ইতালির মিলানের ইতালিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা আইআইটির একদল বিজ্ঞানী এমন এক প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন যা মুখে দিলে খেয়েও ফেলা যাবে। এই ‘এডিবল ইলেকট্রনিকস’ তৈরি করতে আইআইটির বিজ্ঞানীরা চিরপরিচিত টুথপেস্ট ব্যবহার করেছেন। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেমন আছে তা দেখতে টুথপেস্টভিত্তিক ট্রানজিস্টর তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, ন্যানো ডিভাইস শরীরের ভেতরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেমন আছে তা জানাবে। তারপর আপনাআপনি ভেঙে যাবে।
ইতালিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকদলের প্রধান সদস্য এলেনা ফেলত্রি জানান, প্রতিদিন আমরা প্রত্যেকে যত পরিমাণে কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিন খাই তাতে আমরা এমন ১০ হাজার এডিবল ট্রানজিস্টর তৈরি করতে পারি। দাঁত সাদা করতে সাধারণ টুথপেস্টে ক্রিস্টালযুক্ত যে নীল রঙের পিগমেন্টের মতো হোয়াইটেনিং এজেন্ট ব্যবহার হয় তা আসলে এই কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিন। কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিনের ক্রিস্টাল অপটিক্যাল ফাইবার হিসাবে কাজ করে, সূর্যের আলো পড়লে দাঁত সাদা দেখায়। দিন গড়ালে দাঁত মাজার পর কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিন স্যালিভার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, গড়ে একজন ব্যক্তি না জেনেই ১ মিলিগ্রাম কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিন খেয়ে ফেলেন প্রতিবার দাঁত মাজার সময়।
অভিনব রাসায়নিক গঠনের কারণে কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিনকে সেমিকন্ডাক্টর হিসাবে ব্যবহার করা যায়। যে কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের প্রধান অংশ হল সেমিকন্ডাক্টর। খাওয়ার যোগ্য পিগমেন্ট আমাদের শরীরের ভেতরে ন্যানো ডিভাইসে বিদ্যুৎ সঞ্চার করতে সক্ষম।
বিজ্ঞানীরা স্বল্প মাত্রায় কপার পিএইচথ্যালোসায়ানিন ব্যবহার করে এডিবল সার্কিট তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে খুব কম ভোল্টেজে চলা ট্রানজিস্টর তৈরি করেছেন তাঁরা। ইথাইলসেলুলোজ সাবস্ট্রেট নামক পদার্থ ব্যবহার করা হয় সার্কিটের স্টেবল বেস তৈরি করতে। এই পদার্থ ওষুধ ও খাবার প্রস্তুতকারক সংস্থায় ব্যবহার করা হয়। সার্কিটের গায়ে খাওয়ার যোগ্য সোনা ইঙ্কজেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রিন্ট করা হয়। কাঁকড়ার খোলস থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক পলিমার চিটোসান ব্যবহার করা হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে। চিটোসান পদার্থ ইলেকট্রোলাইটিক জেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। খুব কম মাত্রার (১ ভোল্টেজের কম) সরবরাহ করা হয়।
আরও পড়ুন