কুনো ন্যাশনাল পার্কে আনা আফ্রিকান চিতাগুলি শীঘ্রই জঙ্গলে মুক্তি পাবে। প্রায় এক বছর ধরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ও পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রদেশের এই পার্কের এনক্লোজারে রাখা হয়েছিল এই চিতাগুলিকে। সম্প্রতি, কেন্দ্রের চিতা প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বর্ষা শেষ হলে প্রাপ্তবয়স্ক চিতাগুলিকে ধাপে ধাপে জঙ্গলে মুক্তি দেওয়া হবে। শাবক এবং তাদের মায়েরা ডিসেম্বরের পর মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়েছে।
এনটিসিএ (ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি) এবং স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা কুনোতে ফিল্ড ভিজিট করেছেন এবং চিতাগুলির মুক্তির সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সরকারী সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কুনোতে থাকা ২৫টি চিতা—১৩টি প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২টি শাবক—ভাল অবস্থায় আছে। প্রথমে নামিবিয়া থেকে আনা ৮টি চিতার ব্যাচটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে ছাড়া হয়েছিল এবং পরে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা আনা হয়েছিল।
প্রথমে কিছু চিতাকে জঙ্গলে মুক্তি দেওয়া হলেও, গত বছরের আগস্ট মাসে তিনটি চিতার মৃত্যু হওয়ায় তাদের পুনরায় এনক্লোজারে ফিরিয়ে আনা হয়। মারা যাওয়া চিতাগুলির মধ্যে একটি নামিবিয়ার মহিলা চিতা এবং দুটি দক্ষিণ আফ্রিকান পুরুষ চিতা ছিল। তাদের মৃত্যুর কারণ ছিল সেপটিসেমিয়া, যা চিতাগুলির ঘায়ে ক্ষত সৃষ্টির ফলে হয়েছিল। এই ক্ষতগুলিতে মাগট পড়ে গিয়ে রক্তে সংক্রমণ হয়েছিল।
চিতা প্রকল্পের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, চিতাগুলির শীতের এবং উচ্চ আর্দ্রতার কারণে তারা চুলকানি অনুভব করছিল। ফলে তারা তাদের গলা গাছের গুঁড়িতে ঘষে ফেলছিল, যার ফলে তাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল এবং মাগটের সংক্রমণ হচ্ছিল। এই পরিস্থিতির কারণে তিনটি চিতার মৃত্যু হয়। ফলে, ভবিষ্যতে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলি থেকে চিতা সংগ্রহ করার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে বায়োরিদমিক জটিলতা এড়ানো যায়।
বর্তমানে কুনোতে একমাত্র একটি চিতা, নাম পবন, মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে তাকে খুঁজে বের করা বেশ কঠিন বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চিতাগুলিকে এনক্লোজারে রাখা তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ চিতারা দীর্ঘ পথ চলতে পছন্দ করে এবং এনক্লোজারে থাকা তাদের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে।