিয়ম নেই। শুধু উইম্বলডন নয় ইউএস ওপেন ছাড়া অন্য সব গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টেই এই নিয়ম চালু। একই নিয়ম অলিম্পিক টেনিস এবং ডেভিস কাপেও (ডেভিস কাপে অবশ্য ১৯৭৩ সালের পরেও প্রায় দেড় দশক টাইব্রেক বলে কিছু ছিল না)। শেষ সেটে চালু ‘অ্যাডভান্টেজ সেট’ নিয়ম। অর্থাৎ জয়ী খেলোয়াড়ের সঙ্গে পরাজিত খেলোয়াড়ের অন্তত ২ গেমের তফাৎ থাকতেই হবে। যতক্ষণ না সেটি হচ্ছে, খেলা চলবে। অসীম সংখ্যক গেম খেলা হতে থাকবে। পঞ্চম বা শেষ সেটের আগের সেটগুলিতে কিন্তু ৬-৬ গেম হয়ে গেলেই হবে টাইব্রেক।
আরও পড়ুন: টেনিস লন রক্ষণাবেক্ষণের রোলার সারানোর খরচ তুলতে আয়োজিত হয়েছিল প্রথম উইম্বলডন
টেনিসের ইতিহাসে দীর্ঘতম (সময় এবং গেমের সংখ্যার দিক থেকে) ম্যাচটি খেলা হয় এই উইম্বলডনেই। ২০১০ সালে। ১৮ নম্বর কোর্টে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার এবং ফ্রান্সের নিকোলাস মাহুতের মধ্যে হওয়া সেই ঐতিহাসিক ম্যাচটি চলেছিল ১১ ঘণ্টা ৫ মিনিট। শুধু তাই নয়, আলো কমে যাওয়ায় দু’দিন থেমে যায় খেলা। ২২ থেকে ২৪জুন পর্যন্ত চলেছিল ম্যাচটি। শেষ পর্যন্ত ইসনার জেতেন ৬-৪, ৩-৬, ৬-৭(৭-৯), ৭-৬(৭-৩), ৭০-৬৮ সেটে।

মজা হল, এদিন যে ইসনার(বিশ্বের ১০ নম্বর) শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন, তিনি কিন্তু ইতিহাসে ঠাঁই পেয়ে গিয়েচেন ৮ বছর আগেই। সবচেয়ে দীর্ঘ ম্যাচের জয়ী হিসেবে। কিন্তু তখন তাঁর বয়স ছিল ২৫, এখন ৩৩। দীর্ঘ ম্যাচ খেলার স্ট্যামিনা যে বয়স তাঁর থেকে কেড়ে নিতে পারেনি। এদিন তাঁরই প্রমাণ দিলেন জন ইসনার।
কি? বোঝা যাচ্ছে তো? টেনিসের ইতিহাসে বহু মহান খেলোয়াড় এলেও ইসনারকে বাদ টেনিসের ইতিহাস লেখা যাবে না কোনোদিনই।