ঝাড়গ্রাম জেলার অন্যতম আকর্ষণ জুলজিক্যাল পার্কে পর্যটকদের জন্য বড়সড় সুবিধা চালু হল। এতদিন পর্যন্ত কাউন্টারে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হত পর্যটকদের। এবার থেকে অনলাইনেও টিকিট কাটা যাবে। এই পদক্ষেপের ফলে বাইরে থেকে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা উপকৃত হবেন বলে মনে করছে বনদফতর ও পর্যটনমহল।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা জানান, “ঝাড়গ্রামের জুলজিক্যাল পার্ক পর্যটকদের কাছে দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। আগের মতো কাউন্টারে যেমন টিকিট মিলবে, পাশাপাশি অনলাইনেও সহজেই টিকিট কাটতে পারবেন পর্যটকরা।” পশ্চিমবঙ্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেই এই আধুনিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
শহরের ধবনী বিটে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত এই পার্কটি একসময় ‘ডিয়ার পার্ক’ নামে পরিচিত ছিল। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর পার্কটির ব্যাপক সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়। আনা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি, তৈরি হয়েছে কৃত্রিম প্রজননের ব্যবস্থা, অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধাও চালু হয়েছে।
২০২৩ সালে পার্কের ভিতর পর্যটকদের জন্য ‘সেলফি জোন’ এবং জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হস্তশিল্প বিক্রির জন্য ‘সৃষ্টিশ্রী বিপণন কেন্দ্র’ চালু হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত বসার জায়গা ও শৌচাগারের ব্যবস্থাও।
বর্তমানে এই পার্কে দেখা মিলছে চিতল হরিণ, সম্বর হরিণ, স্বর্ণমৃগ, ভালুক, হায়না, নেকড়ে, চিতাবাঘ, নানা প্রজাতির পাখি, এমু, কচ্ছপ, গোসাপ, বনমুরগি, সাপ, গন্ধগোকুল, বাঁদর, হনুমান ও ময়ূরের মতো বহু প্রাণীর। সম্প্রতি ব্রাজিল ও আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির টিয়া, যা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বছরে প্রায় দু’লক্ষ মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। ভিড়ের সময় টিকিটের লাইন খুবই দীর্ঘ হয়। অনলাইন টিকিট চালু হওয়ায় পর্যটকদের আর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হবে না।”
বনবিভাগের প্রাক্তন কর্তা সমীর মজুমদার জানান, “একসময় পার্কটি ছোট ছিল। এখন রাজ্যের অন্যতম চিড়িয়াখানায় পরিণত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে আধুনিকীকরণের পথে হাঁটছে পার্ক। অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা সেই আধুনিকতারই আরেক ধাপ।”
জানা গিয়েছে, পর্যটকরা এখন অনলাইন টিকিট বুক করে নির্ধারিত QR কোড স্ক্যান করে পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন। পাশাপাশি কাউন্টার থেকেও টিকিট নেওয়ার সুযোগ থাকছে। সব মিলিয়ে ঝাড়গ্রামের পর্যটন মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল দ্যুতি যোগ করল এই জুলজিক্যাল পার্ক।