রাজস্থান ১৪৯-৯ (লুইস ৫৮, যশস্বী ৩১, হর্শল পটেল ৩-৩৪)
আরসিবি ১৫৩-৩ (ম্যাক্সওয়েল ৫০ অপরাজিত, ভরত ৪৪, মুস্তাফিজুর ২-২০)
দুবাই: ফের একবার জ্বলে উঠল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট। রবিবারের পর ফের পঞ্চাশ করে ফেললেন তিনি। আর পর পর দুটো ম্যাচ জিতে প্লে অফের আরও কাছাকাছি চলে গেল বেঙ্গালুরু।
মঙ্গলবার রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ওপেন করতে নামেন যশস্বী জসওয়াল ও এভিন লুইস। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে নতুন বলে বোলিং শুরু করেন অভিষেককারী জর্জ গার্টন। প্রথম ওভারে বেশ চাপা বোলিং করেন গার্টন। ৩ রানের বেশি খরচ করেননি তিনি।
রাজস্থান তৃতীয় ওভার থেকে ইনিংসের গতি বাড়াতে শুরু করে। সেই ওভারে বল করতে আসেন গেল ম্যাক্সওয়েল। রাজস্থানের ওপেনাররা ওই ওভার থেকে ১৩ রান তোলে। তবে গার্টন নিজের দ্বিতীয় ওভারে পুরোপুরি ঝুলিয়ে দেন। ওই ওভারে ১৮ রান তোলে রাজস্থানের ওপেনাররা।
পঞ্চম ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে দলগত ৫০ রান টপকে যায় রাজস্থান। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে রাজস্থান বিনা উইকেটে ৫৬ উঠে যায়। ক্রমে ম্যাচে জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেন লুইস এবং যশস্বী। তবে এর পরেই যশস্বীকে ফিরিয়ে রাজস্থানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান।
যশস্বী আউট হওয়ার ঠিক পরেই অর্ধশতরানের গণ্ডি পেরিয়ে যান লুইন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩১ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ রান পেরিয়ে যান তিনি। রাজস্থানের রানের গতি তখন ব্যাপক। দশ ওভারে পৌঁছে একশো রানের কাছাকাছি চলে যায় তারা।
তবে যে গার্টনের এক ওভারে ১৮ রান তুলেছিলেন লুইস, সেই গার্টনের বলেরই শিকার হন তিনি। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩৭ বলে ৫৮ রান করে ক্রিজ ছাড়েন ক্যারিবিয়ান তারকা। রাজস্থান দলগত ১০০ রানের মাথায় ২ উইকেট হারায়।
এর পর থেকেই থমকে যায় রাজস্থানের ইনিংস। একে একে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান মহিপাল লোমরোর, সঞ্জু স্যামসনরা। বাংলার শাহবাজ আহমেদের বলের শিকার হন স্যামসন। স্যামসনকে ফেরানোর পর একই ওভারের শেষ বলে রাহুল তেওয়াটিয়ার উইকেট তুলে নেন শাহবাজ আহমেদ।
১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লিভিংস্টোনকে ফেরালেন যুজবেন্দ্র। ৯ বলে ৬ রান করে ডি’ভিলিয়র্সের হাতে ধরা পড়েন লিয়াম। রাজস্থান ১২৭ রানে ৬ উইকেট হারায়। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিস মরিস। চাহাল ৪ ওভারের বোলিং কোটা শেষ করেন ১৮ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়ে। ১৭ ওভার শেষে রাজস্থান ৬ উইকেট হারিয়ে ১২৯-এ পৌঁছোয়।
এর পর, কোনো রকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১৪৯ পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয় রাজস্থান।
বেঙ্গালুরুর জবাব
রান তাড়ার শুরুটা বেশ ভালোই করে বেঙ্গালুরু। প্রথম ওভারেই বিরাট কোহলি এবং দেবদত্ত পাড়িক্কালের জুটি ১২ রান তোলে। দুরন্ত ভাবে এগোতে থাকে আরসিবি। রানরেট প্রায় ৯ থেকে ১০-এর মধ্যে রাখছিলেন দুই ওপেনার।
ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে পাডিক্কালকে বোল্ড করলেন মুস্তাফিজুর। ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৭ বলে ২২ রান করে ক্রিজ ছাড়েন দেবদূত। ব্যাঙ্গালোর ৪৮ রানে ১ উইকেট হারায়। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন কেএস ভরত। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে আরসিবি ১ উইকেটের বিনিময়ে ৫৪ রান তোলে।
সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে দুর্ভাগ্যজনক রান-আউট হয়ে ক্রিজ ছাড়েন অধিনায়ক কোহলি। ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২০ বলে ২৫ রান করে আউট হন তিনি। ৬০-এ পৌঁছোনোর আগেই দুই উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। তবে এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় আরসিবি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং কেএস ভরত মিলে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেন।
১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে ক্রিস মরিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের দলগত ১০০ রানের গণ্ডি পার করিয়ে দেন। ততক্ষণ ম্যাচের রাশ পুরোপুরি আরসিবির হাতেই এসে গিয়েছে। চলতি টুর্নামেন্টে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি আরও আগ্রাসী হতে শুরু করেন।
১৬তম ওভারের শেষ বলে কেএস ভরতকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর। ৩টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে ৪৪ রান করে মহিপালের হাতে ধরা পড়ান ভরত। আরসিবি ১২৭ রানে ৩ উইকেট হারায়। এর পর আরও বেশি জ্বলে ওঠেন ম্যাক্সওয়েল।
রবিবার, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দুরন্ত অর্ধশতরান করা ম্যাক্সওয়েল ফের একবার পঞ্চাশ পেরিয়ে যান। আর আরসিবিও দু’ওভারের বেশি সময় হাতে রেখে জয়ে পৌঁছে যায়।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।