সারের উপর ভারতকে ছাড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে রুশ সংস্থাগুলি। এ ভাবে বাজার মূল্যে সার দেওয়ার পদক্ষেপ ভারতের আমদানি ব্যয় এবং ভরতুকি বোঝা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সুযোগ বুঝে খেলা শুরু করেছে চিনও।
রয়টার্সের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কঠোর আন্তর্জাতিক সরবরাহের কারণে রাশিয়ার সংস্থাগুলি ডিএপির মতো সারের উপর ছাড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা সাধারণ বাজার দরে ভারতে সার বিক্রি করছে। গত বছর, রাশিয়া ভারতে সবচেয়ে বড়ো সার সরবরাহকারী দেশ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। রাশিয়ার এই পদক্ষেপের কারণে ভারতের জন্য সার আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে এবং এতে সরকারের উপর ভরতুকির বোঝা বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে মুম্বই-ভিত্তিক একটি সংস্থার এক আধিকারিক বলেছেন,” আগামী কয়েক মাসে বিধানসভা নির্বাচন হবে ৯টি রাজ্যে। তার ঠিক আগে বিশ্বব্যাপী সারের দাম বাড়ছে। কৃষকদের রক্ষা করার জন্য ভরতুকি বাড়ানো ছাড়া সরকারের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই”।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিশ্বব্যাপী সারের দাম বেড়েছে। চিন এখন বিশ্বের বৃহত্তম সার রফতানিকারক। সুযোগ বুঝে তারাও এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিক্রি কমানোর চেষ্টা করছে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক শীর্ষ শিল্প কর্মকর্তা বলেছেন, এখন কোনো ছাড় পাওয়া যাচ্ছে না। রুশ সার উৎপাদক সংস্থাগুলি ভারতকে বাজার মূল্যে সার দিচ্ছে।
গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে রাশিয়া থেকে ভারতের সার আমদানি ২৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৪৩.৫ লক্ষ টন হয়েছে। এর কারণ হল রাশিয়া ভারতকে ডিএপি, ইউরিয়া এবং এনপিকে সারে ছাড় দিয়েছে। বলে রাখা ভালো, আগে চিন, মিশর, জর্ডন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে সার আমদানি করত ভারত।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের সাম্প্রতিক হিসেব অনুযায়ী, দেশে মোট ১ কোটি ২৩ লক্ষ টন ডিএপি-র প্রয়োজন। এর মধ্যে ৩৪ লক্ষ ৩৪ হাজার টন উৎপাদিত হয় এ দেশেই। অন্য দিকে, দেশের ইউরিয়ার প্রয়োজন ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টন। এর মধ্যে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টন ইউরিয়া উৎপাদিত হয় ভারতে। বাকিটা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের আবহেও ভারতের সার আমদানিতে তেমন কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে মিশে যাবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর, দাবি প্রাক্তন সেনাপ্রধানের