অসাধ্য সাধন করলেন অস্ট্রেলিয়ার বছর ৪০-এর এক ব্যাক্তি। ডোনারের দেওয়া হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করার আগে অস্ট্রেলিয়ার ওই ব্যক্তি টেকসই অথচ কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের সাহায্যে ১০০ দিনের বেশি বেঁচে ছিলেন। বিশ্বে প্রথম বার টাইটেনিয়াম ধাতুতে তৈরি ওই হৃদযন্ত্র নিয়ে এত দিন কেউ বেঁচে থাকলেন বলে দাবি চিকিৎসকদের।
BiVACOR ও মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়, সিডনির সেন্ট ভিনসেণ্ট হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। কৃত্রিম হৃদযন্ত্র তৈরি করেছে BiVACOR। BiVACOR-এর দুটি ম্যানুফাকচারিং ইউনিট রয়েছে – একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং একটি অস্ট্রেলিয়ায়। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, এটি অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া প্রথম কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন আর বিশ্বের মধ্যে ষষ্ঠতম সফল প্রতিস্থাপন।
৪০ বছর বয়সি ওই রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়। ২০২৪ সালের ২২ নভেম্বর ৬ ঘণ্টা ধরে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। তার পর চলতি মার্চ মাসে ডোনারের দেওয়া হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয় ওই রোগীর দেহে। দীর্ঘ ১০৫ দিন ধরে একটানা কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের সাহায্যে বেঁচে থাকলেন ওই রোগী।
BiVACOR এর তৈরি কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রথম বার প্রতিস্থাপন করা হয় ২০২৪ সালের আমেরিকার টেক্সাসে। এর পর আরও ৪ বার কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়েছে আমেরিকায়। কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন ও ডোনারের দেওয়া মানব হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপনের মাঝে ফারাক ছিল সবচেয়ে বেশি ২৭ দিনের। যত দিন না পর্যন্ত ডোনারের বা দাতার শরীর থেকে গ্রহীতা রোগীর শরীরে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয় তত দিন পর্যন্ত সাময়িক ভাবে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রথম কৃত্রিম হৃদযন্ত্র নিয়ে কেউ ১০০ দিনের বেশি বেঁচে রইলেন।
BiVACOR-এর তৈরি কৃত্রিম হৃদযন্ত্র হল বিশ্বের প্রথম ‘Implantable rotary blood pump’। ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযুক্তির সাহায্যে কাজ করে এই বিশেষ কৃত্রিম হৃদযন্ত্র। এতে আছে একটি মিনি পাম্প ও নতুন রকমের লেফট ভেন্ট্রিকল অ্যাসিস্ট ডিভাইস। ভবিষ্যতে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র হার্টের অসুখের চিকিৎসায় বড়ো ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সিডনির সেন্ট ভিনসেণ্ট হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ক্রিস হেওয়ার্ড।