Home খবর রাজ্য ‘দিদি আছে, ভয় পাবেন না, দরকারে থালাবাটি বেচে…!’ এসআইআর ইস্যুতে বার্তা মমতার,...

‘দিদি আছে, ভয় পাবেন না, দরকারে থালাবাটি বেচে…!’ এসআইআর ইস্যুতে বার্তা মমতার, অভিষেকের দিল্লি অভিযানের ঘোষণা

এসআইআর নিয়ে মিছিল। ছবি রাজীব বসু

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে চলতে থাকা আতঙ্কের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজপথে নামল তৃণমূল কংগ্রেস। রেড রোডের বি.আর. আম্বেদকর মূর্তির সামনে থেকে সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেতৃত্বে বিশাল মিছিল শুরু হয়।
বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও টলি-টেলি তারকারা অংশ নেন এই মিছিলে। প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার পথ হাঁটে তৃণমূলের এই মিছিল, শেষ হয় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে, যেখানে গড়ে ওঠে প্রতিবাদ মঞ্চ।

সেখানে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দিদি এখনও আছে, ভয় পাবেন না! ওরা কারও নাম বাদ দিতে পারবে না। যাঁদের কোনও কাগজ নেই, তাঁরা তৃণমূলের ক্যাম্পে যান, আমরা সব ব্যবস্থা করব—দরকারে থালাবাটি বেচে হলেও সাহায্য করব।”

তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি “ভোটের আগে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে”। তাঁর প্রশ্ন, “কেন শুধু বাংলায় এসআইআর হচ্ছে? নাগাল্যান্ড, অসম, ত্রিপুরায় নয় কেন? রোহিঙ্গারা যদি বাংলায় আসে, তবে কোথা থেকে আসে?”

অভিষেকের ঘোষণা: দু’মাসের মধ্যে দিল্লি অভিযান

মমতার আগেই বক্তৃতা করতে উঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, “নেত্রীর অনুমতি নিয়েই বলছি—আগামী দু’মাসের মধ্যে এসআইআর বিরোধী আন্দোলন নিয়ে দিল্লি অভিযান হবে।”

তিনি জানান, শিগগিরই জেলা সফরে গিয়ে এসআইআর প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখবেন। মঞ্চের সামনে গত এক সপ্তাহে ‘এসআইআর আতঙ্কে মৃত’ সাত জনের নাম লেখা তোরণ ছিল। সেই তোরণে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন মমতা ও অভিষেক—তাঁরা তাঁদের “শহিদ” বলে উল্লেখ করেন।

বক্তব্য রাখছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি রাজীব বসু

মতুয়া সম্প্রদায় ও বিজেপিকে বার্তা

মমতা বলেন, “মতুয়াদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপি নাগরিকত্বের নামে টাকা তুলেছিল, কিন্তু কিছুই দেয়নি। এখন ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে।”

অভিষেক সতর্ক করে বলেন, “মতুয়া ভাইবোনেরা বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না। না হলে আপনারা অসমের ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালির মতো অবস্থায় পড়বেন।”

কমিশন ও কেন্দ্রকে একসঙ্গে নিশানা

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতার বক্তব্য, “২০০২ সালের তালিকা কতটা নির্ভুল, সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে। ১৯৮৯ সালে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় সল্টলেকে গিয়েছিলেন, কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় তাঁর নাম ছিল না! এখন সেই তালিকাকেই সূচক ধরা হচ্ছে!”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সীমানা যে রাজ্যগুলির সঙ্গে, তার মধ্যে একমাত্র বাংলাতেই এসআইআর হচ্ছে কেন? কারণ, অসমে হলে বিজেপি হেরে যেত!”

শেষে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, “ভোটার তালিকা থেকে এক জন বৈধ ভোটারের নাম বাদ দিলে দিল্লির সরকারও টিকবে না।”

এসআইআর ইস্যুতে তপ্ত বাংলা

এক সপ্তাহে ‘এসআইআর আতঙ্কে’ ছয় জনের মৃত্যু এবং কলকাতায় তৃণমূলের শক্তিপ্রদর্শনের পর এই ইস্যু এখন রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু।  তৃণমূল যেখানে এসআইআর-কে “মানবিক সংকট” হিসেবে তুলে ধরছে, বিজেপি বলছে, “এটি নির্বাচন কমিশনের নিয়মিত প্রক্রিয়া, বৈধ নাগরিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।”

📰 আমাদের পাশে থাকুন

নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

💠 সহায়তা করুন / Support Us

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version