কলকাতা: ৩ আগস্ট ১৯৯৬, দিনটা ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় দিন। ৪৪ বছর পর অলিম্পিকের কোনো ব্যক্তিগত ইভেন্টে পদক পেল ভারত। অ্যাটলান্টা অলিম্পিকের লন টেনিস ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন ভারতের লিয়েন্ডার পেজ (Leader Paes)।
ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সফল এবং সেরা ক্রীড়াবিদ লিয়েন্ডার। বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর হাত ধরেই ভারতবাসী বুঝতে পারেন যে তাঁরা টেনিসকেই নিজেদের খেলা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছরে দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে আজাদি কা অমৃত মহোৎসব (Azadi Ka Amrit Mahotsav)। গত পঁচাত্তর বছরের দেশে ক্রীড়া ইতিহাসের অন্যতম সেরা মুহূর্ত কিন্তু লিয়েন্ডারের এই ব্রোঞ্জ জয়।
১৭ জুন ১৯৭৩ সালে কলকাতায় জন্ম লিয়েন্ডারের। তাঁর পরিবার পুরোপুরিই খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মা জেনিফার পেজ ছিলেন নামকরা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ১৯৮০ এশীয় বাস্কেটবল লড়াইতে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন। বাবা ভাস পেজ হকি খেলোয়াড় ব্রোঞ্জপদক জয়ী ১৯৭২ মিউনিখ অলিম্পিক দলের সদস্য।
১৯৮৫ এ লিয়েন্ডার মাদ্রাজের ব্রিটানিয়া টেনিস আকাডেমীতে যোগ দেন । ১৯৯১ জুনিয়র উইম্বেলডনে জিতে সবার নজরে আসেন তিনি। ওই বছরই পেশাদার হিসেবেআত্নপ্রকাশ করেন । পরের বছর রমেশ কৃষ্ণনের সঙ্গে জুটি বেঁধে বার্সেলোনা অলিম্পিকের ডবল্স প্রতিযোগিতায় কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছোন।
এর পরের অলিম্পিকেই ইতিহাস সৃষ্টি করেন লিয়েন্ডার। সেমিফাইনালে আন্দ্রে আগাসির কাছে হেরে গেলেও ব্রোঞ্জ মেডাল ম্যাচে ফার্নান্দ মেলিজেনিকে পরাজিত করে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন তিনি।
এর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি লিয়েন্ডারকে। তবে সিঙ্গলসের পালা দ্রুত শেষ করে ডবলসেই বেশি মনোনিবেশ করেন লিয়েন্ডার। মহেশ ভূপতির সঙ্গে জুটি বেঁধে ডবলসে দীর্ঘ সময় ধরে প্রথম স্থানটি ধরে রাখেন তিনি। ১৯৯৭ সালে রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কার পান লিয়েন্ডার। ২০০১ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি।
১৯৯২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেন লিয়েন্ডার। তিনি প্রথম ভারতীয় এবং একমাত্র টেনিস খেলোয়াড় যিনি সাতটি অলিম্পিকে অংশ নেন। ভারতের ডেভিস কাপের দলকেো নেতৃত্ব দেন লিয়েন্ডার। ডেভিস কাপে পুরুষদের ডবল্স ইভেন্টে সব চেয়ে বেশি বার ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়েন তিনি।
ডেভিস কাঁপে মোট ৪৩টি ম্যাচে জয় করেন। তিনি ওয়াশিংটন ক্যাস্তেলস দলের হয়ে ওয়ার্ল্ড টিম টেনিসে খেলেছেন এবং ২০০৯, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, এবং ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়নশিপ টিমে ছিলেন।
আরও পড়তে পারেন: প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন আরতি সাহা
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।