সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার রাজস্থানের বেওয়ার জেলায় দেবমালি গ্রামকে ভারতের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’ বলে সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্বর এই গ্রামের প্রশাসনের হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিশেষ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।
২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। ভারতের গ্রামগুলিতে পর্যটনকে তুলে ধরার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই দিবস উপলক্ষ্যে ২০২৩ সাল থেকে ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর সম্মান দেওয়া শুরু করে। ৮টি বিভাগে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। বিভাগগুলি হল, অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন, কৃষি পর্যটন, সম্প্রদায়ভিত্তিক পর্যটন, হস্তশিল্প, ঐতিহ্য, দায়িত্বশীল পর্যটন, আধ্যাত্মিক ও সুস্থতা পর্যটন এবং প্রাণবন্ত পর্যটন।
২০২৪-এ এই সম্মাননা পাওয়ার জন্য দেশের ৩০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ৯৯১টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৮টি বিভাগে ৩৬টি গ্রামকে ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রদায়ভিত্তিক পর্যটন বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছে ৫টি গ্রাম। তাদের মধ্যে অন্যতম হল রাজস্থানে আরাবল্লি পর্বতমালার কোলে দেওমালি গ্রাম। বাকি ৪টি গ্রাম হল ছত্তীশগঢ়ের চিত্রকোট, লক্ষদ্বীপের মিনিকয় দ্বীপ, মিজোরামের সিয়ালসুক, এবং ত্রিপুরার আলপনা গ্রাম।
রাজস্থানের অজমের শহর থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরে দেশের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’ দেবমালিতে গেলে একটাও পাকাবাড়ি দেখা যায় না। মাটির কাঁচাবাড়ি সুন্দর করে সাজানোগোছানো। কোনো বাড়িতে তালা লাগানো হয় না। কারণ বহু বছর ধরে এই গ্রামে চুরি, ডাকাতি হয় না। গ্রামের কেউ আমিষ খাবার খান না। মদ্যপান করেন না। এই গ্রামে পোড়ে না কাঠ, জ্বালানি হিসাবে কেরোসিন ব্যবহার করা হয় না।
আরাবল্লী পর্বতমালার কোলে ৩ হাজার বিঘা জমির ওপর সাজানোগোছানো গ্রাম দেওমালি। পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতার জন্য এই গ্রামের খ্যাতি। গ্রামের প্রধান আকর্ষণ পাহাড়ের ওপরে ভগবান দেবনারায়ণের মন্দির। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ এই মন্দির দর্শন করেন। কথিত আছে, এক সময় গ্রামে ভগবান দেবনারায়ণ এসে আশ্রয় চান। গ্রামবাসীরা তাঁর আশ্রয়ের জায়গা দিয়ে মন্দির গড়ে দেন এবং নিজেদের জন্য পাকা বাড়ি না গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। সরকারি ভবন আর দেবনারায়ণ মন্দির ছাড়া গ্রামে কোনো পাকাবাড়ি নেই।
আরও পড়ুন
এশিয়ার সেরা ফোটোজেনিক পর্যটনস্থলগুলির মধ্যে জায়গা করে নিল তাজমহল ও হাম্পি