খবর অনলাইন ডেস্ক: দিল্লির বিস্ফোরণ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি সাদা হুন্ডাই আই২০ (i20) গাড়ি বিস্ফোরণে অন্তত আটজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লালকেল্লার কাছে পার্ক করা ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গাড়িটি দুপুর ৩টা ১৯ মিনিটে সুনেহরি মসজিদের পার্কিংয়ে প্রবেশ করে এবং সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে বেরিয়ে আসে। ৬টা ৫২ মিনিটে গাড়িটি গৌরীশঙ্কর ও জৈন মন্দিরের কাছে পৌঁছে বিস্ফোরিত হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে কী দেখা গেছে
তদন্তকারী সংস্থাগুলির হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গাড়ির চালক নীল-কালো টি-শার্ট পরা একজন যুবক। আর একটি ফুটেজে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি দিল্লির ব্যস্ত রাস্তায় এগিয়ে চলেছে। তদন্তে জানা গেছে, চালক বা গাড়ির ভেতরের কেউই কয়েক ঘণ্টা ধরে গাড়ি থেকে নামেননি। সূত্রের দাবি, “সন্দেহভাজন আত্মঘাতী জঙ্গি বা জঙ্গিরা কারও জন্য অপেক্ষা করছিল, অথবা নির্দেশের অপেক্ষায় ছিল।”
গাড়ির ভেতরে তিনজন ছিলেন, সবাই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলওয়ামা যোগসূত্রে নজর
ঘটনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জানান, এনআইএ-সহ একাধিক সংস্থা তদন্তে নেমেছে। শাহ বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হবে না।”
বিস্ফোরণের পর লালকেল্লা চত্বর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে পড়ে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ ও দগ্ধ দেহাংশ। আহতদের দ্রুত লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল (LNJP)-এ ভর্তি করা হয়।
সন্ত্রাসবিরোধী আইন (UAPA)-এর ধারায় মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি দেশ জুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি হয়েছে — মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, জয়পুর, হায়দরাবাদ, লখনউ-সহ একাধিক শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
একই দিনে ফরিদাবাদে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গাড়িটি হরিয়ানার সলমন নামের এক ব্যক্তির নামে রেজিস্টার্ড ছিল। তিনি জানিয়েছেন, মাস কয়েক আগে তিনি গাড়িটি বিক্রি করেছিলেন। পরে গাড়িটি পুলওয়ামার তারিক নামের এক ব্যক্তির কাছে গিয়েছে বলে জানা যায়। তবে মালিকানার হস্তান্তর হয়নি।
তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, ধৃত দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি ড. মুজাম্মিল শাকিল ও ড. আদিল রাথারের ঘনিষ্ঠ পুলওয়ামার চিকিৎসক ড. উমর মোহাম্মদ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই দিন সকালেই তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে আতঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন তিনি।
গাড়িটির লেনদেনের ইতিহাস এবং মালিকানার পরিবর্তন নিয়েও তদন্ত চলছে, কারণ একাধিক প্রতারকচক্রের মাধ্যমে গাড়িটি হাতবদল হয়েছে বলে সন্দেহ।
আরও পড়ুন
