এবার স্কুলের মিড ডে মিল খাবে শুধু পড়ুয়ারা নয়, তাদের সঙ্গে খাবার পাবে স্কুল চত্বরে ঘুরে বেড়ানো পথকুকুররাও। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং পশু অধিকার আন্দোলনের মুখ মানেকা গান্ধীর সুপারিশে এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্য সমগ্র শিক্ষা মিশনের পক্ষ থেকে সমস্ত জেলার ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের (DEO) কাছে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন দুপুরে একটি নির্দিষ্ট সময় স্কুল চত্বরে থাকা কুকুরদের খাবার দিতে হবে। এই কাজে নিযুক্ত থাকবেন মিড ডে মিল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক বা একাধিক কর্মী। পাশাপাশি, প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পথকুকুরদের নির্বীজকরণের ব্যবস্থাও নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা মনে করছেন, এর ফলে শিশুদের মধ্যে কুকুরদের প্রতি সহানুভূতি ও ভালবাসার বোধ তৈরি হবে। অন্যদিকে, স্কুল চত্বরে কুকুরদের উপস্থিতি ঘিরে আতঙ্কও অনেকটা কমবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, আড়াই মাস আগে জলাতঙ্ক সংক্রান্ত আতঙ্ক ছড়ানোর সময় রাজ্য শিক্ষা মিশনের তরফে একটি সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তাতে পড়ুয়াদের পথকুকুরদের থেকে দূরে থাকার এবং তাদের উত্যক্ত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই বিজ্ঞপ্তির ভাষা নিয়ে আপত্তি তোলে রাজ্যের একটি শিক্ষক সংগঠন এবং তা নিয়ে চিঠিও লেখে মানেকা গান্ধীকে।
মানেকা গান্ধী সেই চিঠির জবাবে জানান, বিজ্ঞপ্তির ভাষা আপত্তিকর নয়, তবে শিশুদের মধ্যে পশুদের প্রতি সহানুভূতি গড়ে তুলতে সরকার আরও কিছু উদ্যোগ নিতে পারে। সেই সূত্র ধরেই চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি রাজ্য সরকারকে মিড ডে মিল থেকে কুকুরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। এবার সেই সুপারিশ কার্যকর করল রাজ্য।
যদিও এই সিদ্ধান্তে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনের তরফে, তেমনই কিছু শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, “মিড ডে মিলের পরিকাঠামো এখনো অনেক স্কুলে দুর্বল। পড়ুয়ারা অনেক জায়গায় খোলা বারান্দায় বসে খায়। পুষ্টিগুণ বা বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। তার আগেই নতুন বোঝা চাপানো হলে বাস্তবায়নে সমস্যা হবে।”
স্কুল চত্বরে শিশুদের নিরাপত্তা বজায় রেখে কীভাবে কুকুরদের খাওয়ানো হবে, সেই বিষয়েও প্রশাসনকে স্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে— মত শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের।