প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টারমারের মধ্যে আজ, মঙ্গলবার ব্রাজিলে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে ভারতীয় পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মাল্য এবং নীরব মোদীর প্রত্যর্পণের বিষয়টি প্রধান আলোচ্য হয়ে ওঠে।
বিজয় মাল্যকে ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি ২০১৬ সালে ভারত থেকে পালিয়ে যান। অন্য দিকে, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (PNB) প্রতারণার অভিযোগে নীরব মোদীকে দেশে আনতে চাইছে ভারতীয় তদন্তকারী এজেন্সি।
যুক্তরাজ্য থেকে সঞ্জয় ভাণ্ডারীকেও প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে ভারত । অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাকারী এবং পরামর্শদাতা হিসেবে অভিযুক্ত এই ব্যক্তি কর ফাঁকি এবং আর্থিক প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত।
মোদীর প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত বার্তা
প্রধানমন্ত্রী মোদী বৈঠকে স্টারমারকে বলেন, “যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ভারতীয় অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।” সরকারি বিবৃতিতে এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এটি ছিল দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। সূত্রমতে, সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণ সোদ সম্প্রতি ব্রিটিশ নিরাপত্তা মন্ত্রী ড্যান জারভিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াগুলি ত্বরান্বিত করার অনুরোধ জানান।
বিজয় মাল্য মামলা
ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরে বিজয় মাল্যকে প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের পতনের ফলে সৃষ্ট ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির জন্য তাঁকে দায়ী করা হয়েছে। ৯,০০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপের এই মামলায় মাল্যকে ২০১৯ সালে বিশেষ আদালত পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী ঘোষণা করে।
৬৮ বছর বয়সি বিজয় মাল্য বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন এবং নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নীরব মোদীর আর্থিক প্রতারণা
নীরব মোদী এবং মেহুল চোকসি ১৪,০০০ কোটি টাকার পিএনবি প্রতারণা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত। তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই অভিযোগ করেছে, তাঁরা ব্যাঙ্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে মুম্বইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে লেটার অব আন্ডারটেকিং (LoU) ইস্যু করেছেন।
৫৩ বছর বয়সি নীরব মোদী ২০১৮ সালে ভারত থেকে পালিয়ে যান এবং ২০১৯ সালে মুম্বই আদালত তাঁকে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী ঘোষণা করে। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের একটি কারাগারে বন্দি এবং ভারতে প্রত্যর্পণের আবেদন ইতিমধ্যেই হেরে গেছেন।
এই আলোচনার মাধ্যমে ভারত এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে আর্থিক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও জোরদার হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।