দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য ভারতীয় রেল ভিস্টাডোম কোচের ট্রেন চালু করেছে। এই কোচের বৈশিষ্ট্য হল আশেপাশের সব কিছুর ৩৬০ ডিগ্রি দর্শন পাওয়া যায়। ট্রেনযাত্রীদের ট্রেনভ্রমণকে স্মরণীয় করে রাখতে এই ব্যবস্থা। এতে যেমন এক দিকে পর্যটনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে, তেমনই অন্য দিকে যাত্রীদের ভ্রমণ আরামদায়ক হচ্ছে।
দেখে দেখে নেওয়া যাক ভিস্টাডোম কোচে আপনি কোথায় ভ্রমণ করতে পারেন –
আরাকু ভ্যালি

বিশাখাপত্তনম থেকে আরাকু ভ্যালির ট্রেনপথ ক্রমান্বয়ে উঠে গিয়েছে পাহাড়ের মধ্য দিয়ে। এক সময় পৌঁছে যাবেন আরাকু ভ্যালি। পাহাড় দূরে দূরে সরে যাবে। আপনি বিস্তীর্ণ সমতল উপত্যকায় পৌঁছে যাবেন। এখানে প্রকৃতি তার সবটুকু সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে। ভিস্টাডোম কোচে আরাকু চলুন। যেন মনে হবে হাত বাড়ালেই প্রকৃতির ছোঁয়া। বছরের সব সময়েই যাওয়া যায় এই পথে। তবে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে গেলে পাবেন নানা ফুলের সমারোহ।
কালকা থেকে শিমলা
হিমাচলের হিলস্টেশন শিমলার পরিচয় নতুন করে দেওয়ার কিছু নেই। সমতলের কালকা থেকে টয়ট্রেনে শিমলা যাওয়া একটা অভিজ্ঞতা। এর ওপর সেটা যদি করেন হিম দর্শন এক্সপ্রেসে, তা হলে তো কথাই নেই। পুরোটাই নতুন ভিস্টাডোম কোচের ট্রেন এই বিশেষ হিম দর্শন এক্সপ্রেস। হাজারের বেশি যাত্রী বসতে পারেন এই ট্রেনে। ঘূর্ণায়মান চেয়ারে বসে হিমালয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। আর শীতকালে যদি ভ্রমণ করেন তা হলে ট্রেনে বসেই কাচের জানলায় তুষারপাত উপভোগ করবেন।
ডুয়ার্সের বুক চিরে
উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের প্রকৃতির তুলনা মেলা ভার। এই ডুয়ার্স এখনও অনেকের কাছেই অনঘ্রাতা। ডুয়ার্সের সৌন্দর্যের কিছুটা আঁচ পেতে ভিস্টাডোম কোচে চলুন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার। ট্রেনপথ ছুটে চলেছে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে, চা-বাগানের বুক চিরে, অসংখ্য নাম-না-জানা নদীর সঙ্গী হয়ে, কাছে-দূরে পাহাড়কে সাক্ষী রেখে। এমন পথে ভিস্টাডোম কোচে ভ্রমণ না-করাটাই অপরাধ বলে গণ্য হবে।

নাহারলাগুন থেকে তিনসুকিয়া
আয়েস করে, আরামদায়ক সিটে হেলান দিয়ে ভিস্টাডোম এক্সপ্রেসে চলুন অরুণাচল প্রদেশের নাহারলাগুন থেকে অসমের তিনসুকিয়া। ট্রেনপথ গিয়েছে অসমের চা-বাগানের মধ্য দিয়ে। উত্তরপূর্ব ভারতের চিরসবুজ প্রকৃতি উপভোগ করুন ভিস্টাডোম কোচে বসে।
পশ্চিমঘাট পাহাড়ের মধ্য দিয়ে পুনে
ভিস্টাডোম কোচে পুনে? শুনলেই অবাক হয়ে যাবেন। দু’টি সদাব্যস্ত শহর মুম্বই আর পুনে। মনে হতেই পারে এই পথে ভিস্টাডোম কোচে ভ্রমণ করে কী মিলবে? উপভোগ করবেন পশ্চিমঘাটের সৌন্দর্য। ট্রেনে যেতে যেতে দেখে নিন সংরির হিল, মাথেরন হিল, উলহাস নদী, উলহাস ভ্যালি, খান্ডালা আর লোনাভালা। ট্রেনে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং দরজা আর বিশেষ অবজারভেশন ডেক।
গোয়ার পথে
গোয়া যাওয়ার জন্য বেশির ভাগ মানুষই বেছে নেন সড়কপথ। তা না হলে বিমানপথ, যেন গন্তব্যটাই সব কিছু। একটু অন্য রকম করে ভাবুন না! পশ্চিমঘাট পাহাড় আর কোঙ্কন উপকূলের প্রকৃতি উপভোগ করার জন্য চলুন ট্রেনপথে। দাদার থেকে মাড়গাঁওগামী জনশতাব্দী এক্সপ্রেসে রয়েছে ভিস্টাডোম কোচ। তাতে চড়ে পড়ুন। কোঙ্কন-প্রকৃতির আসল রূপ খুলে যাবে চোখের সামনে। এই ভ্রমণ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
যশবন্তপুর থেকে কর্নাটক উপকূলে

ভিস্টাডোম কোচে পশ্চিমঘাট দেখার নানা ট্রেনপথ। যেতে পারেন পুনে কিংবা মাড়গাঁও। আর মুম্বইকে যদি আপনার যাত্রাপথের সুচনা-স্টেশন না করতে চান, তা হলে চলুন বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরুর যশবন্তপুর থেকে চলুন আরব সাগরের কোলে মেঙ্গালুরু শহরে। এ পথেও দেখা মিলবে পশ্চিমঘাট। এই পথে ভিস্টাডোম কোচে ভ্রমণ করলে প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্যের সাক্ষী থাকবেন।
আরও পড়তে পারেন
চারধাম যাওয়ার তিনটি হারিয়ে যাওয়া হাঁটাপথ খুঁজে পেল বিশেষজ্ঞদল
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।