একটা সময় ছিল যখন পুজো এলেই একটি বিখ্যাত জুতো কোম্পানি বিজ্ঞাপন দিত – পুজোয় চাই নতুন জুতো। পুজোর আগমনবার্তা এলেই বাঙালি মেতে ওঠে কেনাকাটায় – পোশাক থেকে জুতো – সব। তবে এই জুতো কেনার সময় ফ্যাশন নয়, আগে নিজের আরামের দিকটা নজরে রাখুন। ঘষা লেগে পায়ের ছাল উঠে যাচ্ছে বা ফোস্কা পড়ছে, এমন জুতো পরবেন না। সবচেয়ে সহজ উপায় হল এমন জুতো কিনবেন যা পায়ে সহজে এঁটে যায়। খুব টাইট জুতো পরলে পায়ের চামড়ার ওপর চাপ পড়বে। তাতে ছাল উঠে যাবে। আবার লুজ ফিটিং জুতো কিনবেন না। এরকম জুতো পরে হাঁটলে ঘষটানিতে ফোস্কা পড়বে।
আরাম পান এমন জুতো পরুন
প্রথমদিকে নতুন জুতো খুব শক্ত হয়। তাই ভালো করে নাড়াচাড়া করে পায়ের মাপের মতো করে নিন। যে জুতো পরে কষ্ট হচ্ছে, চামড়া নরম করতে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, মিঙ্ক অয়েল ইত্যাদি দিয়ে ঘষুন। তেলের বদলে লেদার কন্ডিশনারও ব্যবহার করতে পারেন। জুতোর যে জায়গাটায় শক্ত হয়ে আছে সেখানে একটু হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে নিন। মোটা মোজা পরে জুতো গলিয়ে নিয়ে একটু হাঁটুন। এরপর মোজা খুলে রেখে হাঁটুন, সহজ হয়ে যাবে।
ঘষটানিতে ভোগান্তি এড়াতে কী করবেন
পারলে মোজা পরুন। এতে জুতোয় ঘষা লেগে ছাল উঠে যাবে না। অথবা গোড়ালিকে ঘষটানি থেকে বাঁচাতে ‘টো প্রোটেক্টর’ বা ‘টো ক্যাপ’ পরুন। অথবা ‘শ্যু প্যাড’ বা ‘ইনসোল’ ব্যবহার করুন। এতে গোড়ালিতে ঘষা লেগে যাবে না। যে জায়গায় ঘষা লেগে ছাল উঠে গেছে সেখানে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে রাখুন। জুতোর শক্ত জায়গায় সার্জিক্যাল টেপ লাগিয়ে রাখুন। আর ঘষা লাগবে না।
ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে ফোস্কার নিরাময় করবেন
(১) মধু, অ্যালোভেরা জেল, পেট্রোলিয়াম জেলিতে অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি আর অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল গুণ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ছাল ওঠা, ফোস্কা পড়া জায়গায় লাগান।
(২) ফোস্কা পড়ার জায়গায় একটু টুথপেস্ট কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এরপর ব্যথার জায়গায় পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে উপশম মিলবে। এ ছাড়া বাড়িতে অ্যাসপিরিন জাতীয় পেনকিলার ট্যাবলেট থাকলে একটা ট্যাবলেট ভেঙে গুঁড়ো করে নিয়ে জল দিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিয়ে ফোস্কা পড়া জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। শুকনো হয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। উপশম মিলবে।
৩) পরিষ্কার কাপড়ে কয়েকটা বরফের টুকরো ভরে ফোস্কা পড়ার জায়গায় লাগালে উপশম হবে। এ ছাড়াও চালগুঁড়ি জল দিয়ে থকথকে পেস্ট তৈরি করে ফোস্কা পড়ার জায়গায় লাগান। শুকনো হয়ে গেলে ধুয়ে নিন। ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগান।
(৪) নিম আর হলুদের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ আছে তাই হলুদ ও নিমপাতা বেঁটে কিছুক্ষণ লাগান ফোস্কা পড়া জায়গায়।
(৫) ভিটামিন ই-তে সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল আর আমন্ড অয়েল মিশিয়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
(৬) এ ছাড়া তুলোয় ভিজিয়ে লেবুর রস লাগালে উপশম মিলবে। নারকেলতেলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ আছে। নারকেলতেলে থাকা লোরিক অ্যাসিড ফোস্কা দূর করে। তাই নারকেলতেলের সঙ্গে কর্পূর লাগালে উপশম হয়।