খবর অনলাইন ডেস্ক: গোয়া বললেই আমরা বুঝি সমুদ্রসৈকত। আরব সাগরের তীরে গোয়া। সুতরাং সেখানে সমুদ্রসৈকত তো থাকবেই। কিন্তু সমুদ্রসৈকতের বাইরেও আরও অসংখ্য দর্শনীয় স্থান আছে গোয়ায়। সেই সব জায়গার সঙ্গে জড়িয়ে আছে গোয়ার হেরিটেজ, গোয়ার জীববৈচিত্র্য। সেই অচেনা গোয়াকে চেনাতেই এবার উদ্যোগী হয়েছে গোয়া পর্যটন। তারা হাতে নিয়েছে ‘গোয়া বেয়ন্ড বিচেস’ উদ্যোগ।
গোয়া পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) দীপক নরবেকর বলেন, গোয়ার সৈকতগুলোতে পর্যটকদের প্রচণ্ড ভিড় হয়। পর্যটকদের সমুদ্রসৈকত থেকে সরিয়ে এনে রাজ্যের হেরিটেজস্থল এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সদ্যসমাপ্ত কলকাতা টিটিএফ-এ (ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার) উপস্থিত ছিল গোয়া পর্যটন। সেখানেই দীপকবাবু সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, “‘গোয়া বেয়ন্ড বিচেস’, এই ধারণাটা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে পর্যটকদের মধ্যে। এখন তাঁরা ক্রমশই সৈকত ছাড়াও গোয়ার ভিতরের দিকের জায়গাগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।” তিনি বলেন, গোয়ার ভিতরে কানাকোনা, বিচোলিম, সত্তারির মতো জায়গাগুলো ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বামনবুড়ো জলপ্রপাত, সাউথ গোয়া। ছবি: শ্রয়ণ সেন।
দীপকবাবু জানান, রাজ্য সরকার এখন হোম স্টে নীতিকে উৎসাহিত করছেন। এর ফলে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর গোয়ার গ্রামগুলির বাসিন্দারা তাঁদের বাড়িতে পর্যটকদের রেখে গোয়ার ঐতিহ্যের স্বাদ দিতে পারেন।
“পর্যটকরা হোম স্টে-তে থেকে গোয়ার ঐতিহ্যশালী রান্নার স্বাদ নিতে পারেন, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারেন”, বলেন দীপক নরবেকর। যাঁরা হোম স্টে করছেন গোয়া সরকার তাঁদের ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছেন পর্যটকদের জন্য আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য।
দীপকবাবু জানান, আরব সাগর বরাবর দেশের পশ্চিমের এই রাজ্যে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলিতে পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে। তাঁরা জঙ্গল সাফারিও করছেন। গোয়ার জনপ্রিয় অভয়ারণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কোটিগাও, মহাদেই, নেত্রবলি এবং সালিম আলি পাখিরালয়।
গোয়া-কর্নাটক সীমানায় কোটিগাওয়ে পর্যটকরা দেখতে পাবেন উড়ন্ত কাঠবেড়ালি, ইন্ডিয়ান প্যাঙ্গোলিন, মাউস ডিয়ার, চার শিংওয়ালা কৃষ্ণসারমৃগ ইত্যাদি প্রাণী। পশ্চিমঘাটের মহাদেই বিখ্যাত তার জীববৈচিত্র্যের জন্য। এখানে দেখতে পাওয়া যায় ইন্ডিয়ান গাউর, বার্কিং ডিয়ার, সম্বর হরিণ, এশিয়ান পাম সিভেট, স্মল ইন্ডিয়ান সিভেট, বন্য বরাহ ইত্যাদি। ভাগ্য ভালো থাকলে ব্ল্যাক প্যান্থার, স্লথ বিয়ার, চিতাবাঘ এবং বাঘও দেখা যেতে পারে।