ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই প্রথম বারের মতো পাকিস্তান সফরে। ইসলামাবাদে শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সম্মেলন উপলক্ষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জয়শঙ্করকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং করমর্দনের মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে স্বল্প সময়ের কথা হয়।
তবে এই বৈঠক মূলত এসসিও সদস্যদের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা, অর্থনীতি, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ও সীমান্ত সমস্যার কারণে কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নির্ধারিত নেই, এই সম্মেলনে উপস্থিতির ফলে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন, যা ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে। ভারত ২০১৭ সালে এসসিও-এর পূর্ণ সদস্যপদ পায় এবং তখন থেকে সংস্থার সক্রিয় সদস্য হিসেবে নানা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আসছে। পাকিস্তানও একই সময়ে সদস্যপদ পায় এবং এই সংস্থার অধীনে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
জয়শঙ্করের এই সফরের প্রেক্ষাপটে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা না থাকলেও সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই নিজেদের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অবস্থানকে জোরদার করতে আগ্রহী। দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ও কাশ্মীর ইস্যুতে অমীমাংসিত বিরোধ থাকার পরও, এসসিও-এর অধীনে আলোচনা ও সহযোগিতা এগিয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই সফরে মূলত এসসিও-এর আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশগত পরিবর্তন, এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে জোর দেওয়া হবে। তবে, এই সম্মেলনের বাইরেও অন্য আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এসসিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও, জয়শঙ্করের পাকিস্তান সফর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা দিতে সক্ষম, বিশেষত যেসব দেশের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।