Home খবর বিদেশ ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রস্তুত পুতিন! থাকতে পারে কঠিন শর্ত

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রস্তুত পুতিন! থাকতে পারে কঠিন শর্ত

0

ইউক্রেনকে শান্তি চুক্তির দিকে এগিয়ে যেতে চাপ দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন সময় সংকেত মিলেছে যে, নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে ক্রেমলিন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে পারে। কূটনীতিকদের মতে, রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের তিন বছর পর, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যুদ্ধের অবসান ঘটানোর চেষ্টায় মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন এবং কিয়েভের প্রতি দীর্ঘদিনের মার্কিন সমর্থন থেকে সরে এসেছেন।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে ভালো ভাবে এগোচ্ছি, কিন্তু ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

ট্রাম্পের উপদেষ্টারা ইতিমধ্যেই রাশিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনা করছেন। যেগুলির মধ্যে রাশিয়ার তেল বিক্রির দামের সীমা বাতিলের বিষয়টিও রয়েছে।

একইসঙ্গে, মঙ্গলবার সৌদি আরবে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে, যেখানে কিয়েভের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সামরিক সহায়তা পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা হবে। ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা স্থগিত করেন।

ট্রাম্পের এই অবস্থান ইউক্রেন ও ইউরোপের মিত্রদের মধ্যে আশঙ্কাও তৈরি করেছে। কারণ, তিনি এমন একটি চুক্তি চাপিয়ে দিতে পারেন, যা ক্রেমলিনের স্বার্থরক্ষার জন্য সুবিধাজনক।

সূত্র অনুসারে, গত মাসে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় রাশিয়া যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে, তবে চূড়ান্ত শান্তি চুক্তির কাঠামোতে অগ্রগতি হলে তবেই তারা এটি বিবেচনা করবে। বিশেষ করে, শান্তিরক্ষী বাহিনীর গঠন ও অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর বিষয়ে পরিষ্কার সমঝোতা থাকতে হবে।

এ বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ কোনো মন্তব্য করেননি।

এরই মধ্যে ঘটনায় প্রকাশ, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া রাতভর ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। কিয়েভ জানিয়েছে, শত শত ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করে দেশ জুড়ে হামলা চালানো হয়েছে।

তবে ট্রাম্প আত্মবিশ্বাসী যে, ভ্লাদিমির পুতিন চুক্তিতে আগ্রহী। যদিও শুক্রবার সকালে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের হুমকি দেন, পরে এই বিষয়ে তিনি প্রকাশ্যে আর কিছু বলেননি।

২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকার অবস্থান বদল করেছেন ট্রাম্প। তিনি ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তির সমর্থন ছেড়ে দিয়েছেন এবং মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের পর রাশিয়ার দখলকৃত সব ভূখণ্ড ইউক্রেন ফিরে পাবে—এমন প্রত্যাশা অবাস্তব।

জেলেনস্কির সঙ্গে মতবিরোধের পর ট্রাম্প ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করেন, যা ইউরোপের মিত্রদের হতবাক করেছে। শুক্রবার জানা গেছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা National Geospatial-Intelligence Agency সাময়িকভাবে ইউক্রেনের স্যাটেলাইট চিত্র সরবরাহ বন্ধ করেছে।

জেলেনস্কি তাঁর ভিডিও ভাষণে বলেন, “ক্রেমলিনকে শান্তিতে আসতে বাধ্য করতে হবে।” তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতও দেন।

পুতিন অবশ্য ট্রাম্পের দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন। ডিসেম্বরে এক সংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আমরা সাময়িক যুদ্ধবিরতি চাই না, চাই স্থায়ী ও নিশ্চয়তাপূর্ণ শান্তি।”

বৃহস্পতিবার রাশিয়া ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের এক মাসব্যাপী আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করে দেয়, যা মূলত বিমান ও নৌ অভিযান বন্ধ করার এবং জ্বালানি পরিকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version