Home খবর দেশ চেন্নাইয়ের কাছে স্যামসাং কারখানায় শ্রমিক ধর্মঘট, রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি কেন্দ্রের

চেন্নাইয়ের কাছে স্যামসাং কারখানায় শ্রমিক ধর্মঘট, রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি কেন্দ্রের

0

চেন্নাই: ৯ সেপ্টেম্বর থেকে চেন্নাইয়ের কাছে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন স্যামসাং কারখানার শ্রমিকরা। এ ব্যাপারে তামিলনাড়ু সরকারের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

কারখানার মোট ১,৭৫০ জনের মধ্যে প্রায় ১,০০০ জন শ্রমিক, বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন । যার মধ্যে রয়েছে উপযুক্ত বেতন কাঠামো এবং কাজের শর্তাবলী। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের সাথে যোগাযোগের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

ইতিমধ্যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য তামিলনাড়ু সরকারের প্রতি একটি চিঠি লিখেছেন, যাতে তিনি শ্রমিকদের ধর্মঘটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। শ্রীপেরুমবুদুরের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ-এর নেতা ই মুতুকুমার সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেছেন, “কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে আমাদের তরফে স্বাগত। তামিলনাড়ু সরকারকে এখনই উদ্যোগ নিয়ে শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করা উচিত।”

তামিলনাড়ু মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের প্রতি দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়ে মাণ্ডব্য বলেছেন, “শ্রমিকদের ধর্মঘট সমাধানে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, “আমরা রাজ্যকে এই সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে প্রস্তুত।”

অন্য দিকে, ধর্মঘটের প্রতিক্রিয়ায় স্যামসাং জানিয়েছে যে অনেক ধর্মঘটকারী শ্রমিক শো-কজ নোটিশ জারির পর দ্রুত কাজে ফিরেছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা আলোচনা মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করতে পারি এবং কর্মচারীদের কাজে ফেরার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”

ধর্মঘটের ফলে স্যামসাংয়ের উৎপাদনে সামান্য প্রভাব পড়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থা। শ্রমিকদের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। স্যামসাং জানিয়েছে, “আমাদের চেন্নাই কারখানার পূর্ণকালীন শ্রমিকদের গড় মাসিক বেতন অঞ্চলের অন্যান্য কোম্পানির শ্রমিকদের গড় বেতনের চেয়ে ১.৮ গুণ বেশি।” তারা জানিয়েছে যে শ্রমিকদের ওভারটাইম বেতন এবং অন্যান্য ভাতা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে এবং কোম্পানি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে একটি সর্বোচ্চ মানের কর্মপরিবেশ প্রদান করে।

স্যামসাং আরও জানিয়েছে, “পূর্ণকালীন কর্মচারীরা মোট কর্মশক্তির একটি বৃহত্তম অংশ এবং আমাদের উৎপাদন কর্মশক্তির গড় কর্মকাল ১০ বছরের বেশি। এটাই আমাদের কোম্পানিতে কর্মরত শ্রমিকদের সন্তুষ্টির প্রমাণ।”

ধর্মঘটের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। শ্রমিকরা আরও ভালো বেতন এবং কাজের পরিবেশের জন্য দাবি জানাচ্ছেন, যা কর্মসংস্থানের মান বাড়াতে পারে। তাঁরা আশা করছেন যে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে এবং দ্রুততার সঙ্গে একটি সমাধান বের করার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকায় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

এখন দেখার বিষয়, শ্রমিকদের দাবি এবং সরকারের উদ্যোগের মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটিয়ে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা হয়। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই আন্দোলনের ফলাফল শুধু আন্দোলনকারী শ্রমিকদের জীবনে পরিবর্তন আনবে না, বরং তামিলনাড়ুর শ্রম বাজারের পরিস্থিতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ের কাছে স্যামসাং ইন্ডিয়ার উৎপাদন বন্ধ, ১২ দিনে পড়ল শ্রমিক ধর্মঘট

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version