দিল্লি-এনসিআরে স্থায়ীভাবে শেল্টারে রাখা হবে না পথকুকুরদের। সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার তার আগের নির্দেশ সংশোধন করে জানিয়েছে, স্টেরিলাইজেশন ও টিকাকরণ শেষে কুকুরদের ফের তাদের পুরনো এলাকাতেই ছেড়ে দিতে হবে। তবে যেসব কুকুর আক্রমণাত্মক আচরণ করে বা রেবিসে আক্রান্ত, কেবল তারাই শেল্টারে থাকবে।
তিন বিচারপতির বেঞ্চ—বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এনভি অঞ্জারিয়া—এই মামলার শুনানিতে আরও জানিয়েছেন, পথকুকুরদের প্রকাশ্য স্থানে খাওয়ানো যাবে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট খাওয়ানোর জায়গা তৈরি করবে পৌরসভা। নিয়ম ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি দিল্লি পৌরনিগমকে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি হেল্পলাইন চালু করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
আগের নির্দেশে আদালত বলেছিল, আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি-এনসিআরের সমস্ত পথকুকুরকে তুলে নিয়ে যেতে হবে শেল্টারে। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রবল বিরোধিতা করেন পশুপ্রেমীরা। পেটা ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে বহু সেলিব্রিটি ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা গান্ধীও দাবি করেন, এই উদ্যোগ ব্যয়বহুল এবং অকার্যকর হবে।
নতুন রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে
- অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল (ABC) নিয়মই আপাতত অনুসরণ করতে হবে।
- কুকুরদের জীবাণুমুক্তকরণ, ডিওয়ার্মিং ও টিকাকরণের পর ফিরিয়ে দিতে হবে।
- কেউ এই প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারবে না।
- দত্তক নেওয়া কুকুরদের ফের রাস্তায় ফেলে দেওয়া যাবে না।
- বড় নীতি নির্ধারণের জন্য দেশের সব হাইকোর্টে থাকা অনুরূপ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরিত হবে।
পেটা ইন্ডিয়ার প্রতিক্রিয়া
“আজকের রায়ে প্রমাণ হল সমাজের অধিকাংশ মানুষ কমিউনিটি ডগদের প্রতিবেশী ও বন্ধু হিসেবেই ভাবেন। আজ শেরু, রানি, মতি—সবাইয়ের দিন,” বলেছে সংস্থাটি। তারা সতর্ক করেছে, কুকুরদের অন্যায়ভাবে ‘আক্রমণাত্মক’ আখ্যা দিয়ে যেন তুলে না নেওয়া হয়।
তবে নয়ডার কিছু বাসিন্দা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, রাস্তায় কুকুরদের উপস্থিতি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে অন্তত ৩৭ লক্ষ কুকুর কামড়ানোর ঘটনা এবং ৫৪ জনের রেবিসে মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
আদালতের নির্দেশ, বড় এই জাতীয় নীতির চূড়ান্ত রূপ পরে ঠিক হবে। তবে আপাতত জীবাণুমুক্ত ও সুস্থ কুকুরদের স্থানীয় এলাকায় ফেরানোই একমাত্র পথ।
আগের শুনানিতে যা হয়েছিল