সোমবার ওয়াকফ সংশোধনী বিল অনুমোদন করল যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC)। ভারতে মুসলিম ধর্মীয় সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার নিয়মে ৪৪টি পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। গত বছর আগস্টে সংসদে উত্থাপিত খসড়ার উপর এখন ১৪টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে।
মোট ৬৬টি সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছিল—২৩টি বিজেপি সংসদ সদস্যদের পক্ষ থেকে এবং ৪৪টি বিরোধী পক্ষের তরফে। তবে বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে বিরোধীদের সব প্রস্তাব ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায়। কমিটিতে ১৬ জন বিজেপি বা তাদের শরিক দলের সাংসদ এবং ১০ জন বিরোধী দলের সাংসদ থাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সূত্রের খবর, এই ১৪টি সংশোধনী চূড়ান্তভাবে গৃহীত হবে কি না, সে বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ২৯ জানুয়ারি। এর পর ৩১ জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা পড়বে। যদিও কমিটিকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল, বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
জগদম্বিকা পাল বলেন, ৬ মাস ধরে বিস্তারিত আলোচনার পর ১৪টি সংশোধনী গৃহীত হয়েছে। বিরোধীরাও সংশোধনীর প্রস্তাব দেন, তবে ভোটাভুটিতে ১০-১৬ ব্যবধানে তা খারিজ হয়।
তবে, কমিটির বৈঠকে প্রায় তিন ডজন শুনানি অনুষ্ঠিত হলেও, বিরোধী সাংসদরা কমিটির চেয়ারম্যানের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিজেপির সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গী জানান, চেয়ারম্যান “সব পক্ষের কথা শুনেছেন এবং সংশোধনীর জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছেন।”
গত সপ্তাহে বিরোধী সংসদ সদস্যরা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে জানান, ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ৫ ফেব্রুয়ারির দিল্লি নির্বাচনের আগে বিল অনুমোদনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
এছাড়া, ১০ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তাঁদের অভিযোগ, বিলের পরিবর্তনগুলোর বিষয়ে যথেষ্ট সময় না দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিম এবং অন্তত দুইজন মহিলা সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিনজন সাংসদ, দু’জন প্রাক্তন বিচারপতি, চারজন ‘জাতীয় খ্যাতিসম্পন্ন’ ব্যক্তি এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে—যাঁদের কেউই ইসলাম ধর্মাবলম্বী না-ও হতে পারেন। ওয়াকফ বোর্ড আর কোনো জমির দাবি করতে পারবে না।