Home খবর রাজ্য তৃণমূলের সঙ্গে ফের আসন ভাগাভাগিতে কংগ্রেস, কার ভাগে ক’টা

তৃণমূলের সঙ্গে ফের আসন ভাগাভাগিতে কংগ্রেস, কার ভাগে ক’টা

0

৪২-এর মধ্যে কোন আসনগুলি চাইছে কংগ্রেস? ক’টি আসন ছাড়তে রাজি তৃণমূল?

Jayanta Mondal

জয়ন্ত মণ্ডল

২০২৪-এ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস যে তৃণমূল সঙ্গ পেতে পুরোপুরি প্রস্তুত, তা একপ্রকার নিশ্চিত। প্রদেশ নেতাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যাই হোক না কেন, একের পর এক বৈঠকে সে কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। এখন গেরো শুধু আসন সমঝোতায়।

রাজ্যে তৃণমূল সখ্যে কংগ্রেসের যত লোকসানই হোক না কেন, তা এখন নিছকই অতীত। ২০০১ সালের বিধানসভা, ২০০৯ সালের লোকসভা এবং শেষ বার ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে গিয়েছিল কংগ্রেস। এর মধ্যে শেষ বারেই ৩৪ বছরের বামরাজত্বের অবসান ঘটিয়ে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বসে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের সরকার। কিন্তু খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি কংগ্রেস-তৃণমূল সাংসার। কয়েক মাসের মধ্যেই ভাঙন। যে বামফ্রন্টকে হারিয়ে রাইটার্স দখল, তৃণমূলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাদেরই হাতে হাত রেখেছিল কংগ্রেস। তবে, ২০১১ সালের পর থেকে কংগ্রেসের লোকসানের বহর যথেষ্ট। দলে দলে বিধায়ক-সাংসদরা যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।

আপাতত যা খবর, প্রদেশের কংগ্রেসের ভারী অংশের মধ্যে যতই তৃণমূল-বিমুখতা থাকুন না কেন, ‘২৪-এর ভোটে ফের একমঞ্চে দেখা যেতে পারে দুই কংগ্রেসের নেতানেত্রীদের। এখন প্রশ্ন শুধুমাত্র একটাই—রাজ্যের ৪২টা আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ভাগে পড়বে ক’টা? ক’দিন আগেও বঙ্গ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ বলাবলি করছিল, প্রায় অর্ধেক না মিললে জোটের কোনো প্রশ্নই নেই। তবে সেটা শুধু কথার কথা। বা বলা ভালো ফাঁকা আওয়াজ। ‘ইন্ডিয়া’ জোট টেকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরিহার্য, সেকথা বিলক্ষণ জানেন রাহুল গান্ধীরা। তাই আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের আগাম কষে ফেলা কোনো অঙ্কই কালীঘাটে কল্কে পাবে না। ফলে তৃণমূলের কাছে কংগ্রেসের সম্ভাব্য কাঙ্খিত আসন সংখ্যা নামতে নামতে এখন এসে ঠেকেছে সাত অথবা আটে!

তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে আসন রফা কী ভাবে হবে, তা নিয়েই দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে বসেছিল বৈঠক। বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকে প্রদেশের পক্ষ থেকে ছিলেন অধীর চৌধুরী-সহ ১৫ জন নেতানেত্রী। ও দিকে দিল্লির তরফে ছিলেন কংগ্রেসে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রমুখ। বৈঠকের শুরুতে এটা-ওটা সামনে রেখে একা লড়ার গান ধরলেও শেষমেশ সাত-আটটি পেলেই সন্তুষ্টির কথা জানান প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাংলায় যদি কংগ্রেসকে সাত-আটটি সিট ছাড়ে তৃণমূল, তা হলে সমঝোতা হতে পারে।

৪২-এর মধ্যে কোন আসনগুলি চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস। এ কথা নতুন করে বলার নয়, ২০১৯-এ জেতা বহরমপুর (অধীররঞ্জন চৌধুরী) এবং মালদহ দক্ষিণে (আবু হাসেম খান চৌধুরি) প্রার্থী দিতে চাইবে কংগ্রেস। দলের তালিকায় বাকি আসনগুলির মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং, মালদহ উত্তর, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া এবং রায়গঞ্জ।

এ দিকে সেই কবে থেকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরুর ইঙ্গিত দিয়ে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। ইন্ডিয়া জোটের শেষ বৈঠকে সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন এই কাজটি সেরে ফেলার জন্যে। এর আগে তিনি ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কংগ্রেসকে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরুর বার্তা দিয়েছিলেন। দু’মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত। এ বার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভাগাভাগি আলোচনা চাই-ই চাই। মমতা এখনও প্রকাশ্যে সংখ্যাতত্ত্বের ধার না ঘেঁষলেও তাঁর দলের ভিতরে যে আলোচনা চলছে না, তেমনটাও নয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেসকে চারটি আসন ছাড়তে আগ্রহী শাসক দল। এর মধ্যে দু’টি যে বহরমপুর এবং মালদহ দক্ষিণ হতে পারে, সেটাও বেশ স্পষ্ট। বাকি দু’টি নিয়ে সাসপেন্স থাকছেই। ও দিকে কংগ্রেসও যে সাত থেকে আটে অনড় থাকবে, সেটাও নয়। দরকষাকষি চালাতে পারে মাত্র। সেক্ষেত্রে চার অথবা পাঁচে সমঝোতা হয় কি না, সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন: বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে জোরদার প্রার্থী, দুই নাম নিয়ে জোর চর্চা বিরোধী শিবিরে

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version