জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর দিঘায় পর্যটকের ভিড় যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে হোটেল ভাড়া, টোটো-অটোচালকদের অতিরিক্ত দাবি। রাতারাতি ভাড়া কয়েকগুণ বাড়িয়ে পর্যটকদের জাঁকিয়ে ধরার অভিযোগে সরগরম পর্যটন নগরী। এর জেরে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কড়া নির্দেশ দিয়েছেন হোটেল ভাড়ার তালিকা প্রতিটি হোটেলে ডিসপ্লে বোর্ডে ঝোলানো বাধ্যতামূলক করতে। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা না মানলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সক্রিয় প্রশাসন
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী জানান, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্য সরকারের কড়া মনোভাব স্পষ্ট করেছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্রুত চালু করা হবে একটি ফোন নম্বর, যাতে পর্যটকরা অভিযোগ জানাতে পারেন।
এক ধাক্কায় বাড়তি ভাড়া, ক্ষোভ পর্যটকদের
ডিএসডিএ অফিস লাগোয়া একটি হোটেলের কর্ণধার সুভাষ শীট স্বীকার করেছেন, “আগে এসি রুম ১৩০০-১৪০০ টাকা ছিল, এখন সেই রুমই ১৭০০-১৮০০ টাকা হচ্ছে। রথযাত্রার সময় আরও চড়া দাম হাঁকছি, তবু পর্যটক আসছেন।”
অন্যদিকে, নিউ দীঘা-ওল্ড দীঘা টোটো ভাড়া ২০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অনেক পর্যটক বলছেন, দীঘায় ঘুরতে এসে জোগাড় করে বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে, অথচ পরিষেবা সেভাবে উন্নত হয়নি।
হোটেল বুকিং করেও রুম না পাওয়ার অভিযোগ
অগ্রিম বুকিং করেও অনেক পর্যটক রুম পাচ্ছেন না। বেশি ভাড়ায় রুম অন্য পর্যটকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন বহু ভুক্তভোগী। ফলে দীঘার পর্যটন ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লাগছে।
হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের আশ্বাস
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ২২ জুনের মধ্যে প্রতিটি হোটেলকে ভাড়ার তালিকা ডিসপ্লে করতে হবে। সংগঠনের অফিসে সেই তালিকা জমা দিতেও হবে। কেউ আইনভঙ্গ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে অ্যাসোসিয়েশন।
দীঘায় হোটেল ও পরিবহণে অতিরিক্ত ভাড়ার জেরে পর্যটকদের ভোগান্তি রুখতেই রাজ্য সরকার এবার কড়া অবস্থান নিচ্ছে। হোটেল মালিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, নিয়ম না মানলে আইনি পদক্ষেপ হবে। একই সঙ্গে প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের সহায়তার জন্য হেল্পলাইন চালুর পরিকল্পনাও চলেছে।