খবর অনলাইন ডেস্ক: ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসতে চলেছে কাতারে। ২০ নভেম্বর খেলা শুরু হচ্ছে। চলবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই প্রথম কোনো আরব দেশ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করছে।
১২ বছর আগে সমগ্র ফুটবল-বিশ্বকে চমকে দিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করার বরাত পায় কাতার। ২০২২-এর বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে ২০১০-এর ২ ডিসেম্বর চতুর্থ রাউন্ড ভোটাভুটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে দেয় কাতার। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কাতারের জয়কে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
যে দিন থেকে কাতার দায়িত্ব পেয়েছে সে দিন থেকে নানা বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল সাধারণত মে-জুন মাসে আয়োজন করা হয়। কিন্তু ওই সময়ে মরু দেশ কাতারের আবহাওয়া ফুটবলের উপযোগী হবে না বলে ২০২২-এর ফুটবল সরিয়ে নিয়ে আসা হয় নভেম্বর-ডিসেম্বরে।
তা ছাড়া কাতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাজার-একটা অভিযোগ রয়েছে। এই সূচকে কাতারের স্থান অনেক নীচে।
যে সময় কাতারকে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সে সময় ওই দেশে একটা মাত্র স্টেডিয়াম ছিল। ১০ লক্ষ ফুটবল অনুরাগীর ঠিকঠাক দেখভাল কাতার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে এই সময়ের মধ্যে সে দেশে আরও ৭টি স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে। একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ওই ৮টি স্টেডিয়ামের দিকে।
লুসাইল আইকোনিক স্টেডিয়াম
৮০ হাজার দর্শক বসতে পারেন এই স্টেডিয়ামে। তাই বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচের জন্য এই স্টেডিয়ামটিই বেছে নেওয়া হয়েছে। ২০১৭-তে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ২০২১-এ। স্টেডিয়াম ঠান্ডা রাখার জন্য অতি উচ্চ মানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আল-বায়াত স্টেডিয়াম
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম হল এটি। এতে ৬০ হাজার দর্শক বসতে পারেন। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। ৭ বছর লাগে কাজ সম্পূর্ণ হতে। এই স্টেডিয়ামে ৯টি ম্যাচ খেলা হবে, তার মধ্যে ৩টি নক-আউট পর্যায়ের ম্যাচ।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম
২০১৬ সালে এই স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। চার বছর পরে ২০২০ সালে সেই কাজ শেষ হয়। বিশ্বের সব চেয়ে পরিবেশ-বান্ধব স্টেডিয়াম এটি। এই স্টেডিয়ামে দর্শকাসন সংখ্যা ৪৫৩২০।
স্টেডিয়াম ৯৭৪
এই স্টেডিয়ামের এই অদ্ভুত নামের একটা কারণ আছে। ৯৭৪টি রি-সাইকলড্ শিপিং কন্টেনার দিয়ে এই স্টেডিয়াম তৈরি। ২০১৮ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে তিন বছর পরে তা শেষ হয়। এখানে দর্শকাসন সংখ্যা ৪৫৩২০। বিশ্বকাপ ফুটবলের পরে এটি ভেঙে ফেলা হবে।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম
কাতারের সব চেয়ে পুরোনো স্টেডিয়াম এটি। ২০১৪ সালে থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত, এই তিন বছর ধরে এই স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ চলে। এতেও ৪০ হাজার দর্শক বসতে পারেন। কাতারের প্রাক্তন আমীর খলিফা বিন হামেদ আল থানির নামে এই স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে।

আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়াম
কাতারের এই স্টেডিয়ামটিও প্রাক্তন আমীর খলিফা বিন হামেদ আল থানির নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। এই স্টেডিয়ামে সাধারণত ফুটবল ম্যাচ হয়ে থাকে। ফিফা ২০২২ বিশ্বকাপে এই স্টেডিয়ামে ৯টি দেশ খেলবে।
আল থুম্মা স্টেডিয়াম
কাতারের রাজধানী দোহায় এই স্টেডিয়াম। চার বছর ধরে এর নির্মাণকাজ চলার পরে ২০২১-এর অক্টোবরে এই স্টেডিয়াম খুলে দেওয়া হয়। বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ এই স্টেডিয়ামে খেলা হবে।
আল জ্যাকব স্টেডিয়াম
২০১৯-এর ১৬ মে এই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করা হয়। এই স্টেডিয়ামে ৪০ হাজার দর্শক বসতে পারেন। পালতোলা নৌকার পালের অনুকরণে এই স্টেডিয়ামের ছাদটি নির্মিত।