দিঘা: অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হল দিঘায়। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সূচনা হওয়া এই নতুন তীর্থস্থানে ভক্তদের ঢল নামতে শুরু করেছে। মন্দিরটি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের হুবহু অনুকরণে নির্মিত হয়েছে, আর এই মন্দিরকে ঘিরেই পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে দিঘায়, এমনই আশা হোটেল মালিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
হোটেল কর্মী নন্দন মাইতির কথায়, “বৃহস্পতিবার থেকেই দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে চাইছেন।” পর্যটন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই মন্দিরকে রাজ্যের ধর্মীয় পর্যটন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্যও একে আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রথযাত্রাকেও পর্যটন উৎসবে রূপ দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।
বর্তমানে দিঘায় ভ্রমণে আসা পর্যটকরাও এই নতুন মন্দির ঘিরে উচ্ছ্বসিত। হুগলির রিষড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী পলাশ মিত্র বলেন, “পুরী যাওয়া সবসময় সহজ হয় না, ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না। কিন্তু দিঘায় রাস্তায় করেই সহজে আসা যায়। তাই এখানেই জগন্নাথদেবের দর্শন পেয়ে আনন্দে ভরে উঠেছে মন।”
উল্লেখ্য, দেশের আরও কিছু শহর—হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, অসমেও পুরী মন্দিরের অনুকরণে নির্মিত হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। দিঘার নতুন মন্দিরে পুরী থেকে এসেছেন প্রধান পুরোহিত রাজেশ দৈতাপতি, যিনি উদ্বোধনের দিন দেবতার মহাস্নান ও প্রথাগত আচার সম্পন্ন করেন।
নবদ্বীপ থেকে আসা ভক্ত তপন দাস বলেন, “গত দু’দিন ধরে রাস্তায় অপেক্ষা করছি এক ঝলক জগন্নাথদেবকে দেখার জন্য। আমাদের গ্রাম থেকে আরও অনেকে আসবেন।”
একইসঙ্গে, স্থানীয় ই-রিকশাচালক টুটু দাস জানান, “গত দুইদিন ধরে পুলিশের কিছু বিধিনিষেধ থাকলেও যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। পাশের জেলা থেকেও বহু মানুষ মন্দির দেখতে আসছেন।”

মন্দির উদ্বোধনের দিন দেবতাকে নিবেদন করা হয় ৫৬ ভোগ। কী কী ছিল সেই ভোগে?
৫৬ ভোগের কিছু উপকরণ একনজরে:
ঘি ভাত, দুধভাত, দই, পান্তা ভাত, নারকেলের দুধে ভাত, শুকনো খিচুড়ি, করলা ভাজা, শাক ভাজা, লাবড়া, বেসর, নিমকি, আদার চাটনি, নারকেল নাড়ু, সুজি, বোঁদে, পুলি পিঠে, পদ্ম পিঠে, রাইস কেক, বড় কেক, মেন্ধা মুন্ডিয়া, মনোহর মিষ্টি, মিষ্টি লুচি, খাস্তা পুরি, কানজি, দলমা, মুড়ি, মিষ্টি, খোয়া ক্ষীর, কেক ইত্যাদি।
পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্র দিঘা এবার তীর্থযাত্রারও নতুন ঠিকানা হয়ে উঠছে, এমনটাই মত পর্যবেক্ষকদের।