Home খবর রাজ্য বীরভূমের কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে ৭ শ্রমিকের মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, প্রশ্ন শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে

বীরভূমের কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে ৭ শ্রমিকের মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, প্রশ্ন শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে

বীরভূমের কয়লাখনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৭ জন শ্রমিকের পরিবার পিছু ৩২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন তরফে জানানো হয়েছে, নিহতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেবে তারা, আর সংশ্লিষ্ট কয়লাখনি সংস্থার পক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, প্রতিটি পরিবার থেকে একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

তবে প্রশ্ন উঠছে, এই ক্ষতিপূরণই কি যথেষ্ট? সোমবার সকালে বীরভূমের লোকপুরের ভাদুলিয়া কয়লাখনিতে ঘটে যায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। কয়লা উত্তোলনের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হলেও, খনির ভিতরে যে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন, তা খেয়াল রাখা হয়নি। ফলে, ৭ জন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং আহত হন আরও অনেকে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে এই বিস্ফোরণ ঘটে। শ্রমিকদের দেহগুলি উদ্ধার করা হয় অনেকক্ষণ পর। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, খনির ভিতরের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, বহু শ্রমিক ভিতরে চাপা পড়ে যান। এরপর খনির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

এই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিহত শ্রমিকদের প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোট ৩২ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে পরিবারপিছু ৩০ লক্ষ টাকা করে এবং রাজ্যের তরফে আরও ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এছাড়াও, নিহত শ্রমিকদের পরিবার থেকে একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

কয়লা খনি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়মিত পর্যবেক্ষণের কথা থাকলেও, এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। সাধারণত খনির ভিতরে বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে সতর্কতা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। শ্রমিকদের বের করে না এনে কেন বিস্ফোরণ ঘটানো হল, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসন।

নবান্ন ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে অবিলম্বে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনায় মূল সমস্যা হচ্ছে, শ্রমিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা কেন এত দুর্বল ছিল। খনিতে শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করেন। এই ক্ষেত্রে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে, যা শ্রমিকদের জীবনকে চরম বিপদের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।

ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও, তা শ্রমিকদের প্রাণহানির ক্ষতি পূরণ করতে পারে না। শ্রমিকদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি এবং খনিগুলিতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি।

এ ধরনের দুর্ঘটনা বারবার প্রমাণ করছে যে, সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। খনির শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে এই ধরনের ভয়াবহ ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version