সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক বিতর্ক থেকে দূরে রাখা উচিত। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী।
এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং একটি টুইটের মাধ্যমে দিয়েছেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও ব্যাখ্যা দিয়েছে। তবে আমার শেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল—আমি নিশ্চিত করতে চাই যে সেনাবাহিনীকে কখনোই রাজনীতিতে জড়ানো উচিত নয়।”
লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছিলেন, “ভারতের ভূখণ্ডে চিনা অনুপ্রবেশ হয়েছে, সেনাপ্রধান নিজেই তা স্বীকার করেছেন।” এই মন্তব্যের জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিস্তারিত ভাবে বিরোধিতা করেন।
ইন্দো-চিন সীমান্ত প্রসঙ্গে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী কোনো বিতর্কিত এলাকায় প্রবেশ করেনি, বরং “আরও স্বচ্ছন্দ এবং আত্মবিশ্বাসী” অবস্থানে রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “২০০১ বা ২০০৭ সালে আইটিবিপি (ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ) সেখানে দায়িত্বে ছিল, তখন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ছিল সামান্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও এগিয়েছি, একইভাবে চিনও এগিয়েছে।”
সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, “যখন সৈন্যসংখ্যা বাড়ে, তখন থাকার জায়গা, রাস্তা, পরিবহণ, সরঞ্জাম মজুদ করা প্রয়োজন হয়। এটা স্বাভাবিক, কারণ উভয় দেশই পরিকাঠামো গড়ে তুলছে।”
তিনি আরও বলেন, “ধরা যাক, আগে সেখানে ১০০ জন সৈন্য ছিল, এখন ১০০০ জন রয়েছে। তাহলে তাদের রসদ, বাসস্থানের ব্যবস্থাও করা লাগবে। জরুরি পরিস্থিতিতে আরও ২০০ জন সৈন্য যোগ হলে তাদের থাকার ব্যবস্থাও করতে হবে। তাই দুই পক্ষই একই কাজ করছে।”
সম্প্রতি রাহুল গান্ধী সংসদে বলেছেন, “চিন আমাদের ভূখণ্ডের ভেতরে বসে আছে, কারণ ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।” এই মন্তব্যেরও কঠোর প্রতিবাদ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “সেনাপ্রধানের বক্তব্য শুধু দুই পক্ষের ঐতিহ্যগত টহলদারি ব্যবস্থার পরিবর্তনকে বোঝায়। সম্প্রতি হওয়া সমঝোতার মাধ্যমে সেই প্যাটার্ন স্বাভাবিক হয়েছে।”
এদিকে, ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সম্প্রতি বেজিং সফরে গিয়ে চিনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ভারত ও চিন সম্প্রতি দেপসাং সমভূমি ও ডেমচকের টহলদারি ব্যবস্থা নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। এর আগে পূর্ব লাদাখের অন্যান্য সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলে আলোচনা সাপেক্ষে সেনা অপসারণ হয়েছিল।