দিন কয়েক পরই দেবীপক্ষের সূচনা হবে। মা দুর্গাকে আবাহন করার সমস্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত। প্রতি বছর অভিনব থিমে নজর কাড়ে খিদিরপুর পল্লী শারদীয়া পুজো কমিটি। এবছর ব্যতিক্রম নয়। এবছর উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরের ‘গমীরা মুখা নাচকে’ মণ্ডপে তুলে ধরা হচ্ছে। সামগ্রিক সৃজনের দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী শঙ্কর পাল।
পুজো কমিটির কর্তা (সহ সচিব) সুদীপ রায় জানান, উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরের এক আকর্ষণীয় মুখোশ শিল্পকলা হল মুখা। এই লোকশিল্প হল ঐতিহ্য, পরম্পরা ও শিল্পধারার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। এই মুখা হল দিনাজপুরের প্রাচীন অনার্য সংস্কৃতির প্রতীক। সেই কোন প্রাচীন সময় থেকে দিনাজপুরের মুখোশ স্থানীয় কৃষিকাজ সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মাঙ্গলিক শক্তির প্রতীক হিসাবে ধরা দেয়। এই মুখোশের সঙ্গে যুক্ত নৃত্যনাট্য।

এই শিল্পসৃষ্টির মাধ্যমে গ্রাম্য জীবনের কথা তুলে ধরা হয়। প্রাচীন সময় থেকে দিনাজপুরের সংস্কৃতির ধারক হল গমীরা বা গোমিরা। স্থানীয় ভাষায় এটাকে বলে মুখা নাচ বা মুখা খেল। গমীরা শব্দ এসেছে গ্রাম চণ্ডী শব্দ থেকে। এর অর্থ হল গ্রাম ঠাকুর যা মা দুর্গারই এক রূপ বলে ধরা হয়।’
গ্রাম ঠাকুর বা মা দুর্গার পুজোকে কেন্দ্র করে গমীরা মুখা নাচ পরিবেশিত হয় গমীরা এক গাম্ভীর্যপূর্ণ নাচ। এর মূল আকর্ষণ হল এর মুখোশ। কোনো গান, সংলাপ বা ভাষ্য থাকে না। আছে শুধু ঢাকের বোল আর সানাইয়ের সুর। মূল ভাবনা হল অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির জয় ও জাগরণ ঘটানো। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস হল, মুখোশ পরে দেবদেবীরা মর্ত্যে মানুষের ছদ্মবেশে এসে সবার মঙ্গল করে থাকে।