খবর অনলাইন: মাত্র ২৯ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় ? কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে ফের হারের পর মুষড়ে পড়া স্বাভাবিক, পেনাল্টি শুট আউটে গোল না-করতে পারা অমার্জনীয় অপরাধ বটে, তা বলে তিরিশ না হতেই দেশের হয়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত ? ফুটবল-বিশ্ব বিস্মিত লিওনেল মেসির ঘোষণায়।
দেশের হয়ে সাফল্য না-পাওয়া নিয়ে মেসির মনে হয়তো অনেক দুঃখ আছে। তা ছাড়া তাঁর হয়তো মনে হয়েছে, তাঁর জন্মভূমির মানুষজনের মধ্যে তাঁকে নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। তাঁরা মারাদোনাকে যতটা শ্রদ্ধার চোখে দেখেন, ততটা হয়তো তাঁকে দেখেন না। কারণ মারাদোনা দেশের জন্য বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ? বিশ্বকাপ তো দূরস্থান, দেশের জন্য কোপা আমেরিকার ট্রফি আনতেও ব্যর্থ। মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই তিনি বার্সিলোনাতে। শুধু জাতীয় দলের হয়ে খেলতে আসা ছাড়া দেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ সামান্যই। এই বেদনা থেকে, এই সাতপাঁচ ভেবেই হয়তো মেসি চটজলদি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
কোপার মাঠ থেকে বিশ্ব ফুটবলকে কাঁদিয়ে গেলেন মেসি। পেনাল্টিটা মিস করার পর থেকেই যেন ছটফট করছিলেন। মাঠের ভিতরে সতীর্থদের সঙ্গে দাঁড়াতে পারছিলেন না। একাই বসেছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা করলেন এক টিভি চ্যানেলে। তখন তাঁর গলা বুজে এসেছে কান্নায়।
মেসি বলেন, “জাতীয় দলে আমার খেলার দিন শেষ। যতটা পেরেছি, করেছি। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা বড়ো দুঃখের।”
বার্সিলোনার হয়ে মেসি আট বার লা লিগা এবং চার বার চ্যাম্পিয়ন লিগ শিরোপা এনে দিয়েছেন। দেশের হয়ে এক মাত্র সাফল্য ২০০৮ অলিম্পিকে সোনার পদক।
মেসি বলেছেন, “চারটে ফাইনালে চেষ্টা করলাম। এই জিনিসটাই আমি সব চেয়ে বেশি চেয়েছি। দেশের জন্য জয়। কিন্তু হল না। তাই মনে হয়, এখানেই শেষ। আমি মনে করি, এটাই সকলের পক্ষে সব চেয়ে ভালো রাস্তা। প্রথমে আমার পক্ষে, তার পর অন্যদের পক্ষে। আমার মনে হয়, বহু মানুষই এটা চান। তাঁরা সন্তুষ্ট নন। আমরাও সন্তুষ্ট নই। ফাইনালে পৌঁছলাম অথচ জিততে পারলাম না। এই খুব কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু সিদ্ধান্তটা নিতে হল।”
ও দিকে মেসির বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নেওয়ার ঢল নামতে চলেছে আর্জেন্তিনা দলে। দেশের সংবাদপত্র ‘লা নাসিওন’ জানিয়েছে, আগুয়েরো, মাসচেরানো আর হিগুয়েন আন্তর্জাতিক ফুটবলের আসর থেকে অবসর নিতে চলেছেন। আর ইএসপিএন দেপর্তেস জানিয়েছে, দি মারিয়া, বিগলিয়া, লাভেজি এবং বানেগাও একই পথ ধরতে পারেন।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।