নতুন খ্রিস্টাব্দের পয়লা মাস জানুয়ারিতেই উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদে বসবে পূর্ণকুম্ভ মেলা। প্রয়াগরাজের জল পুলিশ আন্ডারওয়াটার ড্রোন পরিষেবা চালু করেছে। মেলা চলাকালীন কেউ ডুবে গেলে বা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটলে পুণ্যার্থীদের প্রাণে বাঁচাতে ব্যবহার করা হবে আন্ডারওয়াটার ড্রোন।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের আইজি রাজীব এন মিশ্র জানান, “এই প্রথম বার আন্ডারওয়াটার ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। উন্নত মানের পরিষেবা দেওয়ার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। জলের অন্তত ১০০ মিটার গভীরেও খুঁজে দেবে আন্ডারওয়াটার ড্রোন। আন্ডারওয়াটার ড্রোনে অত্যাধুনিক এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। এআই প্রযুক্তি ডুবুরিদের সাহায্য করবে।”
পরিকাঠামোর উন্নতি
পূর্ণকুম্ভ মেলা উপলক্ষে প্রশাসনের তরফে মুখপাত্র বিবেক চতুর্বেদী জানান, ৩৫-৪০ কোটি মানুষের জনসমাগম মেলায় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্য ঢেলে সাজা হচ্ছে পরিকাঠামো। সড়ক, পানীয় জলের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও থাকার জায়গা নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেড় লাখ শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। ৬৮ হাজার এলইডি বিদ্যুৎস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি কিচেন গড়ে তোলা হয়েছে যা একসঙ্গে ৫০ হাজার মানুষের খাবার জোগাবে। প্রতি ১২ বছর অন্তর প্রয়াগরাজে পূর্ণকুম্ভ মেলা বসে। ২০১৯ সালে প্রয়াগরাজে বসেছিল অর্ধকুম্ভ মেলা।
বিষয় শিশুদের সুরক্ষা
অন্য দিকে, পূর্ণকুম্ভ মেলার সময় মেলায় আগত কোনো শিশু যদি হারিয়ে যায় তার জন্য ভারতীয় রেল স্টেশনে চাইল্ড হেল্প ডেস্ক তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাইল্ড হেল্প ডেস্কের পাশাপাশি মেলায় আগত শিশুদের সুরক্ষার কথা ভেবে নির্দিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদেরও নিয়োগ করা হবে। শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এমন কর্মী ও আধিকারিকদেরই নিয়োগ করা হবে যাঁরা শিশুদের সঙ্গে ভালো ভাবে মিশতে পারবেন, কথা বলবেন। ভরসা জোগাবেন। শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট প্রোটোকল থাকবে। জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের পরামর্শ মেনে রেল মেলায় হারিয়ে যাওয়া শিশুদের জন্য প্রয়াগরাজে নোডাল অফিসার নিয়োগ করবে। প্রয়াগরাজ স্টেশনে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দফতর ২৪ ঘণ্টার জন্য চাইল্ড হেল্প লাইন চালু করেছে।
বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থা
পূর্ণকুম্ভ মেলায় আগত ১ লাখের বেশি যাত্রীদের জন্য লাক্সারি থাকার ব্যবস্থা করছে রেল। খরচ পড়বে দৈনিক ১৮-২০ হাজার টাকা করে। ত্রিবেণি সঙ্গমের কাছে পূর্ণকুম্ভ গ্রামে নৈনীর সেক্টর ২৫-এ এই টেন্ট সিটি গড়ে উঠছে। সঙ্গম থেকে সাড়ে ৩ কিমি দূরে এই টেন্ট সিটিতে মিলবে সমস্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা। অতিথিদের জন্য থাকবে ব্যক্তিগত শৌচালয়, ঠান্ডা ও গরম জল, এয়ার ব্লোয়ার, বিছানার চাদর, বালিশ, ঘরে বসে খাওয়ার বিশেষ সুবিধা। অতিথিদের জন্য থাকবে ব্যক্তিগত বিশেষ বসার জায়গা, টিভি। টেন্ট সিটিতে মিলবে ফার্স্ট এইডের সুবিধা। নিরন্তর সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে।
পূর্ণকুম্ভ মেলা উপলক্ষে ৩ হাজারের বেশি ট্রেন চালাবে রেল।