ক্রেডিট কার্ডের সুদ নিয়ে জাতীয় ভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (এনসিডিআরসি)-এর দেওয়া রায় বাতিল সুপ্রিম কোর্টে। ২০০৮ সালে ক্রেডিট কার্ড বিলের ওপর ৩০ শতাংশ বার্ষিক সুদের ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করেছিল এনসিডিআরসি। তবে, সর্বোচ্চ আদালতের সেই রায় বাতিল হওয়ার পর এখন থেকে ব্যাংকগুলি বিদ্যমান নিয়মাবলির মধ্যে নিজেদের সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে।
বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এনসিডিআরসি-র সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যাংকগুলির আবেদন মঞ্জুর করে। এই রায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এইচএসবিসি-সহ একাধিক ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা আবেদনগুলির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, “প্রত্যাশিত কারণবশত, এনসিডিআরসি-র রায় বাতিল করা হল এবং আবেদন মঞ্জুর করা হল।”
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে একটি পিটিশনের ভিত্তিতে এনসিডিআরসি-র রায়ে বলা হয়েছিল, ৩৬ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশ বার্ষিক সুদের হার গ্রাহকদের ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করে। এনসিডিআরসি এটিকে “অন্যায় বাণিজ্যিক পদ্ধতি” হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সুপারিশ করেছিল।
কমিশনের বক্তব্য ছিল, ভারতে ক্রেডিট কার্ড সুদের হার উন্নত দেশগুলির তুলনায় অনেক বেশি, যেখানে এই হার ৯.৯৯ শতাংশ থেকে ১৭.৯৯ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
আরবিআই জানিয়েছে, ব্যাংকগুলির সুদের হার নির্ধারণ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং এটিকে ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৯-এর আওতায় রাখা হয়েছে। অন্য দিকে, ব্যাংকগুলি দাবি করেছে যে সুদের হার বেশি থাকলে ডিফল্টের ঝুঁকি এবং পরিষেবা দেওয়ার খরচ সামাল দেওয়া সহজ হয়।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সুদের হার বাজারের গতিশীলতার ওপর নির্ভর করে এবং ভোক্তা আদালতের এক্তিয়ার নেই এটি নিয়ন্ত্রণ করার। আদালত আরও জানিয়েছে, আরবিআই-এর নিয়মাবলির মধ্যেই এই বিষয়টি পরিচালিত হওয়া উচিত।
এই রায়ের ফলে ব্যাংকগুলি ক্রেডিট কার্ড পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের নিজের মতো করে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।