Home উৎসব রাখিবন্ধন উৎসবের সাথে ইতিহাসের কোন অধ্যায় লুকিয়ে আছে? জেনে নিন

রাখিবন্ধন উৎসবের সাথে ইতিহাসের কোন অধ্যায় লুকিয়ে আছে? জেনে নিন

রাখিবন্ধন কিন্তু শুধুমাত্র ভাই আর বোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না কোনওদিন। যে কোনও সম্পর্কেই হাতে একচিলতে সুতো বেঁধে দেওয়ার নাম রক্ষাবন্ধন। মঙ্গলকামনা করে, সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষার বিশ্বাসে এই রাখি পরিয়ে দেওয়া হয়। রামায়ণ থেকে মহাভারত, রক্ষাবন্ধনের নজির ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সর্বত্র।

0

রাখিবন্ধন কিন্তু শুধুমাত্র ভাই আর বোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না কোনওদিন। যে কোনও সম্পর্কেই হাতে একচিলতে সুতো বেঁধে দেওয়ার নাম রক্ষাবন্ধন। মঙ্গলকামনা করে, সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষার বিশ্বাসে এই রাখি পরিয়ে দেওয়া হয়। রামায়ণ থেকে মহাভারত, রক্ষাবন্ধনের নজির ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সর্বত্র।

পুরাণ, মহাকাব্যের পাতা বেয়ে রাখিবন্ধন নেমে আসে বাস্তবের মাটিতেও। ভারতে রাখিবন্ধনের ইতিহাস প্রায় সকলেরই জানা। পরাধীন ভারতে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ডাক দেয় ব্রিটিশরা। বাংলার এই ভাগ রুখতে রাখিবন্ধনকে হাতিয়ার করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকলের হাতে বেঁধে দেন হলুদ সুতো। জাতি-ধর্ম ব্যতিরেকে বাংলার মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিল সেদিনের এই রাখিবন্ধন।

আলেকজান্ডার পুরুর ঘটনা

৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেছিলেন, এই কথা সবাই জানি। এরই সঙ্গে রয়েছে আর একটি ঘটনাও। আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানার কাহিনি। রোজানা রাজা পুরুকে একটি পবিত্র সুতো পাঠিয়েছিলেন। এর পর তিনি পুরু রাজাকে আলেকজান্ডারের ক্ষতি করতে মানা করেছিলেন। হিন্দু রাজা পুরু। তিনি রাখির মাহাত্ম্য বোঝেন ও তাকে সম্মান করেন। তাই রোজানার কথা রাখতে আর সেই পবিত্র সুতোর বন্ধনকে সম্মান দিতে যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি নিজে আলেকজান্ডারকে আঘাত করেননি।

রানি কর্ণবতী মুঘল সম্রাট হুমায়ুন

ইতিহাসে আরও একটি কাহিনি পাওয়া যায় রাখিবন্ধনকে কেন্দ্র করে। ঘটনা ১৫৩৫ সালের। মুঘলসম্রাট হুমায়ুনকে একটি রাখি পাঠান চিতোরের রানি কর্ণবতী। গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহ এই সময় চিতোর আক্রমণ করেছিলেন। তাতে বিধবা রানি অসহায় বোধ করেছিলেন। সেই পরিস্থিতিতেই তিনি রাখি পাঠিয়েছিলেন সম্রাটকে ও সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন।

হুমায়ুন এই বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতেন। তাকে সম্মান জানিয়েই রানির সুরক্ষার জন্য সৈন্য প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু তাতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণে বাহাদুর শাহ চিতোর দখল করে নিয়েছিলেন। এই অবস্থায় নিজের সম্মান বাঁচাতে ১৩ হাজার পুর-নারীকে নিয়ে জহরব্রত পালন করেন রানি। তাঁরা ১৫৩৫ সালের ৮ মার্চ আগুনে আত্মহুতি দেন।

এর পর হুমায়ুন চিতোরে পৌঁছোন। তখন আর রানি নেই। শেষে বাহাদুর শাহকে চিতোর থেকে উৎখাত করে কর্ণবতীর পুত্র বিক্রমজিৎ সিংহকে সিংহাসনে অভিষিক্ত করেন। কিন্তু এই ঘটনাটি নিয়ে মতপার্থক্য আছে। অনেক ঐতিহাসিকের লেখায় এর উল্লেখ পাওয়া যায় না। অথচ মধ্য সপ্তদশ শতকের রাজস্থানি লোকগাথায় এর উল্লেখ পাওয়া যায়।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version