সপ্তাহের শেষ কেনাবেচার দিনে বড় ধাক্কা খেল দেশীয় শেয়ারবাজার। শুক্রবার প্রাথমিক লেনদেনেই সেনসেক্স প্রায় ১০০০ পয়েন্ট পড়ে যায় এবং নিফটি ১ শতাংশ-এর বেশি কমে যায়। বৈশ্বিক দুর্বল সংকেত ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক বিক্রির ফলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বাজারমূল্যের বড় ক্ষতি
বিএসই-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা কমে গেছে, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব হতাশাজনক হয়ে উঠেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি এবং ইতিবাচক কোনো ট্রিগার না থাকায় বাজার আরও চাপে রয়েছে। খুচরো বিনিয়োগকারীরা এখন চিন্তিত – এই পতন কি অব্যাহত থাকবে, নাকি শিগগিরই পুনরুদ্ধার হবে?
বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারবাজার অনিশ্চয়তা পছন্দ করে না, আর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই অনিশ্চয়তা বেড়ে চলেছে। ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্ক ঘোষণাগুলো বাজারকে প্রভাবিত করছে। সর্বশেষ ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি চিনের প্রতি মার্কিন অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তবে এখনো মার্কেট পুরোপুরি বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব মূল্যায়ন করেনি। যদিও এটি এড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে, তবুও অনিশ্চয়তা বেড়েছে, যার প্রমাণ CBOE ভোলাটিলিটি ইনডেক্স ২১.১৩-তে পৌঁছানো।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত: আইটি ও অটো
আজকের বাজারে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে আইটি এবং গাড়ি কোম্পানিগুলোর শেয়ারে। নিফটি আইটি এবং নিফটি অটো সূচকে বড় ধস নেমেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অটো খাত দুর্বল রয়েছে, বাজাজ অটো এবং হিরো মটোকর্পের মতো শেয়ারগুলো তাদের মূল সমর্থন স্তর ভেঙে নিচে নেমে গেছে। আইটি খাতও এখনো বিয়ারিশ।
ধাতু (মেটালস) খাতও নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখবে, এবং রিয়েল এস্টেট (রিয়েলটি) খাত আগের সমর্থন স্তর ভেঙে ফেলেছে, যার ফলে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়ও বিক্রির চাপ থাকবে।
বিনিয়োগকারীরা কী করবেন?
বাজার বিশ্লেষকরা বিনিয়োগকারীদের ঘাবড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং এই মন্দার সুযোগে গুণগত মানসম্পন্ন ব্লু-চিপ শেয়ার কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। বিশেষ করে যেগুলোর মূল্য সংশোধনের ফলে ন্যায্য অবস্থানে এসেছে।
কিছু ব্রোকারেজ সংস্থা পরামর্শ দিয়েছে যে, প্রতিরক্ষা খাতের শেয়ারগুলো বর্তমানে আকর্ষণীয় হতে পারে, কারণ গত কয়েক মাস ধরে এসব শেয়ারের তীব্র মূল্য সংশোধন হয়েছে।