Home ব্র্ত-উৎসব প্রাচীন রোমান দেবতা জানুস, জাপানের ‘কাঙ্গিতেন’, তাইল্যান্ডের ‘ফ্রা ফিকানেত’, এমন অনেকের সঙ্গেই...

প্রাচীন রোমান দেবতা জানুস, জাপানের ‘কাঙ্গিতেন’, তাইল্যান্ডের ‘ফ্রা ফিকানেত’, এমন অনেকের সঙ্গেই মিল আমাদের গণেশের

0
জাপানের কাঙ্গিতেন, ভারতের গণেশ।

‘গণপতি বাপ্পা মোরিয়া’ ধ্বনিতে মুখরিত চারিদিক। কিন্তু জানেন কি, দেশকালের সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে ‘জনগণের দেবতা’ গণেশ পূজিত হন বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে ও বিভিন্ন রূপে।

প্রাচীন রোমান আমলে ‘জানুস’ নামে এক দেবতার আরাধনা করা হত। শুভকাজের আগে ‘জানুস’-এর পুজো করা হত। জানুয়ারি নামটি এসেছে ‘জানুস’ থেকে। জানুয়ারি মাসের পয়লা তারিখে পুজো করা হত। রোমান দেবতা ‘জানুস’-এর সঙ্গে মিল আছে গণেশের। শুধু রোমান আমলেই নয় প্রাচীন আজটেক সভ্যতাতেও হস্তিমুখ দেবতার আরাধনা করা হত। ইন্দোনেশিয়ায় মুদ্রা রুপিয়াহর নোটে গণেশের ছবি রয়েছে।

জাপানি দেবতা ‘কাঙ্গিতেন’-এর (Kangiten) সঙ্গে ভীষণ মিল গণেশের। ‘কাঙ্গিতেন’-এর আরেক নাম হল ‘বিনায়ক-তেন’ (Binayak-ten)। সিদ্ধিদাতা গণেশকে ‘বিনায়ক’ নামেই ডাকা হয়। জাপানি দেবতা ‘গণাবাচি’ ও ‘গণওয়াহা’র সঙ্গেও মিল পাওয়া যায় গণেশের। বিপদ-আপদ, বিঘ্নকে দূর করেন বলেই গণেশকে ডাকা হয় বিঘ্নহর্তা, বিঘ্নবিনাশক নামে। তেমনই জাপানি দেবতা ‘বিনায়ক-তেন’কেও জাপানিরা অশুভ শক্তির বিনাশকারী বলে মনে করে। সুখ, সমৃদ্ধির কামনায় সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনা করা হয়। তেমনই জাপানে ‘শো-তেন’ বা আর্যদেবকে সুখ-সমৃদ্ধির দেবতা হিসাবে মানা হয়।

ভারতের পাশাপাশি চিন, জাপান, তিব্বত ও বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষও তাদের সংস্কৃতিতে গণেশকে আপন করে নিয়েছে।

যেমন জাপানি বৌদ্ধরা জীবনের সব বিঘ্ন, বিপদ আপদ দূর করতে ও সুখ, সমৃদ্ধির কামনায় দেবতা ‘কাঙ্গিতেন’-এর আরাধনা করেন। বৌদ্ধধর্মের পাশাপাশি জাপানে তন্ত্রের দেবতা হিসাবেও পূজিত ‘কাঙ্গিতেন’। জাপানে এই দেবতার বহু মন্দির রয়েছে। পদ্মফুলে আসীন দেবতা ‘কাঙ্গিতেন’-এর হাতে রয়েছে অস্ত্র। মোদক, লাড্ডু নয়, ‘কাঙ্গিতেন’-এর প্রিয় খাবার মুলো। জাপানি ভাষায় মুলোকে বলা হয় দাইকোন (Daikon)। মুলোকে বিবাহ, উর্বরতার প্রতীক হিসাবে ধরা হয়। তিব্বতে লাল রঙের গণেশের পুজো করা হয়। তিব্বতীয় বৌদ্ধদের একাংশ মনে করেন লামাতন্ত্রের প্রকাশ ঘটেছে গণেশ ঠাকুরের হাত ধরে।

তাইল্যান্ডে বিঘ্নহর্তা রূপে পূজিত হন ‘ফ্রা ফিকানেত’ (Phra Phikanet) নামক দেবতা। এর সঙ্গে মিল পাওয়া যায় গণেশ ঠাকুরের। একইভাবে তাইল্যান্ডে হস্তীমুখ দেবতারও পুজো করা হয়। তাইল্যান্ডে গণেশকে শিল্পকলার দেবতা হিসাবে মানা হয়। তাই তাইল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অফ ফাইন আর্টসের লোগোতে রয়েছে গণেশ।

কম্বোডিয়ার প্রাচীন আঙ্কোরভাট মন্দিরে ফরাসি পুরাতাত্ত্বিক অঁরি মাহুত শিব, বিষ্ণু আর গণেশ ঠাকুরের মূর্তি খুঁজে পান। একইভাবে পূর্ব জাভার তুলিসকাইয়ো গ্রামে গণেশের প্রাচীন ৩ মিটার মূর্তি পাওয়া গেছে।

বর্মা বা আজকের মায়ানমারে রয়েছে গণেশ প্যাগোডা। গণেশের বার্মিজ নাম হল ‘মহা পেইন’। উত্তর চিনেও ৫৩১ খ্রিষ্টাব্দে মহা গণপতির মূর্তি পাওয়া গেছে। চিনে গণেশকে ‘হো তেই’ নামে ডাকা হয়। বিশাল বপুর ‘হো তেই’কে সুখ-সমৃদ্ধির দেবতা হিসাবে মানা হয়। শ্রীলঙ্কায় তামিলরা পিল্লাইয়ার নামে গণেশকে ডাকেন। মঙ্গোলিয়ায় গণেশের নাম ‘তোতখারুর খাঘান’ (Totkharour Khaghan)।

আরও পড়ুন

বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণের শীর্ষে ভারত, জমা বর্জ্যে ভরবে ৬০৪টি তাজমহল, বলছে গবেষণা

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version